ইমাম তানভীরসহ ৩ জন রিমান্ডে

হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন

মৌলভীবাজারের আইনজীবী আবিদা সুলতানা হত্যার ঘটনায় বাড়ির ভাড়াটিয়া ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলমসহ ৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বড়লেখায় গতকাল আইনজীবী ও সাধারণ জনগণ মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের শনাক্ত, গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেছে।

বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিযুক্ত রাষ্ট্রেপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত সংবাদকে জানিয়েছেন, বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জসীম উদ্দিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমার আসামি তানভীর আলমের ১০ দিনের এবং অন্য দুই আসামি নেহার বেগম ও হালিমা সাদিয়ার ৮ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বড়লেখা থানার ওসি ইয়াছিনুল হক সংবাদকে বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামিসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নিহত আইনজীবী আবিদা সুলতানার স্বামী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- বাড়ির ভাড়াটিয়া ইমাম তানভীর আলম, তানভীরের মা নেহার বেগম, স্ত্রী হালিমা সাদিয়া এবং ভাই আফসার আলম। এদের মধ্যে ঘটনার পরপরই পুলিশ হালিমা সাদিয়া ও নেহার বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সোমবার শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামি তানভীর আলমকে কালাপুর ইউনিয়নের বরুণা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বড়লেখা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। মামলার অন্য আসামি আফসার আলম পলাতক রয়েছে। পুলিশ আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। তবে এ হত্যাকান্ডের নিশ্চিত কোন ক্লু এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিভিন্ন আঙ্গিকে এ ঘটনাকে তদন্ত করছে এবং হত্যাকান্ডের মোটিব বিশ্লেষণ করছে। এরমধ্যে প্রধান আসামি ইমাম তানভীর আলম অত্যন্ত চাতুরতার সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। গতকাল আটককৃত তিন আসামি তানভীর আলম, নেহার বেগম ও হালিমা সাদিয়াকে বড়লেখার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে পুলিশ গ্রেফতারকৃত তিন আসামির রিমান্ডের আবেদন করেন এবং বিচারিক হাকিম আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এখন আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আসামিদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটককৃত নিহত আইনজীবী আবিদা সুলতানার চাচাতো ভাই মাহবুর এর বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ উত্থাপন না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরেল আহমদ জানিয়েছেন, সোমবার মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আবিদা সুলতানার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর রাতে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। আবিদা সুলতানার চাচাতো ভাই মাহবুবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটকে রাখায় তাদের পরিবার থেকে জানাযার আগেই মাহবুবকে ছেড়ে দেয়ার জন্য দাবি জানানো হচ্ছিল।

মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর এএসএম আজাদুর রহমান সংবাদকে জানিয়েছেন, আইনজীবী আবিদা সুলতানা হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আজ থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা কলোব্যাজ ধারণ করবে।

এদিকে এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় আইনজীবী ও জনগণ। এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানায়।

উল্লেখ্য, গত রোববার নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বুধবার, ২৯ মে ২০১৯ , ১৫ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৩ রমজান ১৪৪০

আইনজীবী হত্যা

ইমাম তানভীরসহ ৩ জন রিমান্ডে

হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন

জেলা বার্তা পরিবেশক, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের আইনজীবী আবিদা সুলতানা হত্যার ঘটনায় বাড়ির ভাড়াটিয়া ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলমসহ ৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বড়লেখায় গতকাল আইনজীবী ও সাধারণ জনগণ মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের শনাক্ত, গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেছে।

বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিযুক্ত রাষ্ট্রেপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত সংবাদকে জানিয়েছেন, বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জসীম উদ্দিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমার আসামি তানভীর আলমের ১০ দিনের এবং অন্য দুই আসামি নেহার বেগম ও হালিমা সাদিয়ার ৮ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বড়লেখা থানার ওসি ইয়াছিনুল হক সংবাদকে বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামিসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নিহত আইনজীবী আবিদা সুলতানার স্বামী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- বাড়ির ভাড়াটিয়া ইমাম তানভীর আলম, তানভীরের মা নেহার বেগম, স্ত্রী হালিমা সাদিয়া এবং ভাই আফসার আলম। এদের মধ্যে ঘটনার পরপরই পুলিশ হালিমা সাদিয়া ও নেহার বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সোমবার শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামি তানভীর আলমকে কালাপুর ইউনিয়নের বরুণা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বড়লেখা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। মামলার অন্য আসামি আফসার আলম পলাতক রয়েছে। পুলিশ আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। তবে এ হত্যাকান্ডের নিশ্চিত কোন ক্লু এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিভিন্ন আঙ্গিকে এ ঘটনাকে তদন্ত করছে এবং হত্যাকান্ডের মোটিব বিশ্লেষণ করছে। এরমধ্যে প্রধান আসামি ইমাম তানভীর আলম অত্যন্ত চাতুরতার সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। গতকাল আটককৃত তিন আসামি তানভীর আলম, নেহার বেগম ও হালিমা সাদিয়াকে বড়লেখার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে পুলিশ গ্রেফতারকৃত তিন আসামির রিমান্ডের আবেদন করেন এবং বিচারিক হাকিম আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এখন আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আসামিদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটককৃত নিহত আইনজীবী আবিদা সুলতানার চাচাতো ভাই মাহবুর এর বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ উত্থাপন না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরেল আহমদ জানিয়েছেন, সোমবার মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আবিদা সুলতানার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর রাতে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। আবিদা সুলতানার চাচাতো ভাই মাহবুবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটকে রাখায় তাদের পরিবার থেকে জানাযার আগেই মাহবুবকে ছেড়ে দেয়ার জন্য দাবি জানানো হচ্ছিল।

মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর এএসএম আজাদুর রহমান সংবাদকে জানিয়েছেন, আইনজীবী আবিদা সুলতানা হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আজ থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা কলোব্যাজ ধারণ করবে।

এদিকে এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় আইনজীবী ও জনগণ। এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানায়।

উল্লেখ্য, গত রোববার নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।