বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে রানের চাপে বাংলাদেশ

আজকের খেলা

অস্ট্রেলিয়া- ভারত

দ্য ওভাল, ৩.৩০মি.

কার্ডিফের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোণা। অঝোরে বৃষ্টিও হয়েছে। দুদিন ধরে ঢাকা ছিলো পিচ। এমন একটা কন্ডিশনে যেকোন অধিনায়কই টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গতকাল বিশ্বকাপের ম্যাচে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে মুদ্রা নিক্ষেপে জিতেছিলেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা নিয়েছিলেন বোলিং। কিন্তু কার্ডিফের ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে ছত্রখান করে দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ইংলিশ ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট জমা করে ৩৮৬ রান। জিততে রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। আবার এই স্কোর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড সর্বোচ্চ। একদিনের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোন দলের এটা সর্বোচ্চ। ২০১১ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের ৪ উইকেটে ৩৭০ ছিল আগের সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এর চেয়ে বেশি রান আছে কেবল একটি। ২০০৫ সালে নটিংহ্যামে ইংল্যান্ডই ৪ উইকেটে করেছিল ৩৯১ রান। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৩২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ার কীর্তি আছে আয়ারল্যান্ডের। আর বাংলাদেশ জিতেছে ৩১৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে। এটা ওয়ানডেতেও তাদের রান তাড়ার রেকর্ড। ২০০৭ সালে ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া টানা ছয় ম্যাচে তিনশ’ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়েছিল। ইংল্যান্ড টানা সাত ম্যাচে তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে ছাড়িয়ে গেল তাদের।

বিশ্বকাপে এত রান তাড়া করে জয়ের কোন রেকর্ডই নেই।

প্রথম ঘণ্টায় পেস বোলাররা কার্ডিফের পিচে সুবিধা পাবেন বলে ধারণা করা হলেও সাকিবকে দিয়ে আক্রমণের সূচনা করে মাশরাফি যে ফাটকা খেলতে চেয়েছিলেন, তা কাজে লাগেনি। নিজের কোটার দশ ওভারে ৭১ রান দিয়ে সাকিব থেকেছেন উইকেটশূন্য। অন্যদিকে মাশরাফি-সাকিবের করা শুরুর ওভারগুলোতে দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো ধীরে ধীরে থিতু হয়ে হাত খুলেছেন। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে জেসন রয় পেয়েছেন সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের ইনিংসে ১২৮ রান ওঠার পর প্রথম ব্রেকথ্রু হিসেবে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি জনি বেয়ারস্টোকে ফেরালেও ৫০ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ইংলিশ ওপেনারের সংগ্রহ ৫১ রান। জো রুটকে (২১) জাঁকিয়ে বসতে দেননি সাইফুদ্দিন। তবে রয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে রুটের পার্টনারশিপ ৭৭ রানের। রুট আউট হওয়ার পর জস বাটলার নির্দয়ভাবে পিটিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের। জেসন রয় ১২১ বলে ১৪ বাউন্ডারি ও পাঁচ ছক্কায় ১৫৩ রান করে মেহেদি মিরাজের বলে মাশরাফির হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন দলীয় ২৩৫ রানে। পরের গল্পটা বাটলার ও মরগানের। বাটলার দুই বাউন্ডারি ও তার দ্বিগুণ পরিমাণ ছক্কার মারে ৪৪ বলে ৬৪ রানে বিদায় নেয়ার আগে চতুর্থ উইকেটে মরগানের (৩৫) সঙ্গে গড়েন ৯৫ রানের পার্টনারশিপ।

শেষদিকে ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাংকেট মাত্র ২.৫ ওভারে জমা দেন ৪৫ রান। মাত্র আট বলে দুটো ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন ওকস। আর ৯ বলে চার বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় প্লাংকেট অপরাজিত থাকেন ২৭ রানে। একটা পর্যায়ে মেহেদি মিরাজ ইংলিশ অধিনায়ক মরগানকে এবং বেন স্টোকসকে (৬) মোস্তাফিজ ফেরালেও তা ইংলিশদের পাহাড়সমান সংগ্রহ গড়ার পথে বাধা হয়ে উঠতে দেয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড ৩৮৬/৬ জেসন রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মর্গান ৩৫, স্টোকস ৬, ওকস ১৮*, প্লাংকেট ২৭*; উইকেট পতন: ১/১২৮, ২/২০৫, ৩/২৩৫, ৪/৩৩০, ৫/৩৪০, ৬/৩৪১। বোলিং: সাকিব ১০-০-৭১-০, মাশরাফি ১০-০-৬৮-১, সাইফ ৯-০-৭৮-২, মোস্তাফিজ ৯-০-৭৫-১, মেহদি মিরাজ ১০-০-৬৭-২, মোসাদ্দেক ২-০-২৪-০)। টস জয়ী: বাংলাদেশ।

রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯ , ২৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৫ শাওয়াল ১৪৪০

বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে রানের চাপে বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি

image

কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে হতাশাগ্রস্ত সাকিব আল হাসান

আজকের খেলা

অস্ট্রেলিয়া- ভারত

দ্য ওভাল, ৩.৩০মি.

কার্ডিফের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোণা। অঝোরে বৃষ্টিও হয়েছে। দুদিন ধরে ঢাকা ছিলো পিচ। এমন একটা কন্ডিশনে যেকোন অধিনায়কই টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গতকাল বিশ্বকাপের ম্যাচে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে মুদ্রা নিক্ষেপে জিতেছিলেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা নিয়েছিলেন বোলিং। কিন্তু কার্ডিফের ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে ছত্রখান করে দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ইংলিশ ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট জমা করে ৩৮৬ রান। জিততে রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। আবার এই স্কোর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড সর্বোচ্চ। একদিনের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোন দলের এটা সর্বোচ্চ। ২০১১ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের ৪ উইকেটে ৩৭০ ছিল আগের সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এর চেয়ে বেশি রান আছে কেবল একটি। ২০০৫ সালে নটিংহ্যামে ইংল্যান্ডই ৪ উইকেটে করেছিল ৩৯১ রান। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৩২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ার কীর্তি আছে আয়ারল্যান্ডের। আর বাংলাদেশ জিতেছে ৩১৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে। এটা ওয়ানডেতেও তাদের রান তাড়ার রেকর্ড। ২০০৭ সালে ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া টানা ছয় ম্যাচে তিনশ’ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়েছিল। ইংল্যান্ড টানা সাত ম্যাচে তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে ছাড়িয়ে গেল তাদের।

বিশ্বকাপে এত রান তাড়া করে জয়ের কোন রেকর্ডই নেই।

প্রথম ঘণ্টায় পেস বোলাররা কার্ডিফের পিচে সুবিধা পাবেন বলে ধারণা করা হলেও সাকিবকে দিয়ে আক্রমণের সূচনা করে মাশরাফি যে ফাটকা খেলতে চেয়েছিলেন, তা কাজে লাগেনি। নিজের কোটার দশ ওভারে ৭১ রান দিয়ে সাকিব থেকেছেন উইকেটশূন্য। অন্যদিকে মাশরাফি-সাকিবের করা শুরুর ওভারগুলোতে দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো ধীরে ধীরে থিতু হয়ে হাত খুলেছেন। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে জেসন রয় পেয়েছেন সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের ইনিংসে ১২৮ রান ওঠার পর প্রথম ব্রেকথ্রু হিসেবে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি জনি বেয়ারস্টোকে ফেরালেও ৫০ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ইংলিশ ওপেনারের সংগ্রহ ৫১ রান। জো রুটকে (২১) জাঁকিয়ে বসতে দেননি সাইফুদ্দিন। তবে রয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে রুটের পার্টনারশিপ ৭৭ রানের। রুট আউট হওয়ার পর জস বাটলার নির্দয়ভাবে পিটিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের। জেসন রয় ১২১ বলে ১৪ বাউন্ডারি ও পাঁচ ছক্কায় ১৫৩ রান করে মেহেদি মিরাজের বলে মাশরাফির হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন দলীয় ২৩৫ রানে। পরের গল্পটা বাটলার ও মরগানের। বাটলার দুই বাউন্ডারি ও তার দ্বিগুণ পরিমাণ ছক্কার মারে ৪৪ বলে ৬৪ রানে বিদায় নেয়ার আগে চতুর্থ উইকেটে মরগানের (৩৫) সঙ্গে গড়েন ৯৫ রানের পার্টনারশিপ।

শেষদিকে ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাংকেট মাত্র ২.৫ ওভারে জমা দেন ৪৫ রান। মাত্র আট বলে দুটো ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন ওকস। আর ৯ বলে চার বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় প্লাংকেট অপরাজিত থাকেন ২৭ রানে। একটা পর্যায়ে মেহেদি মিরাজ ইংলিশ অধিনায়ক মরগানকে এবং বেন স্টোকসকে (৬) মোস্তাফিজ ফেরালেও তা ইংলিশদের পাহাড়সমান সংগ্রহ গড়ার পথে বাধা হয়ে উঠতে দেয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড ৩৮৬/৬ জেসন রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মর্গান ৩৫, স্টোকস ৬, ওকস ১৮*, প্লাংকেট ২৭*; উইকেট পতন: ১/১২৮, ২/২০৫, ৩/২৩৫, ৪/৩৩০, ৫/৩৪০, ৬/৩৪১। বোলিং: সাকিব ১০-০-৭১-০, মাশরাফি ১০-০-৬৮-১, সাইফ ৯-০-৭৮-২, মোস্তাফিজ ৯-০-৭৫-১, মেহদি মিরাজ ১০-০-৬৭-২, মোসাদ্দেক ২-০-২৪-০)। টস জয়ী: বাংলাদেশ।