রেকর্ড পরিমাণ যানবাহন পারাপার

  • নেই যানজট
  • দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ এবার স্বস্তিতে ঘরে ফিরছে

রেকর্ড পরিমাণ যানবাহন পারাপার করায় যানজটহীন প্রধান দুটি ফেরি সেক্টরের দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার লাখ লাখ যাত্রী স্বস্তিতে ঘরে ফিরছেন। বিআইডব্লিউটিসি এবারই প্রথম তার বহরের সব ফেরি চলাচল সক্ষম রাখতে পারায় দেশের প্রধান দুটি ফেরি সেক্টর পাটুরিয়া ও মাওয়ায় যানজট নেই। গতকাল সকাল ৬টার আগে ২৪ ঘণ্টায় সংস্থাটি সব ফেরি সেক্টরে প্রায় ১৩ হাজার যানবাহন পারাপার করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত আরও পাঁচ সহস্রাধিক যানবাহন পারাপার হয়েছে পাটুরিয়া ও মাওয়ায়। ফলে রাজধানীর সঙ্গে বরিশাল ও খুলনা বিভাগসহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১টি জেলার সড়কপথে যানবাহন চলাচল এবার এখনও যথেষ্ট নির্বিঘ্ন। তবে কিছুটা ভোগান্তি রয়েছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা-বরিশাল সেক্টরের ফেরি সার্ভিসে। এসব সেক্টরে পারাপারকৃত যানবাহনের প্রায় অর্ধেকই অপেক্ষমাণ রয়েছে। প্রয়োজনীয় ফেরির স্বল্পতার কারণেই চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলাÑবরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের দুটি ফেরি সেক্টর ছাড়াও চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-শরীয়তপুর-গোপালগঞ্জ-খুলনা মহাসড়কেও বিড়ম্বনার শেষ নেই।

সোমবার সকাল ৬টার আগে ২৪ ঘণ্টায় আরিচা সেক্টরের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ৭ হাজার ৬০৩টি এবং মাওয়া সেক্টরের কাঁঠালবাড়ীÑশিমুলিয়া রুটে আরও প্রায় ৪ হাজার যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত আরিচা সেক্টরে ১১টি রো-রোসহ মোট ২০টি ফেরি চলাচল করছিল। একই সময়ে মাওয়া সেক্টরে ৩টি রো-রোসহ ১৮টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছিল। এসব ফেরির সাহায্যেই এত বিপুল পরিমাণ যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘এবার সংস্থার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক সচল ফেরি চলাচল করছে। ফলে যানবাহন পারপারেও রেকর্ড সৃষ্টি হবে।’ এর পাশাপাশি তিনি চাঁদপুর, ভোলা ও বরিশাল সেক্টরে ফেরি স্বল্পতার কথা স্বীকার করে কিছু যানবাহন অপেক্ষমাণ থাকার কথা জানিয়ে এ জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমারা চেষ্টা করছি ওইসব সেক্টরগুলোতেও অপেক্ষমাণ যানবাহন তৎপরতায় পারপার করতে।’ তবে ‘ঈদের পর ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে আরও অন্তত ১টি ফেরি মোতায়েনের চেষ্টা চলছে’ বলেও জানান তিনি।

সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে চাঁদপুর-শরীয়তপুর সেক্টরে ৪১৪টি যানবহন পারাপারের পরও আরো প্রায় ২০০ অপেক্ষমাণ ছিল বলে জানা গেছে। একইভাবে চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেক্টরে ৩টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে ১৯৩টি যানবাহন পারপার করা হলেও অপেক্ষমাণ ছিল আরও ১২০টি। ওই মহাসড়কেরই ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তী লাহারহাট-ভেদুরিয়া সেক্টরে ৪টি ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরির সাহায্যে প্রায় সোয়া ৪০০ যানবাহন পারপারের পরেও প্রায় ২০০ অপেক্ষমাণ ছিল।

অথচ ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা বরিশাল সেক্টরে ফেরি চলাচল ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে যানবাহন পারাপার বৃদ্ধি করতে পারলে তা ঢাকা-চট্টগাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ হ্রাস করতে সহায়ক হত। কারণ লক্ষ্মীপুর-ভোলা হয়ে সড়কপথে চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দূরত্ব প্রচলিত চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়রকের অর্ধেকেরও কম। ২০০৭ সালে ২টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে পরিক্ষামূলকভাবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস চালু করা হলেও গত এক যুগে এ সেক্টরের জন্য মানসম্পন্ন কোন ফেরি সংগ্রহ করেনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার, ০৪ জুন ২০১৯ , ২১ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৯ রমজান ১৪৪০

ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ও মাওয়া রুটে

রেকর্ড পরিমাণ যানবাহন পারাপার

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

  • নেই যানজট
  • দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ এবার স্বস্তিতে ঘরে ফিরছে

রেকর্ড পরিমাণ যানবাহন পারাপার করায় যানজটহীন প্রধান দুটি ফেরি সেক্টরের দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার লাখ লাখ যাত্রী স্বস্তিতে ঘরে ফিরছেন। বিআইডব্লিউটিসি এবারই প্রথম তার বহরের সব ফেরি চলাচল সক্ষম রাখতে পারায় দেশের প্রধান দুটি ফেরি সেক্টর পাটুরিয়া ও মাওয়ায় যানজট নেই। গতকাল সকাল ৬টার আগে ২৪ ঘণ্টায় সংস্থাটি সব ফেরি সেক্টরে প্রায় ১৩ হাজার যানবাহন পারাপার করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত আরও পাঁচ সহস্রাধিক যানবাহন পারাপার হয়েছে পাটুরিয়া ও মাওয়ায়। ফলে রাজধানীর সঙ্গে বরিশাল ও খুলনা বিভাগসহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১টি জেলার সড়কপথে যানবাহন চলাচল এবার এখনও যথেষ্ট নির্বিঘ্ন। তবে কিছুটা ভোগান্তি রয়েছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা-বরিশাল সেক্টরের ফেরি সার্ভিসে। এসব সেক্টরে পারাপারকৃত যানবাহনের প্রায় অর্ধেকই অপেক্ষমাণ রয়েছে। প্রয়োজনীয় ফেরির স্বল্পতার কারণেই চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলাÑবরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের দুটি ফেরি সেক্টর ছাড়াও চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-শরীয়তপুর-গোপালগঞ্জ-খুলনা মহাসড়কেও বিড়ম্বনার শেষ নেই।

সোমবার সকাল ৬টার আগে ২৪ ঘণ্টায় আরিচা সেক্টরের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ৭ হাজার ৬০৩টি এবং মাওয়া সেক্টরের কাঁঠালবাড়ীÑশিমুলিয়া রুটে আরও প্রায় ৪ হাজার যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত আরিচা সেক্টরে ১১টি রো-রোসহ মোট ২০টি ফেরি চলাচল করছিল। একই সময়ে মাওয়া সেক্টরে ৩টি রো-রোসহ ১৮টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছিল। এসব ফেরির সাহায্যেই এত বিপুল পরিমাণ যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘এবার সংস্থার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক সচল ফেরি চলাচল করছে। ফলে যানবাহন পারপারেও রেকর্ড সৃষ্টি হবে।’ এর পাশাপাশি তিনি চাঁদপুর, ভোলা ও বরিশাল সেক্টরে ফেরি স্বল্পতার কথা স্বীকার করে কিছু যানবাহন অপেক্ষমাণ থাকার কথা জানিয়ে এ জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমারা চেষ্টা করছি ওইসব সেক্টরগুলোতেও অপেক্ষমাণ যানবাহন তৎপরতায় পারপার করতে।’ তবে ‘ঈদের পর ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে আরও অন্তত ১টি ফেরি মোতায়েনের চেষ্টা চলছে’ বলেও জানান তিনি।

সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে চাঁদপুর-শরীয়তপুর সেক্টরে ৪১৪টি যানবহন পারাপারের পরও আরো প্রায় ২০০ অপেক্ষমাণ ছিল বলে জানা গেছে। একইভাবে চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেক্টরে ৩টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে ১৯৩টি যানবাহন পারপার করা হলেও অপেক্ষমাণ ছিল আরও ১২০টি। ওই মহাসড়কেরই ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তী লাহারহাট-ভেদুরিয়া সেক্টরে ৪টি ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরির সাহায্যে প্রায় সোয়া ৪০০ যানবাহন পারপারের পরেও প্রায় ২০০ অপেক্ষমাণ ছিল।

অথচ ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা বরিশাল সেক্টরে ফেরি চলাচল ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে যানবাহন পারাপার বৃদ্ধি করতে পারলে তা ঢাকা-চট্টগাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ হ্রাস করতে সহায়ক হত। কারণ লক্ষ্মীপুর-ভোলা হয়ে সড়কপথে চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দূরত্ব প্রচলিত চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়রকের অর্ধেকেরও কম। ২০০৭ সালে ২টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে পরিক্ষামূলকভাবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস চালু করা হলেও গত এক যুগে এ সেক্টরের জন্য মানসম্পন্ন কোন ফেরি সংগ্রহ করেনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।