আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আভাস

আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আভাস দিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এছাড়া গ্যাসের সব মিটার প্রিপেইড করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে ঈদ-পরবর্তী পুনর্মিলনী ও বিদ্যুৎ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব বিষয়ে ই্িঙ্গত করেন।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্যাসের দামের বিষয়টি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে সাবমিট করেছি। এখন আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

সংবাদ সম্মেলনে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মো. হোসেইন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের কুশল বিনিময় করেন এবং সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের দামটা সমন্বয় করা দরকার। বার্ককে (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি) আমরা গ্যাসের দামের বিষয়টি সাবমিট করেছি। এখন সম্পূর্ণ বার্কের ওপর নির্ভর করছে, তারা গ্যাসের দাম সমন্বয় করবেন কিনা। আমরা অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম আমরা সমন্বয় করতে চাচ্ছিলাম এ জন্য যে, গ্যাস আমরা আমদানি করছিলাম এতদিন ধরে। এখানে গ্যাসে আমরা ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় করে ফেলেছি। এখন সামনে আরও ১৪ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এ টাকাটা আসবে কোথা থেকে? গ্রাহকের কাছ থেকে তো আগের দামে ওই টাকায় আসছে না। তাই যদি সমন্বয় না করেন, তাহলে সমস্যা দেখা দেবে। বার্ক আমাদের চাহিদা অনুযায়ী দাম সমন্বয় করলেও গ্যাসে সাবসিডি দিতে হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, এ পর্যন্ত ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে। আরও ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি যোগ হবে। গত বছর আগস্ট থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করেছি আমরা। গ্যাসের দাম অনেক বেশি। আমরা এখন ভর্তুতি দিই। গ্যাসের যে দাম, এর থেকে অনেক কম দামে গ্রাহককে সরবরাহ করা হয়। যদি দাম সমন্বয় না করা হয়, তাহলে চলতি অর্থবছরে ৫-৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। আগামী অর্থবছর ৭-৮ হাজার কোটি টাকা বাড়তি লাগতে পারে। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হলেও কিছু ভর্তুকি দিতেই হবে। এ ক্ষেত্রে আগের অর্থবছরে যে পরিমাণ ভতুর্কি দেয়া হয়েছিল, তা দিলেই হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, বাসাবাড়ি ও আবাসিক ক্ষেত্রে গ্যাস ব্যবহারে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এটা বরাবরই বলছি। আমরা একটা বড় প্রকল্প নিচ্ছি ঢাকা শহরসহ সব জায়গায় পুরান গ্যাসলাইন উঠিয়ে নতুন লাইন করব। সেখানে প্রিপেইড মিটার বসানো হবে। দুই লাখ গ্যাসের মিটার সংযোগ গেছে। আমরা আবেদন করেছি জাইকাকে সহযোগিতা করার জন্য। প্রিপেইড গ্যাস মিটার বাসাবাড়িতে শতভাগ দেয়া যায় কিনা, সেটির ব্যবস্থা আমরা নিতে যাচ্ছি। কবেনাগাদ এটা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বলা মুশকিল। তবে আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব করার জন্য।

বাজেট প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৯-৩০ হাজার কোটির টাকার বাজেট বরাদ্দ হতে পারে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ২৬ হাজার কোটি এবং জ্বালানিতে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, চলতি বছর আরও আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ঈদের ছুটিতে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়-বৃষ্টির কারণে সব জায়গায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে না পারলেও গ্রাহকদের ধৈর্য ও বিশ্বাসের কারণে বর্তমান সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া যাবে।

সোমবার, ১০ জুন ২০১৯ , ২৭ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৬ শাওয়াল ১৪৪০

আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আভাস

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আভাস দিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এছাড়া গ্যাসের সব মিটার প্রিপেইড করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে ঈদ-পরবর্তী পুনর্মিলনী ও বিদ্যুৎ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব বিষয়ে ই্িঙ্গত করেন।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্যাসের দামের বিষয়টি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে সাবমিট করেছি। এখন আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

সংবাদ সম্মেলনে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মো. হোসেইন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের কুশল বিনিময় করেন এবং সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের দামটা সমন্বয় করা দরকার। বার্ককে (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি) আমরা গ্যাসের দামের বিষয়টি সাবমিট করেছি। এখন সম্পূর্ণ বার্কের ওপর নির্ভর করছে, তারা গ্যাসের দাম সমন্বয় করবেন কিনা। আমরা অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম আমরা সমন্বয় করতে চাচ্ছিলাম এ জন্য যে, গ্যাস আমরা আমদানি করছিলাম এতদিন ধরে। এখানে গ্যাসে আমরা ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় করে ফেলেছি। এখন সামনে আরও ১৪ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এ টাকাটা আসবে কোথা থেকে? গ্রাহকের কাছ থেকে তো আগের দামে ওই টাকায় আসছে না। তাই যদি সমন্বয় না করেন, তাহলে সমস্যা দেখা দেবে। বার্ক আমাদের চাহিদা অনুযায়ী দাম সমন্বয় করলেও গ্যাসে সাবসিডি দিতে হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, এ পর্যন্ত ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে। আরও ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি যোগ হবে। গত বছর আগস্ট থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করেছি আমরা। গ্যাসের দাম অনেক বেশি। আমরা এখন ভর্তুতি দিই। গ্যাসের যে দাম, এর থেকে অনেক কম দামে গ্রাহককে সরবরাহ করা হয়। যদি দাম সমন্বয় না করা হয়, তাহলে চলতি অর্থবছরে ৫-৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। আগামী অর্থবছর ৭-৮ হাজার কোটি টাকা বাড়তি লাগতে পারে। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হলেও কিছু ভর্তুকি দিতেই হবে। এ ক্ষেত্রে আগের অর্থবছরে যে পরিমাণ ভতুর্কি দেয়া হয়েছিল, তা দিলেই হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, বাসাবাড়ি ও আবাসিক ক্ষেত্রে গ্যাস ব্যবহারে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এটা বরাবরই বলছি। আমরা একটা বড় প্রকল্প নিচ্ছি ঢাকা শহরসহ সব জায়গায় পুরান গ্যাসলাইন উঠিয়ে নতুন লাইন করব। সেখানে প্রিপেইড মিটার বসানো হবে। দুই লাখ গ্যাসের মিটার সংযোগ গেছে। আমরা আবেদন করেছি জাইকাকে সহযোগিতা করার জন্য। প্রিপেইড গ্যাস মিটার বাসাবাড়িতে শতভাগ দেয়া যায় কিনা, সেটির ব্যবস্থা আমরা নিতে যাচ্ছি। কবেনাগাদ এটা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বলা মুশকিল। তবে আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব করার জন্য।

বাজেট প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৯-৩০ হাজার কোটির টাকার বাজেট বরাদ্দ হতে পারে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ২৬ হাজার কোটি এবং জ্বালানিতে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, চলতি বছর আরও আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ঈদের ছুটিতে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়-বৃষ্টির কারণে সব জায়গায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে না পারলেও গ্রাহকদের ধৈর্য ও বিশ্বাসের কারণে বর্তমান সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া যাবে।