ঢাকায় ফিরছে মানুষ

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছে মানুষ। কর্মদিবস শুরু হওয়ায় গতকাল যাত্রীদের চাপ ছিল গণপরিবহনগুলোতে। ঢাকা ফেরার সময় পরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং ভাড়া বৃদ্ধির কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে যত্রীদের। পাশাপাশি বাস ও ট্রেন ছাড়তে দেরি করায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন অনেকে। তবে সব মিলিয়ে নিরাপদে কর্মস্থল ঢাকায় পৌঁছে খুশি সবাই।

গতকাল কমলাপুর স্টেশনের গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন থেকে যাত্রী তুলতে পারেনি বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রেন। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ে কমলাপুরে পৌঁছাতে পারেনি ট্রেনগুলো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬৯টি ট্রেন ঢাকায় ফিরবে এবং ৬৯টি ঢাকা ছেড়ে যাবে। প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী ভর্তি রয়েছে। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সময়ও যাত্রী রয়েছে। যারা ঈদে যেতে পারেনি তারা এখন যাচ্ছে। এসব ট্রেনে কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ঢাকায় ফিরবে। তিনি জানান, যাত্রী চাপের কারণে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রংপুর থেকে আসা রংপুর এক্সপ্রেস ও দিনাজপুর থেকে আসা একতা এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এসব ট্রেন কমলাপুর থেকে যতটা সম্ভব দ্রুত ছাড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বেলা ১২টা নাগাদ ২২টি ট্রেন ঢাকা ছেড়েছে। একই সময় বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ২১টির মতো ট্রেন ঢাকায় এসেছে।

অপরদিকে সকালে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, টার্মিনালে আসা প্রতিটি লঞ্চের কেবিন থেকে শুরু করে ডেকের কোথাও ফাঁকা জায়গা নেই। বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়েই লঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরছে। চাকরিজীবী প্রতিটি যাত্রীর লক্ষ্য রোববার প্রথম কর্মদিবসে অফিসে হাজির হওয়া। ঢাকা-মনপুরা-হাতিয়াগামী লঞ্চ এমভি ফারহান-৩-এর ম্যানেজার আবদুর রহিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত দুইদিনের তুলনায় আজ (গতকাল) যথেষ্ট যাত্রী রয়েছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরছে। তবে এখন পর্যন্ত গার্মেন্টস শ্রমিকদের চাপ কম। হাতিয়া থেকে এমভি ফারহান-৪ যোগে ঢাকায় আসা যাত্রী তানজিমুল ইসলাম বালেন, মানুষের চাপে চেষ্টা করেও কেবিন পাইনি। ডেকে করেই আসতে হয়েছে। একটু কষ্ট হয়েছে। মালামাল নিয়ে যথেষ্ট দুর্ভোগে পড়েছি। সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান তো আছেই।

অপরদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিটি বাসই যাত্রী নিয়ে ভর্তি অবস্থায় আসছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্টেশনগুলো থেকে যাত্রী ভরে গেলেই তারা ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সড়কে যানজট কিছুটা কম। নোয়াখালী থেকে আসা যাত্রী মো. হায়দার বলেন, ‘ভোর রাত সাড়ে ৩টায় বাস ছাড়ার কথা, ছেড়েছে ৪টায়। ভাড়াও অনেক বেশি। অন্য সময় ৩৮০ টাকা রাখলেও এখন নিচ্ছে ৫০০ টাকা। এরপরও বাস পুরো ভর্তি হওয়ার জন্য কাউন্টারগুলোতে দাঁড়িয়ে থাকে।’ ঢাকা-আলফাডাঙ্গা রুটে চলাচলকারী সূর্যমুখী পরিবহনের ম্যানেজার ইসহাক বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি রুটে এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী নেই। যাওয়ার সময় খালি যাচ্ছে। তবে আসার সময় কিছু যাত্রী নিয়ে আসছে। সন্ধ্যা থেকে চাপ আর একটু বাড়বে।’

সাধারণ সময়ে মানিকগঞ্জ-ঢাকা রুটে ভাড়া ২০০ টাকা হলেও ‘মানিকগঞ্জ এসি লিংক লিমিডেট’ যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে ৪০০ টাকা। ঈদ মোবারক লিখে টিকিটের উপরে ২০০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকা আলাদা করে লিখে দিচ্ছে।

রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯ , ২৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৫ শাওয়াল ১৪৪০

ঢাকায় ফিরছে মানুষ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছে মানুষ। কর্মদিবস শুরু হওয়ায় গতকাল যাত্রীদের চাপ ছিল গণপরিবহনগুলোতে। ঢাকা ফেরার সময় পরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং ভাড়া বৃদ্ধির কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে যত্রীদের। পাশাপাশি বাস ও ট্রেন ছাড়তে দেরি করায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন অনেকে। তবে সব মিলিয়ে নিরাপদে কর্মস্থল ঢাকায় পৌঁছে খুশি সবাই।

গতকাল কমলাপুর স্টেশনের গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন থেকে যাত্রী তুলতে পারেনি বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রেন। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ে কমলাপুরে পৌঁছাতে পারেনি ট্রেনগুলো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬৯টি ট্রেন ঢাকায় ফিরবে এবং ৬৯টি ঢাকা ছেড়ে যাবে। প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী ভর্তি রয়েছে। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সময়ও যাত্রী রয়েছে। যারা ঈদে যেতে পারেনি তারা এখন যাচ্ছে। এসব ট্রেনে কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ঢাকায় ফিরবে। তিনি জানান, যাত্রী চাপের কারণে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রংপুর থেকে আসা রংপুর এক্সপ্রেস ও দিনাজপুর থেকে আসা একতা এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এসব ট্রেন কমলাপুর থেকে যতটা সম্ভব দ্রুত ছাড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বেলা ১২টা নাগাদ ২২টি ট্রেন ঢাকা ছেড়েছে। একই সময় বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ২১টির মতো ট্রেন ঢাকায় এসেছে।

অপরদিকে সকালে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, টার্মিনালে আসা প্রতিটি লঞ্চের কেবিন থেকে শুরু করে ডেকের কোথাও ফাঁকা জায়গা নেই। বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়েই লঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরছে। চাকরিজীবী প্রতিটি যাত্রীর লক্ষ্য রোববার প্রথম কর্মদিবসে অফিসে হাজির হওয়া। ঢাকা-মনপুরা-হাতিয়াগামী লঞ্চ এমভি ফারহান-৩-এর ম্যানেজার আবদুর রহিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত দুইদিনের তুলনায় আজ (গতকাল) যথেষ্ট যাত্রী রয়েছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরছে। তবে এখন পর্যন্ত গার্মেন্টস শ্রমিকদের চাপ কম। হাতিয়া থেকে এমভি ফারহান-৪ যোগে ঢাকায় আসা যাত্রী তানজিমুল ইসলাম বালেন, মানুষের চাপে চেষ্টা করেও কেবিন পাইনি। ডেকে করেই আসতে হয়েছে। একটু কষ্ট হয়েছে। মালামাল নিয়ে যথেষ্ট দুর্ভোগে পড়েছি। সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান তো আছেই।

অপরদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিটি বাসই যাত্রী নিয়ে ভর্তি অবস্থায় আসছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্টেশনগুলো থেকে যাত্রী ভরে গেলেই তারা ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সড়কে যানজট কিছুটা কম। নোয়াখালী থেকে আসা যাত্রী মো. হায়দার বলেন, ‘ভোর রাত সাড়ে ৩টায় বাস ছাড়ার কথা, ছেড়েছে ৪টায়। ভাড়াও অনেক বেশি। অন্য সময় ৩৮০ টাকা রাখলেও এখন নিচ্ছে ৫০০ টাকা। এরপরও বাস পুরো ভর্তি হওয়ার জন্য কাউন্টারগুলোতে দাঁড়িয়ে থাকে।’ ঢাকা-আলফাডাঙ্গা রুটে চলাচলকারী সূর্যমুখী পরিবহনের ম্যানেজার ইসহাক বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি রুটে এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী নেই। যাওয়ার সময় খালি যাচ্ছে। তবে আসার সময় কিছু যাত্রী নিয়ে আসছে। সন্ধ্যা থেকে চাপ আর একটু বাড়বে।’

সাধারণ সময়ে মানিকগঞ্জ-ঢাকা রুটে ভাড়া ২০০ টাকা হলেও ‘মানিকগঞ্জ এসি লিংক লিমিডেট’ যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে ৪০০ টাকা। ঈদ মোবারক লিখে টিকিটের উপরে ২০০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকা আলাদা করে লিখে দিচ্ছে।