রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসিয়ান প্রতিবেদন ফাঁস

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের গাফিলতি রয়েছে। প্রত্যাবাসনের কাজ ম্যানুয়ালি না করে অটোমেটিকভাবে করলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে ‘দুই বছরের মতো’ সময় লাগবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আসিয়ানের রোহিঙ্গা বিষয়ক এক প্রতিবেদনে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর এই জোটের ‘ইমার্জেন্সি রেসপনস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট টিম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য রয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এছাড়াও প্রতিবেদনে রাখাইন রাজ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর গণহত্যার কোন বিষয় উল্লেখ নেই বলেও জানায় ফরাসি বার্তা সংস্থা।

এএফপির মতে, মায়ানমার সরকারের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ৫ লাখ যা বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের হিসাবের চেয়ে অনেক কম। ‘প্রিলিমিনারি নিডস অ্যাসেসমেন্ট ফর রিপেট্রিয়েশন ইন রাখাইন স্টেট, মায়ানমার’ এই ৫ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে। আসিয়ানের প্রতিবেদনে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। এর পরিবর্তে সেখানে ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়, ম্যানুয়ালি কাজ করার পরিবর্তে অটোমেটিকভাবে কাজ করা হলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে ‘দুই বছরের মতো’ সময় লাগবে।

শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে সেই প্রতিবেদনে শরণার্থীদের ‘সহজ ও সুশৃঙ্খলভাবে’ প্রত্যাবাসনের কাজে মায়ানমারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়। এ বিষয়ে মায়ানমারের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, এখনো কোন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় মায়ানমারে প্রত্যাবাসন করেননি।

প্রতিবেদনটি দেখার পর বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আশিয়ানের প্রতিবেদনটি আগামী যেকোন দিন প্রকাশিত হতে পারে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে ফাঁদে ফেলতে মায়ানমারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। যে সমস্যায় পড়বে ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আরও প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা।

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিদ্রোহ নির্মূল করার জন্যে ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায়। নিজেদের বাসভূমি রাখাইন রাজ্য তথা মায়ানমার ছাড়তে তারা বাধ্য হন। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমার সেনাদের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ দেখে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা সে দেশের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের ‘গণহত্যা’র অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ এবং মায়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চুক্তি সই করে। কিন্তু নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের অভাবে এখন পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারে ফিরে যাননি।

রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯ , ২৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৫ শাওয়াল ১৪৪০

রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসিয়ান প্রতিবেদন ফাঁস

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের গাফিলতি রয়েছে। প্রত্যাবাসনের কাজ ম্যানুয়ালি না করে অটোমেটিকভাবে করলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে ‘দুই বছরের মতো’ সময় লাগবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আসিয়ানের রোহিঙ্গা বিষয়ক এক প্রতিবেদনে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর এই জোটের ‘ইমার্জেন্সি রেসপনস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট টিম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য রয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এছাড়াও প্রতিবেদনে রাখাইন রাজ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর গণহত্যার কোন বিষয় উল্লেখ নেই বলেও জানায় ফরাসি বার্তা সংস্থা।

এএফপির মতে, মায়ানমার সরকারের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ৫ লাখ যা বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের হিসাবের চেয়ে অনেক কম। ‘প্রিলিমিনারি নিডস অ্যাসেসমেন্ট ফর রিপেট্রিয়েশন ইন রাখাইন স্টেট, মায়ানমার’ এই ৫ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে। আসিয়ানের প্রতিবেদনে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। এর পরিবর্তে সেখানে ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়, ম্যানুয়ালি কাজ করার পরিবর্তে অটোমেটিকভাবে কাজ করা হলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে ‘দুই বছরের মতো’ সময় লাগবে।

শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে সেই প্রতিবেদনে শরণার্থীদের ‘সহজ ও সুশৃঙ্খলভাবে’ প্রত্যাবাসনের কাজে মায়ানমারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়। এ বিষয়ে মায়ানমারের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, এখনো কোন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় মায়ানমারে প্রত্যাবাসন করেননি।

প্রতিবেদনটি দেখার পর বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আশিয়ানের প্রতিবেদনটি আগামী যেকোন দিন প্রকাশিত হতে পারে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে ফাঁদে ফেলতে মায়ানমারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। যে সমস্যায় পড়বে ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আরও প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা।

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিদ্রোহ নির্মূল করার জন্যে ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায়। নিজেদের বাসভূমি রাখাইন রাজ্য তথা মায়ানমার ছাড়তে তারা বাধ্য হন। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমার সেনাদের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ দেখে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা সে দেশের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের ‘গণহত্যা’র অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ এবং মায়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চুক্তি সই করে। কিন্তু নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের অভাবে এখন পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারে ফিরে যাননি।