আদালতে আসামিদের উগ্র আচরণ

নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তাদের উগ্র আচরণ করতে দেখা গেছে। সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনকে দেখে তারা তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। গতকাল বেলা পৌনে ১টার দিকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার শুনানির আগ মুহূর্তে আসামিরা এ আচরণ করে। আসামিরা উত্তেজিত হয়ে একসঙ্গে খোকনের ওপর চড়াও হতে চাইলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে নুসরাত হত্যা মামলাটি পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামিসহ গ্রেফতারকৃত ২১ জনকে আদালতে আনা হলে তাদের সবাই মামলাকে মিথ্যা মামলা হিসেবে দাবি করে। তারা এই ঘটনার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী অভিহিত করে অ্যাডভোকেট খোকনকে গালিগালাজ এবং হইচই শুরু করে।

আদালতে উপস্থিত বেশ কয়েকজন আইনজীবীসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী এই তথ্য জানিয়ে বলেন, আসামিরা আদালতে প্রবেশের সময় প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা খোকনকে সামনে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ‘দালাল দালাল’ বলে চিৎকার শুরু করে। এ পর্যায়ে কোর্ট পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে আসামিরা চুপ করে। পরে আদালত কক্ষে প্রবেশের পর আরেক দফা আসামিরা খোকনকে ‘ধর ধর’ বলে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ আদালত কক্ষ থেকে বহিরাগতদের বের করে দেয়। পরে এজলাসে আসেন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন। বিচারক এজলাসে বসে নুসরাত হত্যা মামলাটি পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা ও সোনাগাজী পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আদালতে নুসরাত হত্যাকারীদের আচরণে কিংবা হুমকিতে আমি শঙ্কিত নই। নুসরাতের মতো মরতে রাজি আছি। তবুও হত্যাকারীদের সঙ্গে আপস করব না।

সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরনবী লিটন এ প্রসঙ্গে বলেন, অ্যাডভোকেট খোকন নুসরাত হত্যাকারীদের মূল উসকানিদাতা ও পৃষ্ঠপোষক। তিনি-সহ তার সহযোগীরা এ ঘটনা থেকে নিজেদের রক্ষা করে দলীয় প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। ফলে আসামিরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফয়জুল কবির বলেন, আদালতে কী ঘটেছে তা জানি না। তবে আসামিরা যদি সত্যি এরকম আরচণ করে থাকে তবে তা উদ্ধত্যপূর্ণ। এতে প্রমাণ হয় তারা আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। অ্যাডভোকেট খোকনের সঙ্গে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।

কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. জিলানি বলেন, আসামিদের আনার সময় ও আদালতে প্রবেশের সময় হইচই হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। ক্ষোভ থেকে তারা হয়তো এরকম করেছে।

শুক্রবার, ৩১ মে ২০১৯ , ১৭ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৫ রমজান ১৪৪০

আদালতে আসামিদের উগ্র আচরণ

প্রতিনিধি, ফেনী

নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তাদের উগ্র আচরণ করতে দেখা গেছে। সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনকে দেখে তারা তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। গতকাল বেলা পৌনে ১টার দিকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার শুনানির আগ মুহূর্তে আসামিরা এ আচরণ করে। আসামিরা উত্তেজিত হয়ে একসঙ্গে খোকনের ওপর চড়াও হতে চাইলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে নুসরাত হত্যা মামলাটি পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামিসহ গ্রেফতারকৃত ২১ জনকে আদালতে আনা হলে তাদের সবাই মামলাকে মিথ্যা মামলা হিসেবে দাবি করে। তারা এই ঘটনার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী অভিহিত করে অ্যাডভোকেট খোকনকে গালিগালাজ এবং হইচই শুরু করে।

আদালতে উপস্থিত বেশ কয়েকজন আইনজীবীসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী এই তথ্য জানিয়ে বলেন, আসামিরা আদালতে প্রবেশের সময় প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা খোকনকে সামনে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ‘দালাল দালাল’ বলে চিৎকার শুরু করে। এ পর্যায়ে কোর্ট পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে আসামিরা চুপ করে। পরে আদালত কক্ষে প্রবেশের পর আরেক দফা আসামিরা খোকনকে ‘ধর ধর’ বলে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ আদালত কক্ষ থেকে বহিরাগতদের বের করে দেয়। পরে এজলাসে আসেন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন। বিচারক এজলাসে বসে নুসরাত হত্যা মামলাটি পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা ও সোনাগাজী পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আদালতে নুসরাত হত্যাকারীদের আচরণে কিংবা হুমকিতে আমি শঙ্কিত নই। নুসরাতের মতো মরতে রাজি আছি। তবুও হত্যাকারীদের সঙ্গে আপস করব না।

সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরনবী লিটন এ প্রসঙ্গে বলেন, অ্যাডভোকেট খোকন নুসরাত হত্যাকারীদের মূল উসকানিদাতা ও পৃষ্ঠপোষক। তিনি-সহ তার সহযোগীরা এ ঘটনা থেকে নিজেদের রক্ষা করে দলীয় প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। ফলে আসামিরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফয়জুল কবির বলেন, আদালতে কী ঘটেছে তা জানি না। তবে আসামিরা যদি সত্যি এরকম আরচণ করে থাকে তবে তা উদ্ধত্যপূর্ণ। এতে প্রমাণ হয় তারা আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। অ্যাডভোকেট খোকনের সঙ্গে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।

কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. জিলানি বলেন, আসামিদের আনার সময় ও আদালতে প্রবেশের সময় হইচই হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। ক্ষোভ থেকে তারা হয়তো এরকম করেছে।