অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণ : শুনানি ২০ জুন

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে ৭ জন জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই আসামিদের আদালতে হাজির করে অভিযোগপত্র দাখিল করলে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ তা গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। চার্জশিটে নাম না থাকায় মামলায় গ্রেপ্তার অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাদীর আপত্তি না থাকায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেন। ২০ জুন অভিযোগ গঠন হলে সাক্ষ্য পর্ব ও মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্পর্শকাতর এ মামলার অভিযোগপত্র ও প্রায় ৮০৮ পৃষ্ঠার সামগ্রিক নথি গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

আদালত সূত্রের তথ্য মতে, সেদিন অভিযোগপত্রসহ কেস ডকেট (সার্বিক নথি) জমা দিলেও বিচারক অভিযোগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। এরপর গত ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আসামিদের হাজির করা হলেও বিচারক সেদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি না করে ১০ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) প্রিয়রঞ্জন দত্ত জানান, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামীম, ইফতেখার উদ্দিন, নূর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু সাংবাদিকদের বলেন, এ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের নাম চার্জশিটে না থাকায় মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

অভিযুক্ত ১৬ জন হলো সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নূর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে আমরা সন্তুষ্ট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলাটি তদারক করছেন। আশা করি, শিগগির ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেফতার হবেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে জেলে থাকা অবস্থায় তার নির্দেশে ৬ এপ্রিল নুসরাতের পরীক্ষার আগমুহূর্তে তাকে ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

আরও খবর
কর্মসংস্থানমুখী প্রবৃদ্ধিসহ অগ্রাধিকার পাচ্ছে পাঁচ বিষয়
বাজেট অধিবেশন আজ শুরু
বৃষ্টির শঙ্কা নিয়ে ব্রিস্টলে আজ বাংলা-লঙ্কা মুখোমুখি
ব্রিস্টলে সূর্যের হাসিতে টাইগারদের অনুশীলন
ব্রিস্টলই কি স্বরূপে ফেরাবে মাশরাফিকে!
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জারদারি গ্রেফতার
রাজধানীর ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ
দুদক পরিচালক বাছির সাময়িক বরখাস্ত
সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪২ জন নিহত
এবার সড়কে দুর্ঘটনা কম মৃত্যু বেশি
১৮ মিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহ আরব আমিরাতের
একদিনে সড়কে ঝরল আরও ৭ প্রাণ
বন্দুকযুদ্ধে নিহত সাইফুল বিতর্কিত বদির ভাইদের কথাও বলে গেছে
প্রথম পর্যায়ে মনোনীত ১৩ লাখ ১৮,৮৬৬ শিক্ষার্থী

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০১৯ , ২৮ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৭ শাওয়াল ১৪৪০

নুসরাত হত্যা

অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণ : শুনানি ২০ জুন

প্রতিনিধি, ফেনী

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে ৭ জন জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই আসামিদের আদালতে হাজির করে অভিযোগপত্র দাখিল করলে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ তা গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। চার্জশিটে নাম না থাকায় মামলায় গ্রেপ্তার অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাদীর আপত্তি না থাকায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেন। ২০ জুন অভিযোগ গঠন হলে সাক্ষ্য পর্ব ও মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্পর্শকাতর এ মামলার অভিযোগপত্র ও প্রায় ৮০৮ পৃষ্ঠার সামগ্রিক নথি গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

আদালত সূত্রের তথ্য মতে, সেদিন অভিযোগপত্রসহ কেস ডকেট (সার্বিক নথি) জমা দিলেও বিচারক অভিযোগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। এরপর গত ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আসামিদের হাজির করা হলেও বিচারক সেদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি না করে ১০ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) প্রিয়রঞ্জন দত্ত জানান, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামীম, ইফতেখার উদ্দিন, নূর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু সাংবাদিকদের বলেন, এ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের নাম চার্জশিটে না থাকায় মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

অভিযুক্ত ১৬ জন হলো সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নূর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে আমরা সন্তুষ্ট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলাটি তদারক করছেন। আশা করি, শিগগির ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেফতার হবেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে জেলে থাকা অবস্থায় তার নির্দেশে ৬ এপ্রিল নুসরাতের পরীক্ষার আগমুহূর্তে তাকে ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।