মায়ানমার মিথ্যাচার করছে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মায়ানমার ‘মিথ্যাচার’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিবিদদের ব্রিফিং শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মায়ানমার বলেছে, বাংলাদেশের কারণে নাকি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দেরি হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ এ বিষয়ে এক পায়ে খাড়া। গত মে মাসের শেষে জাপানে অনুষ্ঠিত ‘ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনের একটি সেশনে মায়ানমারের এক মন্ত্রী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অসহযোগিতায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটেই বুধবার বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে সর্বশেষ পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মায়ানমার এ রকম ‘ডাহা মিথ্যা’ কথা বলে। প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে তাদের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু ৮০০ গ্রামের মধ্যে মাত্র দুটির পরিস্থিতি তারা ভালো দেখিয়ে বলছে। সেখানে কোন সমস্যা নেই। তারা ‘কথা রাখেনি’। মায়ানমার বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে ‘মিস ইনফরমেশন’ ছড়ায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা এর শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।

বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে মায়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। আমরা বলেছি বাংলাদেশের পাশে আছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, কানাডা, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

মায়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে গত কয়েক দশকে এসেছে আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি করার পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় ওই পরিকল্পনা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে যায়।

বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০১৯ , ৩০ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৯ শাওয়াল ১৪৪০

মায়ানমার মিথ্যাচার করছে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মায়ানমার ‘মিথ্যাচার’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিবিদদের ব্রিফিং শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মায়ানমার বলেছে, বাংলাদেশের কারণে নাকি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দেরি হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ এ বিষয়ে এক পায়ে খাড়া। গত মে মাসের শেষে জাপানে অনুষ্ঠিত ‘ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনের একটি সেশনে মায়ানমারের এক মন্ত্রী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অসহযোগিতায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটেই বুধবার বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে সর্বশেষ পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মায়ানমার এ রকম ‘ডাহা মিথ্যা’ কথা বলে। প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে তাদের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু ৮০০ গ্রামের মধ্যে মাত্র দুটির পরিস্থিতি তারা ভালো দেখিয়ে বলছে। সেখানে কোন সমস্যা নেই। তারা ‘কথা রাখেনি’। মায়ানমার বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে ‘মিস ইনফরমেশন’ ছড়ায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা এর শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।

বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে মায়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। আমরা বলেছি বাংলাদেশের পাশে আছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, কানাডা, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

মায়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে গত কয়েক দশকে এসেছে আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি করার পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় ওই পরিকল্পনা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে যায়।