অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় যাত্রীরা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরিশালসহ দক্ষিণ অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার জন্য আগামী ৩০ মে থেকে শুরু হবে লঞ্চের স্পেশাল সার্ভিস। তবে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুরের লোকাল রুটের যাত্রীদের জন্য দুশ্চিন্তা। রাজধানীর চকবাজার এলাকায় সোয়ারীঘাট থেকে এই রুটের লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়। এক ইঞ্জিনচালিত আড়াইতলা ছোট লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা হয়। এছাড়া ভাড়া নেয়া হয় বেশি। এই রুটে নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি ছোট ও পুরনো লঞ্চ দিয়ে স্পেশাল সার্ভিস পরিচালনা করেন লঞ্চ মালিকরা। ঈদের সময় নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তায় ফেরি ও লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ একাধিক সিদ্ধান্ত নেয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই রুটের লঞ্চ মালিকরা সরকারের কোন সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা করেন না বলে যাত্রীরা জানান।

জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুরসহ বিভিন্ন লোকাল রুটে প্রায় ১০-২০টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকা-বরিশাল রুটের জলতরঙ্গ, জলতরঙ্গ-১, নিউসান-৪ ও মনিংসান নামের চারটি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু এই লঞ্চগুলো ছোট ও ঝুঁকিপূর্ণ। আড়াইতলা হলেও এই লঞ্চগুলোর আয়তন খুবই ছোট। এছাড়া একই কোম্পানির আচল ও হাসান-হোসাইন নামের দুটি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে এক ইঞ্জিনচালিত নিউসান-৪ লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫৮৩ জন উল্লেখ থাকলেও বহন করা হয় ৫ গুণ। ছাদের যাত্রী ওঠা নিষেধ থাকলে তাও মানছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রতিটি লঞ্চে নেই পর্যাপ্ত কেবিন ও সিট। পুরোপুরি যাত্রীদের জিম্মি করে দীর্ঘদিন থেকে এই রুটে লঞ্চ পরিচালনা করছে দুটি কোম্পানি। এই লঞ্চগুলো নিচতলা, দোতলা, ছাদের ওপর লোক ধারণ করা হয়। লঞ্চের মাস্টারের রুমের ছাদের ওপর লোক ধারণ করা হয়। পাশাপাশি এসব লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়। এই ছোট লঞ্চে কেবিন থাকে ১০ থেকে ১২টি। কিন্তু লঞ্চ স্টাফদের রুমগুলো অতিরিক্ত টাকার বিনিময় ভাড়া দেয়া হয়। এই লোকাল রুটে যাত্রী বেশি হলেও লঞ্চ মালিকরা সিন্ডিকেট করে এক-দুটির বেশি লঞ্চ চলাচল করতে দেন না। তাই দীর্ঘদিন ধরে এই লোকাল রুটের যাত্রীরা লঞ্চ মালিকদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এই ঢাকা-বরিশাল লোকাল রুটে নিউসান-৪ নামের একটি লঞ্চ রাজধানীর চরবাজারের সোয়ারীঘাট থেকে বরিশালের মুলাদীর থানার নাজিরপুর, ছবিপুরসহ বিভিন্ন ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঢাকা আসা-যাওয়ার সময় ডজনখানেক ঘাট ধরে লঞ্চটি। এক ইঞ্জিলচালিত নিউসান-৪ লঞ্চটিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫৮৩ জন উল্লেখ থাকলেও এতে ১-২ হাজারের অধিক যাত্রী ধারণ করা হয়। এছাড়া ঈদে ধারণক্ষমতার তিন-চারগুণ যাত্রী ধারণ করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।

এ ব্যাপারে ঢাকা-বরিশাল লোকাল রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী কামাল হোসেন সংবাদকে জানান, বরিশাল জেলার মুলাদী থানার নাজিরপুর গ্রামে তার বাড়ী। তিনি ব্যবসায়ী কাজে নিয়মিত এই রুটে যাতায়াত করেন। রাজধানীর চরবাজারের সোয়ারীঘাট থেকে এই লোকাল রুটের লঞ্চ ছাড়া হয়। প্রতিদিন ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুর রুটে ঈদের আগে একটি করে দুটি ও ঈদের দুটি করে চারটি লঞ্চ যাতায়াত করে। ঈদের আগে যাত্রী কম থাকায় লঞ্চ কম চলাচল করে। কিন্তু ঈদে যাত্রী বেশি হলেও লঞ্চসংখ্যা বাড়ানো হয় না। ঈদের আগে ভাড়া নেয়া হয় ২০০ টাকা আর ঈদের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া এই রুটের লঞ্চগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ও ছোট লঞ্চ। তাই বর্ষার সময় যাতায়াত করতে যাত্রীরা ভয়ে থাকেন। বিশেষ করে লঞ্চের কেবিনগুলো ছোট, খাটগুলো ভাঙা ও বাথরুমগুলো অপরিষ্কার। নেই পর্যাপ্ত বয়া ও লাইফ জেকেট। প্রতিটি লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত তিন-চারগুণ যাত্রী বহন করা হয়। তাই এই বর্ষার সময় পদ্মা ও মেঘনা নদী পার হওয়ার সময় যাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি করেন। এ রুটটি লোকাল বলে কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রীবোঝাই করে লঞ্চ চালাচ্ছেন মালিকরা। তাই ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুর এই লোকাল রুটের লঞ্চের যাত্রীবোঝাইয়ের ক্ষেত্রে নৌমন্ত্রণালয়ের সংস্থাগুলোকে আরও সতর্ক হওয়ার দাবি জানান যাত্রীরা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান এম মাহবুব-উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ঈদের সময় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইয়ের ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। সোয়ারীঘাটের বিষয়টি আমার আগে জানা ছিল না। এবার নিশ্চিত, এই বিষয় আমার সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও বেশি ভাড়া নিতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তায় ফেরি ও লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এছাড়া ঈদের আগে ও পরে তিন দিন করে মোট ছয় দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া ফেরিতে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতে নৌপথে মাছ ধরা বন্ধ রাখা, রাতে সব মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখা এবং ১থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দিনে সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী ওঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি বন্ধ ও কোনোক্রমেই ধারণক্ষমতার বেশি লঞ্চে যাত্রী ও মালামাল বহন করা যাবে না। প্রত্যেক লঞ্চের সিঁড়িতে দুইপাশে প্রশস্ত রেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সদরঘাট, নদীর মাঝপথ থেকে যেন নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী উঠতে না পারে, ওই ব্যবস্থা করা হবে এবং কেবিনের যাত্রীদের ছবি, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংরক্ষণের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌ]নিরাপত্তাটা আমরা সবাই চাই। একটি দুর্ঘটনা পুাে দেশের ঈদের আনন্দ নষ্ট করে দিতে পারে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় সিগন্যাল না মেনে লঞ্চ ছাড়া যাবে না। নৌপরিবহন ব্যবস্থা আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ। সরকার ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। নৌপথ খননের জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ ড্রেজার প্রয়োজন। আমাদের স্বভাব জটিল বিষয়গুলোকে আরও জটিল করে তোলা। জটিল করে তুলে সেখান থেকে ফায়দা গ্রহণ করা। মান্ধাতার আমলের চিন্তাভাবনা ছেড়ে দিতে হবে। তাই নৌপথের ওপর সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।

মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯ , ১৪ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২২ রমজান ১৪৪০

ঢাকা-বরিশাল লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস ৩০ মে শুরু

অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় যাত্রীরা

মাহমুদ আকাশ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরিশালসহ দক্ষিণ অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার জন্য আগামী ৩০ মে থেকে শুরু হবে লঞ্চের স্পেশাল সার্ভিস। তবে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুরের লোকাল রুটের যাত্রীদের জন্য দুশ্চিন্তা। রাজধানীর চকবাজার এলাকায় সোয়ারীঘাট থেকে এই রুটের লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়। এক ইঞ্জিনচালিত আড়াইতলা ছোট লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা হয়। এছাড়া ভাড়া নেয়া হয় বেশি। এই রুটে নিয়মিত সার্ভিসের পাশাপাশি ছোট ও পুরনো লঞ্চ দিয়ে স্পেশাল সার্ভিস পরিচালনা করেন লঞ্চ মালিকরা। ঈদের সময় নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তায় ফেরি ও লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ একাধিক সিদ্ধান্ত নেয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই রুটের লঞ্চ মালিকরা সরকারের কোন সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা করেন না বলে যাত্রীরা জানান।

জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুরসহ বিভিন্ন লোকাল রুটে প্রায় ১০-২০টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকা-বরিশাল রুটের জলতরঙ্গ, জলতরঙ্গ-১, নিউসান-৪ ও মনিংসান নামের চারটি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু এই লঞ্চগুলো ছোট ও ঝুঁকিপূর্ণ। আড়াইতলা হলেও এই লঞ্চগুলোর আয়তন খুবই ছোট। এছাড়া একই কোম্পানির আচল ও হাসান-হোসাইন নামের দুটি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে এক ইঞ্জিনচালিত নিউসান-৪ লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫৮৩ জন উল্লেখ থাকলেও বহন করা হয় ৫ গুণ। ছাদের যাত্রী ওঠা নিষেধ থাকলে তাও মানছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রতিটি লঞ্চে নেই পর্যাপ্ত কেবিন ও সিট। পুরোপুরি যাত্রীদের জিম্মি করে দীর্ঘদিন থেকে এই রুটে লঞ্চ পরিচালনা করছে দুটি কোম্পানি। এই লঞ্চগুলো নিচতলা, দোতলা, ছাদের ওপর লোক ধারণ করা হয়। লঞ্চের মাস্টারের রুমের ছাদের ওপর লোক ধারণ করা হয়। পাশাপাশি এসব লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়। এই ছোট লঞ্চে কেবিন থাকে ১০ থেকে ১২টি। কিন্তু লঞ্চ স্টাফদের রুমগুলো অতিরিক্ত টাকার বিনিময় ভাড়া দেয়া হয়। এই লোকাল রুটে যাত্রী বেশি হলেও লঞ্চ মালিকরা সিন্ডিকেট করে এক-দুটির বেশি লঞ্চ চলাচল করতে দেন না। তাই দীর্ঘদিন ধরে এই লোকাল রুটের যাত্রীরা লঞ্চ মালিকদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এই ঢাকা-বরিশাল লোকাল রুটে নিউসান-৪ নামের একটি লঞ্চ রাজধানীর চরবাজারের সোয়ারীঘাট থেকে বরিশালের মুলাদীর থানার নাজিরপুর, ছবিপুরসহ বিভিন্ন ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঢাকা আসা-যাওয়ার সময় ডজনখানেক ঘাট ধরে লঞ্চটি। এক ইঞ্জিলচালিত নিউসান-৪ লঞ্চটিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫৮৩ জন উল্লেখ থাকলেও এতে ১-২ হাজারের অধিক যাত্রী ধারণ করা হয়। এছাড়া ঈদে ধারণক্ষমতার তিন-চারগুণ যাত্রী ধারণ করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।

এ ব্যাপারে ঢাকা-বরিশাল লোকাল রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী কামাল হোসেন সংবাদকে জানান, বরিশাল জেলার মুলাদী থানার নাজিরপুর গ্রামে তার বাড়ী। তিনি ব্যবসায়ী কাজে নিয়মিত এই রুটে যাতায়াত করেন। রাজধানীর চরবাজারের সোয়ারীঘাট থেকে এই লোকাল রুটের লঞ্চ ছাড়া হয়। প্রতিদিন ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুর রুটে ঈদের আগে একটি করে দুটি ও ঈদের দুটি করে চারটি লঞ্চ যাতায়াত করে। ঈদের আগে যাত্রী কম থাকায় লঞ্চ কম চলাচল করে। কিন্তু ঈদে যাত্রী বেশি হলেও লঞ্চসংখ্যা বাড়ানো হয় না। ঈদের আগে ভাড়া নেয়া হয় ২০০ টাকা আর ঈদের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া এই রুটের লঞ্চগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ও ছোট লঞ্চ। তাই বর্ষার সময় যাতায়াত করতে যাত্রীরা ভয়ে থাকেন। বিশেষ করে লঞ্চের কেবিনগুলো ছোট, খাটগুলো ভাঙা ও বাথরুমগুলো অপরিষ্কার। নেই পর্যাপ্ত বয়া ও লাইফ জেকেট। প্রতিটি লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত তিন-চারগুণ যাত্রী বহন করা হয়। তাই এই বর্ষার সময় পদ্মা ও মেঘনা নদী পার হওয়ার সময় যাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি করেন। এ রুটটি লোকাল বলে কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রীবোঝাই করে লঞ্চ চালাচ্ছেন মালিকরা। তাই ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-মাদারীপুর এই লোকাল রুটের লঞ্চের যাত্রীবোঝাইয়ের ক্ষেত্রে নৌমন্ত্রণালয়ের সংস্থাগুলোকে আরও সতর্ক হওয়ার দাবি জানান যাত্রীরা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান এম মাহবুব-উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ঈদের সময় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইয়ের ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। সোয়ারীঘাটের বিষয়টি আমার আগে জানা ছিল না। এবার নিশ্চিত, এই বিষয় আমার সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও বেশি ভাড়া নিতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে নৌপথের যাত্রী নিরাপত্তায় ফেরি ও লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এছাড়া ঈদের আগে ও পরে তিন দিন করে মোট ছয় দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া ফেরিতে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতে নৌপথে মাছ ধরা বন্ধ রাখা, রাতে সব মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখা এবং ১থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দিনে সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী ওঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি বন্ধ ও কোনোক্রমেই ধারণক্ষমতার বেশি লঞ্চে যাত্রী ও মালামাল বহন করা যাবে না। প্রত্যেক লঞ্চের সিঁড়িতে দুইপাশে প্রশস্ত রেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সদরঘাট, নদীর মাঝপথ থেকে যেন নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী উঠতে না পারে, ওই ব্যবস্থা করা হবে এবং কেবিনের যাত্রীদের ছবি, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংরক্ষণের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌ]নিরাপত্তাটা আমরা সবাই চাই। একটি দুর্ঘটনা পুাে দেশের ঈদের আনন্দ নষ্ট করে দিতে পারে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় সিগন্যাল না মেনে লঞ্চ ছাড়া যাবে না। নৌপরিবহন ব্যবস্থা আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ। সরকার ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। নৌপথ খননের জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ ড্রেজার প্রয়োজন। আমাদের স্বভাব জটিল বিষয়গুলোকে আরও জটিল করে তোলা। জটিল করে তুলে সেখান থেকে ফায়দা গ্রহণ করা। মান্ধাতার আমলের চিন্তাভাবনা ছেড়ে দিতে হবে। তাই নৌপথের ওপর সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।