বিশ্বকাপে বাঘের গর্জন

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৩০ রানের বিশাল সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ব্যাটসম্যানদের মতো বোলাররাও তাদের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। মুস্তাফিজ তিনটি এবং সাইফুদ্দিন দুটি উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন, ইংলিশ কন্ডিশনে তারা যেকোন সময়ে হয়ে উঠতে পারবেন ভয়ঙ্কর। প্রোটিয়াদের ৩০৯ রানে আটকে দেন টাইগার বোলাররা। ফলে চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে কেনিংটন ওভালে রোববার অনুষ্ঠিত নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট শক্তিকে ২১ রানে পরাজিত করে উড়ন্ত সূচনা করেছে টাইগাররা।

দশম ওভারে মেহেদি হাসানের করা বলে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি করে রান আউটের শিকার হন কুইন্টন ডি কক। উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলে দলীয় ৪৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় উইকেটে মার্করাম ও ফাফ ডু-প্লেসিসের ৫৩ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে দারুণ এক রেকর্ডে নিজের নামটা লেখান টাইগারদের বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২০তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের চতুর্থ বলে মার্করামকে বোল্ড করে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেট শিকারের ‘ডাবল’ গড়েন তিনি। এই ‘ডাবল’ আছে মাত্র চারজন ক্রিকেটারের। তবে দ্রুততম সময়ে এই কীর্তি গড়ে সাকিব ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। ১৯৯ ম্যাচে রেকর্ডটি হলো তার।

সেট ব্যাটসম্যান ফাফ ডু প্লেসিসকে দারুণ এক ঘূর্ণিতে বোল্ড করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫৩ বলে ৫টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কায় ৬২ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ডেভিড মিলারকে ‘কিলার’ হতে দেননি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান ক্যাচটা ধরেন মেহেদি মিরাজ। তার ৪৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে ছিল দুটি বাউন্ডারি। ফন ডার ডসেন ৩৮ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৪১ রান করে বোল্ড হন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে। টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট ততক্ষণে চেপে ধরেছে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টকে। বলা যায় ‘চোকার’দের ততক্ষণে আবারও দম-বন্ধ অবস্থা। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হিসেবে দলীয় ২৫২ রানে ফেহলুকায়ো (৮) ক্যাচ দেন সাকিবের হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় হয়ে ওঠে সময়ের ব্যাপার। ১০ বলে ১০ রান করা ক্রিস মরিসের পতন ঘটে মুস্তাফিজের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। জেপি ডুমিনিকেও (৪৫) বোল্ড করেন মুস্তাফিজ।

শেষদিকে রাবাদা (অপ. ১৩) এবং ইমরান তাহির (অপ. ১১) দাঁড়িয়ে থাকলেও তা দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় এড়ানোর কাজে আসেনি।

ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

এই জয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার পরস্পরের বিপক্ষে জয়ের পাল্লার ব্যবধান আরও কমে এলো। বিশ্বকাপে ৪ বারের দেখায় বাংলাদেশের জয় শুধু ২০০৭ বিশ্বকাপে জিতেছিল টাইগাররা।

বাকি তিনটা জয়ই প্রোটিয়াদের। রোববারের খেলার ফলাফলে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান দাঁড়াল ৩-২।

রেকর্ডবুকের হিসাবে আগের ২১ বারের সাক্ষাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৭ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় মাত্র তিনটা। একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করা বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরও সেমিফাইনালিস্ট টাইগাররা। রোববারের এই জয়ে টাইগারদের কাছে প্রত্যাশা বেড়ে গেল দেশবাসীর।

সোমবার, ০৩ জুন ২০১৯ , ২০ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৮ রমজান ১৪৪০

বিশ্বকাপে বাঘের গর্জন

বিশেষ প্রতিনিধি

image

প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ডুমিনিকে আউটের পর উল্লাস টাইগারদের

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৩০ রানের বিশাল সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ব্যাটসম্যানদের মতো বোলাররাও তাদের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। মুস্তাফিজ তিনটি এবং সাইফুদ্দিন দুটি উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন, ইংলিশ কন্ডিশনে তারা যেকোন সময়ে হয়ে উঠতে পারবেন ভয়ঙ্কর। প্রোটিয়াদের ৩০৯ রানে আটকে দেন টাইগার বোলাররা। ফলে চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে কেনিংটন ওভালে রোববার অনুষ্ঠিত নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট শক্তিকে ২১ রানে পরাজিত করে উড়ন্ত সূচনা করেছে টাইগাররা।

দশম ওভারে মেহেদি হাসানের করা বলে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি করে রান আউটের শিকার হন কুইন্টন ডি কক। উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলে দলীয় ৪৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় উইকেটে মার্করাম ও ফাফ ডু-প্লেসিসের ৫৩ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে দারুণ এক রেকর্ডে নিজের নামটা লেখান টাইগারদের বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২০তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের চতুর্থ বলে মার্করামকে বোল্ড করে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেট শিকারের ‘ডাবল’ গড়েন তিনি। এই ‘ডাবল’ আছে মাত্র চারজন ক্রিকেটারের। তবে দ্রুততম সময়ে এই কীর্তি গড়ে সাকিব ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। ১৯৯ ম্যাচে রেকর্ডটি হলো তার।

সেট ব্যাটসম্যান ফাফ ডু প্লেসিসকে দারুণ এক ঘূর্ণিতে বোল্ড করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫৩ বলে ৫টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কায় ৬২ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ডেভিড মিলারকে ‘কিলার’ হতে দেননি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান ক্যাচটা ধরেন মেহেদি মিরাজ। তার ৪৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে ছিল দুটি বাউন্ডারি। ফন ডার ডসেন ৩৮ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৪১ রান করে বোল্ড হন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে। টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট ততক্ষণে চেপে ধরেছে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টকে। বলা যায় ‘চোকার’দের ততক্ষণে আবারও দম-বন্ধ অবস্থা। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হিসেবে দলীয় ২৫২ রানে ফেহলুকায়ো (৮) ক্যাচ দেন সাকিবের হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় হয়ে ওঠে সময়ের ব্যাপার। ১০ বলে ১০ রান করা ক্রিস মরিসের পতন ঘটে মুস্তাফিজের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। জেপি ডুমিনিকেও (৪৫) বোল্ড করেন মুস্তাফিজ।

শেষদিকে রাবাদা (অপ. ১৩) এবং ইমরান তাহির (অপ. ১১) দাঁড়িয়ে থাকলেও তা দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় এড়ানোর কাজে আসেনি।

ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

এই জয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার পরস্পরের বিপক্ষে জয়ের পাল্লার ব্যবধান আরও কমে এলো। বিশ্বকাপে ৪ বারের দেখায় বাংলাদেশের জয় শুধু ২০০৭ বিশ্বকাপে জিতেছিল টাইগাররা।

বাকি তিনটা জয়ই প্রোটিয়াদের। রোববারের খেলার ফলাফলে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান দাঁড়াল ৩-২।

রেকর্ডবুকের হিসাবে আগের ২১ বারের সাক্ষাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৭ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় মাত্র তিনটা। একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করা বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরও সেমিফাইনালিস্ট টাইগাররা। রোববারের এই জয়ে টাইগারদের কাছে প্রত্যাশা বেড়ে গেল দেশবাসীর।