অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের রেকর্ড সংগ্রহ

অস্ট্রেলিয়াকে ৩৫৩ রানের চ্যালেঞ্জ দিল ভারতের টপঅর্ডার

‘হাই স্কোরিং’ টুর্নামেন্ট হওয়ার পূর্বাভাস নিয়েই শুরু হয়েছিল চলতি আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। গোটা দুয়েক ম্যাচ শতরানের কোটায় শেষ হতেই ‘গেল গেল’ যে রব উঠেছিল তা কবে হারিয়ে গেছে তার হিসাবই কেউ এখন আর রাখে না। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে গতকাল অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বের দুই মোড়ল অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের লড়াইয়ে টিম ইন্ডিয়া পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩৫২ রান। ফলে রেকর্ড গড়ে জয়ের চ্যালেঞ্জ পায় অজিরা। বিশ্বকাপে এর আগে সর্বোচ্চ ৩২৮ রান তাড়া করে আয়ারল্যান্ডের পাওয়া জয়টাই সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।

ওভালের রান বন্যার পিচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া ভারতীয় দলের বিরূদ্ধে একেবারেই নিস্প্রভ ছিলেন অজি বোলাররা। শিখর ধাওয়ানের ক্যারিয়ারের ষোড়শ ওডিআই সেঞ্চুরি, অধিনায়ক বিরাট কোহলির হাফ সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি এবং রোহিত শর্মার অর্ধশত রানের ইনিংসে ভর করে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৩৫৩ রানের জয়ের টার্গেট দেয় ভারত।

দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেও রোহিত শর্মা দুই রানে জীবন পেয়েছিলেন একবার। শুরুতে কিছুটা ধীরলয়ে এগোচ্ছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। প্রথম বাউন্ডারি পেতে তারা পঞ্চম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

এরপর অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের ওপর আক্রমণে গিয়ে ঝড়োগতিতে রান তুলতে থাকেন ধাওয়ান। একপাশ আগলে রেখে কিছুটা শান্ত থাকেন ব্যক্তিগত দুই রানে জীবন পাওয়া রোহিত। ধীরেসুস্থে খেলতে থাকেন রোহিত। অজি পেসারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৯ ওভারেই শতরানের পার্টনারশিপ গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। শতরানের জুটি হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ক্যারিয়ারের ৪৭তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিতকে ফিরতে হয় ইনিংসের ২৩তম ওভারে। নাথান কোল্টার নাইলের বল উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারের গ্লাভসে জমা দিয়ে দেয়ার আগে ৭০ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৭ রান করেন ভারতীয় ওপেনার।

ধাওয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে অধিনায়ক কোহলি শুরু থেকেই হাত খোলেন। ইনিংসের ৩১তম ওভারেই দলের রান দুইশ’র কোটা ছাড়ায়।

ততক্ষণে ৯৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় ধাওয়ানের। কোহলির সঙ্গে ৯৩ রানের জুটি গড়ে মিচেল স্টার্কের বল নাথান লায়নের হাতে জমা দিয়ে ধাওয়ান ফিরলে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে অজিরা। ধাওয়ানের ১০৯ বলে খেলা ১১৭ রানের ইনিংসে ছিলো ১৬টি বাউন্ডারির মার।

২৩৬ রানে ভারতের ইনিংসে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটার সময়টাতে খেলা চলছিল ৩৯তম ওভারের। সøগ ওভারে ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ের জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট ক্রিজে পাঠায় হার্দিক পান্ডিয়াকে। দুজনের জুটিতে রানের চাকা সচল হয়। ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি। এটি তার ক্যারিয়ারের ৫০তম অর্ধশতক।

দুজনের ৮১ রানের জুটিতে ৪৬ ওভারেই তিনশ’র কোটা পেরিয়ে যায় ভারত। ২৭ বলে চার বাউন্ডারি ও তিন ছক্কায় ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন পান্ডিয়া।

কোহলির সঙ্গে যোগ দেন সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ১৪ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় বলের প্রায় দ্বিগুণ ২৭ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন ধোনি। কোহলি ৭৭ বলে চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ইনিংস শেষ হওয়ার আগের বলে ৮২ রানের স্টয়নিসের শিকার হন। আর নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান করে ভারত।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি উইকেটের পতন ঘটান নেন মার্কাস স্টয়নিস, একটি করে উইকেট যায় কামিন্স, স্টার্ক ও কোল্টার নাইলের ঝুলিতে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে আগের সর্বোচ্চ ছিল গত আসরে শ্রীলঙ্কার ৩১২। ভারতের আগের সেরা ছিল ১৯৮৭ আসরে ৬ উইকেটে ২৮৯।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩৫২/৫ (রোহিত ৫৭, ধাওয়ান ১১৭, কোহলি ৮২, পান্ডিয়া ৪৮, ধোনি ২৭, রাহুল ১১*, কেদার ০*; কামিন্স ১০-০-৫৫-১, স্টার্ক ১০-০-৭৪-১, কোল্টার-নাইল ১০-১-৬৩-১, স্টয়নিস ৭-০-৬২-২)।

সোমবার, ১০ জুন ২০১৯ , ২৭ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৬ শাওয়াল ১৪৪০

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের রেকর্ড সংগ্রহ

অস্ট্রেলিয়াকে ৩৫৩ রানের চ্যালেঞ্জ দিল ভারতের টপঅর্ডার

বিশেষ প্রতিনিধি

image

সেঞ্চুরির পর শিখর ধাওয়ানের উল্লাস

‘হাই স্কোরিং’ টুর্নামেন্ট হওয়ার পূর্বাভাস নিয়েই শুরু হয়েছিল চলতি আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। গোটা দুয়েক ম্যাচ শতরানের কোটায় শেষ হতেই ‘গেল গেল’ যে রব উঠেছিল তা কবে হারিয়ে গেছে তার হিসাবই কেউ এখন আর রাখে না। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে গতকাল অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বের দুই মোড়ল অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের লড়াইয়ে টিম ইন্ডিয়া পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩৫২ রান। ফলে রেকর্ড গড়ে জয়ের চ্যালেঞ্জ পায় অজিরা। বিশ্বকাপে এর আগে সর্বোচ্চ ৩২৮ রান তাড়া করে আয়ারল্যান্ডের পাওয়া জয়টাই সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।

ওভালের রান বন্যার পিচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া ভারতীয় দলের বিরূদ্ধে একেবারেই নিস্প্রভ ছিলেন অজি বোলাররা। শিখর ধাওয়ানের ক্যারিয়ারের ষোড়শ ওডিআই সেঞ্চুরি, অধিনায়ক বিরাট কোহলির হাফ সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি এবং রোহিত শর্মার অর্ধশত রানের ইনিংসে ভর করে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৩৫৩ রানের জয়ের টার্গেট দেয় ভারত।

দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেও রোহিত শর্মা দুই রানে জীবন পেয়েছিলেন একবার। শুরুতে কিছুটা ধীরলয়ে এগোচ্ছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। প্রথম বাউন্ডারি পেতে তারা পঞ্চম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

এরপর অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের ওপর আক্রমণে গিয়ে ঝড়োগতিতে রান তুলতে থাকেন ধাওয়ান। একপাশ আগলে রেখে কিছুটা শান্ত থাকেন ব্যক্তিগত দুই রানে জীবন পাওয়া রোহিত। ধীরেসুস্থে খেলতে থাকেন রোহিত। অজি পেসারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৯ ওভারেই শতরানের পার্টনারশিপ গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। শতরানের জুটি হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ক্যারিয়ারের ৪৭তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিতকে ফিরতে হয় ইনিংসের ২৩তম ওভারে। নাথান কোল্টার নাইলের বল উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারের গ্লাভসে জমা দিয়ে দেয়ার আগে ৭০ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৭ রান করেন ভারতীয় ওপেনার।

ধাওয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে অধিনায়ক কোহলি শুরু থেকেই হাত খোলেন। ইনিংসের ৩১তম ওভারেই দলের রান দুইশ’র কোটা ছাড়ায়।

ততক্ষণে ৯৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় ধাওয়ানের। কোহলির সঙ্গে ৯৩ রানের জুটি গড়ে মিচেল স্টার্কের বল নাথান লায়নের হাতে জমা দিয়ে ধাওয়ান ফিরলে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে অজিরা। ধাওয়ানের ১০৯ বলে খেলা ১১৭ রানের ইনিংসে ছিলো ১৬টি বাউন্ডারির মার।

২৩৬ রানে ভারতের ইনিংসে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটার সময়টাতে খেলা চলছিল ৩৯তম ওভারের। সøগ ওভারে ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ের জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট ক্রিজে পাঠায় হার্দিক পান্ডিয়াকে। দুজনের জুটিতে রানের চাকা সচল হয়। ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি। এটি তার ক্যারিয়ারের ৫০তম অর্ধশতক।

দুজনের ৮১ রানের জুটিতে ৪৬ ওভারেই তিনশ’র কোটা পেরিয়ে যায় ভারত। ২৭ বলে চার বাউন্ডারি ও তিন ছক্কায় ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন পান্ডিয়া।

কোহলির সঙ্গে যোগ দেন সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ১৪ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় বলের প্রায় দ্বিগুণ ২৭ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন ধোনি। কোহলি ৭৭ বলে চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ইনিংস শেষ হওয়ার আগের বলে ৮২ রানের স্টয়নিসের শিকার হন। আর নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান করে ভারত।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি উইকেটের পতন ঘটান নেন মার্কাস স্টয়নিস, একটি করে উইকেট যায় কামিন্স, স্টার্ক ও কোল্টার নাইলের ঝুলিতে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে আগের সর্বোচ্চ ছিল গত আসরে শ্রীলঙ্কার ৩১২। ভারতের আগের সেরা ছিল ১৯৮৭ আসরে ৬ উইকেটে ২৮৯।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩৫২/৫ (রোহিত ৫৭, ধাওয়ান ১১৭, কোহলি ৮২, পান্ডিয়া ৪৮, ধোনি ২৭, রাহুল ১১*, কেদার ০*; কামিন্স ১০-০-৫৫-১, স্টার্ক ১০-০-৭৪-১, কোল্টার-নাইল ১০-১-৬৩-১, স্টয়নিস ৭-০-৬২-২)।