যাত্রী চাপ নৌরুটে

  • লঞ্চ ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত বোঝাই ও বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ
  • দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি

গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করেছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে। ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে রাজধানী ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। ফেরিতেও যানবাহনের চাপ রয়েছে। বেশি ভিড় লঞ্চে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে দেখা গেছে। বিআইডব্লিউটি’র একটি টিম ঘাটে অবস্থান করলেও যাত্রী তুলতে শিথিলতা লক্ষ্য করা গেছে। এদিন যাত্রী তুলতে পুলিশ বাধা দিলে বিআইডব্লিউটি’র সঙ্গে বাগবিতন্ডার ঘটনাও ঘটে। আর লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। ঘাট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে স্বল্প দূরত্বের নৌরুট হওয়ায় শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিমুলীয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট হয়ে কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রীরা সড়ক পথে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে ফেরি, লঞ্চ, ও স্পিডবোট পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ, স্পিডবোটেই ছিল যাত্রী ভর্তি। ঘাটে বিআইডব্লিউটি’র ঢাকা থেকে আগত টিমসহ একাধিক টিম অবস্থান করলেও যাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে তেমন তৎপরতা চোখে পড়েনি। গতকাল সকালে বেশি যাত্রী তুলতে পুলিশ বাধা দিলে বিআইডব্লিউটি’র সঙ্গে বাগবিত-ার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়। ফলে বৈরী আবহাওয়ার মাঝেই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। লঞ্চগুলো ঘাট ছাড়ার পর যাত্রীদের কাছ থেকে যাত্রীপ্রতি ৩৩ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা আদায় করছে। স্পিডবোটে ১৩০ টাকার ভাড়া ২শ’ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। ফেরিগুলোতেও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিটি যানবাহনেই যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছেন যাত্রীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া এমএল লিটন পরিবহন লঞ্চের সামনে ধারণক্ষমতা দিনে ১০১ জন যাত্রী লেখা থাকলেও যাত্রী উত্তোলন করতে দেখা যায় ৩২৪ জন। এরকম সবকটি লঞ্চেই ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ যাত্রী বহন করতে দেখা যায়। যদিও বিআইডব্লিউটি’র ডেপুটি ডিরেক্টর কবির হোসেন, সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটি’র একটি টিম ঘাটে অবস্থান করছিল। অন্য সংস্থাগুলোকে এ বছর যাত্রী নিয়ন্ত্রণে তেমন তৎপর দেখা যায়নি।

স্পিডবোট যাত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, যাওয়ার সময়ও ২শ’ টাকা আসার সময়ও ২শ’ টাকা। মাইক্রোবাসে কালনা ঘাট থেকে দেড়শ’ টাকার ভাড়া সাড়ে ৩শ’ টাকা নিলো।

ঢাকাগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘসময় লঞ্চে উঠার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু সব লঞ্চই বেশি যাত্রী নিচ্ছে তাই অপেক্ষা করছি বড় লঞ্চের জন্য। বর্ষা মৌসুম চলছে; এভাবে যাত্রী নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ। ফেরিতেও পার হতে পারি।

বিআইডব্লিউটি’র কাঁঠালবাড়ি ঘাটের পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, সকালে পুলিশ কর্মকর্তারা না বুঝেই যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করছিল। সেসময় কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে ঠিক হয়েছে। অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদে ধারণক্ষমতা লেখা মেনে লঞ্চ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকার টিমও রয়েছে। তবে যাত্রী অতিরিক্ত বোঝাই হচ্ছে না। লঞ্চে ও স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাত্রী চাপ থাকায় ওপাড় থেকে শূন্য লঞ্চ এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ যাত্রী চাপ রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ র‌্যাব ঘাটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে।

দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি

এদিকে গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানায় : দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটারজুড়ে সৃষ্টি হয় গাড়ির দীর্ঘ যানজট। সিরিয়ালে আটকে থাকা বাসযাত্রীরা এ সময় দুর্ভোগ পোহান।

সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, শনিবার দুপুরের আগ পর্যন্ত নদী পারাপার হতে আসা যানবাহনগুলো ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেয়ে যায়। অপরদিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের ঢল নামে। লঞ্চঘাটের ওভারব্রিজ ও পন্টুনে পা ফেলার জায়গাও ছিল না। এদিকে দুপুরের পর থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় গাড়ির সারি সৃষ্টি হতে দেখা যায়। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারি। অপরদিকে বাইপাস সড়কের ১ কিলোমিটারজুড়ে নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে আছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বাড়ছে যানবাহনের চাপ।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নৌরুটের ২০টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে ১৯টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে। রুটে অপর ইউটিলিটি ফেরি শাপলা-শালুক যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে দুইদিন ধরে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে আছে। আশা করি রোববার সকাল নাগাদ ফেরিটি বহরে যুক্তি হবে। তবে তিনি দাবি করেন গত ১২ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। যে কারণে সিরিয়াল লম্বা হলেও খুব বেশি সময় ফেরি নাগাল পেতে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, লঞ্চঘাটে মানুষের ঢল নামলেও কোন লঞ্চে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নদী পার হওয়ার সুযোগ নেই। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলীর নেতৃত্বে কর্মস্থলগামী মানুষের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ কাজ করে যাচ্ছেন।

রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯ , ২৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৫ শাওয়াল ১৪৪০

যাত্রী চাপ নৌরুটে

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)/গোয়ালন্দ

image

রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। গতকাল সদরঘাট থেকে তোলা ছবি -সংবাদ

  • লঞ্চ ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত বোঝাই ও বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ
  • দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি

গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করেছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে। ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে রাজধানী ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। ফেরিতেও যানবাহনের চাপ রয়েছে। বেশি ভিড় লঞ্চে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে দেখা গেছে। বিআইডব্লিউটি’র একটি টিম ঘাটে অবস্থান করলেও যাত্রী তুলতে শিথিলতা লক্ষ্য করা গেছে। এদিন যাত্রী তুলতে পুলিশ বাধা দিলে বিআইডব্লিউটি’র সঙ্গে বাগবিতন্ডার ঘটনাও ঘটে। আর লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। ঘাট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে স্বল্প দূরত্বের নৌরুট হওয়ায় শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিমুলীয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট হয়ে কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রীরা সড়ক পথে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে ফেরি, লঞ্চ, ও স্পিডবোট পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ, স্পিডবোটেই ছিল যাত্রী ভর্তি। ঘাটে বিআইডব্লিউটি’র ঢাকা থেকে আগত টিমসহ একাধিক টিম অবস্থান করলেও যাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে তেমন তৎপরতা চোখে পড়েনি। গতকাল সকালে বেশি যাত্রী তুলতে পুলিশ বাধা দিলে বিআইডব্লিউটি’র সঙ্গে বাগবিত-ার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়। ফলে বৈরী আবহাওয়ার মাঝেই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। লঞ্চগুলো ঘাট ছাড়ার পর যাত্রীদের কাছ থেকে যাত্রীপ্রতি ৩৩ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা আদায় করছে। স্পিডবোটে ১৩০ টাকার ভাড়া ২শ’ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। ফেরিগুলোতেও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিটি যানবাহনেই যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছেন যাত্রীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া এমএল লিটন পরিবহন লঞ্চের সামনে ধারণক্ষমতা দিনে ১০১ জন যাত্রী লেখা থাকলেও যাত্রী উত্তোলন করতে দেখা যায় ৩২৪ জন। এরকম সবকটি লঞ্চেই ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ যাত্রী বহন করতে দেখা যায়। যদিও বিআইডব্লিউটি’র ডেপুটি ডিরেক্টর কবির হোসেন, সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটি’র একটি টিম ঘাটে অবস্থান করছিল। অন্য সংস্থাগুলোকে এ বছর যাত্রী নিয়ন্ত্রণে তেমন তৎপর দেখা যায়নি।

স্পিডবোট যাত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, যাওয়ার সময়ও ২শ’ টাকা আসার সময়ও ২শ’ টাকা। মাইক্রোবাসে কালনা ঘাট থেকে দেড়শ’ টাকার ভাড়া সাড়ে ৩শ’ টাকা নিলো।

ঢাকাগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘসময় লঞ্চে উঠার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু সব লঞ্চই বেশি যাত্রী নিচ্ছে তাই অপেক্ষা করছি বড় লঞ্চের জন্য। বর্ষা মৌসুম চলছে; এভাবে যাত্রী নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ। ফেরিতেও পার হতে পারি।

বিআইডব্লিউটি’র কাঁঠালবাড়ি ঘাটের পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, সকালে পুলিশ কর্মকর্তারা না বুঝেই যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করছিল। সেসময় কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে ঠিক হয়েছে। অতিরিক্ত বোঝাই ও ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদে ধারণক্ষমতা লেখা মেনে লঞ্চ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকার টিমও রয়েছে। তবে যাত্রী অতিরিক্ত বোঝাই হচ্ছে না। লঞ্চে ও স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাত্রী চাপ থাকায় ওপাড় থেকে শূন্য লঞ্চ এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ যাত্রী চাপ রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ র‌্যাব ঘাটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে।

দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি

এদিকে গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানায় : দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটারজুড়ে সৃষ্টি হয় গাড়ির দীর্ঘ যানজট। সিরিয়ালে আটকে থাকা বাসযাত্রীরা এ সময় দুর্ভোগ পোহান।

সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, শনিবার দুপুরের আগ পর্যন্ত নদী পারাপার হতে আসা যানবাহনগুলো ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেয়ে যায়। অপরদিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের ঢল নামে। লঞ্চঘাটের ওভারব্রিজ ও পন্টুনে পা ফেলার জায়গাও ছিল না। এদিকে দুপুরের পর থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় গাড়ির সারি সৃষ্টি হতে দেখা যায়। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারি। অপরদিকে বাইপাস সড়কের ১ কিলোমিটারজুড়ে নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে আছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বাড়ছে যানবাহনের চাপ।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নৌরুটের ২০টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে ১৯টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে। রুটে অপর ইউটিলিটি ফেরি শাপলা-শালুক যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে দুইদিন ধরে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে আছে। আশা করি রোববার সকাল নাগাদ ফেরিটি বহরে যুক্তি হবে। তবে তিনি দাবি করেন গত ১২ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। যে কারণে সিরিয়াল লম্বা হলেও খুব বেশি সময় ফেরি নাগাল পেতে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, লঞ্চঘাটে মানুষের ঢল নামলেও কোন লঞ্চে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নদী পার হওয়ার সুযোগ নেই। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলীর নেতৃত্বে কর্মস্থলগামী মানুষের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ কাজ করে যাচ্ছেন।