জাপানের সঙ্গে আড়াইশ’ কোটি ডলারের চুক্তি সই

বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, জ্বালানি এবং সমুদ্রবন্দর উন্নয়নসহ কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানের সঙ্গে আড়াইশ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল টোকিওতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র উপস্থিতিতে এই চুক্তি হয়। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি ও ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ চুক্তিতে সই করেন।

গতকাল জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান শিনজো আবে। এ সময় সুসজ্জিত একটি দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেয়। চুক্তি স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতার আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও শিনজো আবে। বৈঠকে দুই দেশের নীতিনির্ধারক ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক প্রমুখ।

চারদিনের সফরে গত মঙ্গলবার রাজধানী টোকিও পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা। জাপানী এই অর্থে মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১), বিদেশি বিনিয়োগ সহায়ক প্রকল্প (২), জ্বালানি দক্ষতা ও সুরক্ষা সহায়ক প্রকল্প (পর্যায়-২) ও মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে (৫) অর্থায়ন করা হবে।

আজ ‘দ্য ফিউচার অফ এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সম্মেলনে তিনি এশিয়ার সম্ভাবনা ও উত্থান নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরবেন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও তাত্ত্বিকদের সামনে। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটাই প্রথম জাপান সফর।

প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত এবং শিল্পায়নের জন্য জাপান এ সহায়তা দিচ্ছে । ৪০তম এই প্যাকেজ আগের বারের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি। জাপান এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী। ১৯৭২ সাল থেকে দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশ মোট এক হাজার ১৩০ কোটি ডলারের সহায়তা পেয়েছে।

সামিট গ্রুপ ও জেইআরএ সমঝোতা স্মারক সই

জাপানের রাজধানী টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ এবং জাপানের এনার্জি ফর নিউ এরা (জেইআরএ)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। সামিট গ্রুপের ফয়সাল করিম খান এবং জেইআরএ’র তোশিরো কোদোমা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ঢাকায় শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির জন্য মেডিকেল সরঞ্জাম এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

এছাড়াও জাপান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিএমএ) নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকুরাই হিরুইকি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সঙ্গে পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তির ডকুমেন্ট হস্তান্তর করেন উভয় পক্ষ।

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০১৯ , ১৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৪ রমজান ১৪৪০

জাপানের সঙ্গে আড়াইশ’ কোটি ডলারের চুক্তি সই

সংবাদ ডেস্ক

image

টোকিও : গতকাল বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবে-এর সংবাদ সম্মেলন

বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, জ্বালানি এবং সমুদ্রবন্দর উন্নয়নসহ কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানের সঙ্গে আড়াইশ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল টোকিওতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র উপস্থিতিতে এই চুক্তি হয়। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি ও ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ চুক্তিতে সই করেন।

গতকাল জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান শিনজো আবে। এ সময় সুসজ্জিত একটি দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেয়। চুক্তি স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতার আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও শিনজো আবে। বৈঠকে দুই দেশের নীতিনির্ধারক ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক প্রমুখ।

চারদিনের সফরে গত মঙ্গলবার রাজধানী টোকিও পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা। জাপানী এই অর্থে মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১), বিদেশি বিনিয়োগ সহায়ক প্রকল্প (২), জ্বালানি দক্ষতা ও সুরক্ষা সহায়ক প্রকল্প (পর্যায়-২) ও মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে (৫) অর্থায়ন করা হবে।

আজ ‘দ্য ফিউচার অফ এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সম্মেলনে তিনি এশিয়ার সম্ভাবনা ও উত্থান নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরবেন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও তাত্ত্বিকদের সামনে। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটাই প্রথম জাপান সফর।

প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত এবং শিল্পায়নের জন্য জাপান এ সহায়তা দিচ্ছে । ৪০তম এই প্যাকেজ আগের বারের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি। জাপান এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী। ১৯৭২ সাল থেকে দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশ মোট এক হাজার ১৩০ কোটি ডলারের সহায়তা পেয়েছে।

সামিট গ্রুপ ও জেইআরএ সমঝোতা স্মারক সই

জাপানের রাজধানী টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ এবং জাপানের এনার্জি ফর নিউ এরা (জেইআরএ)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। সামিট গ্রুপের ফয়সাল করিম খান এবং জেইআরএ’র তোশিরো কোদোমা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ঢাকায় শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির জন্য মেডিকেল সরঞ্জাম এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

এছাড়াও জাপান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিএমএ) নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকুরাই হিরুইকি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সঙ্গে পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তির ডকুমেন্ট হস্তান্তর করেন উভয় পক্ষ।