ডিআইজি মিজান কি দুদকের চেয়ে শক্তিশালী

আপিল বিভাগ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালককে ঘুষ দেয়ার দায়ে পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ডিআইজি মিজানকে এখনও গ্রেফতার করছেন না কেন? সে কি দুদকের চেয়েও বেশি শক্তিশালী?’

হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের শুনানিকালে গতকাল (১৬ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় আদালতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

জেসমিন ইসলামের জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের শুনানিকালে আপিল বিভাগ খুরশীদ আলম খানের কাছে উপরোক্ত প্রশ্ন করেন। জবাবে দুদক আইনজীবী আপিল বিভাগকে জানান, ওই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরে আদালত বলেন, দুদক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার বিষয়টি অ্যালার্মিং।

প্রসঙ্গত, গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে। এরপর তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত চলাকালেই প্রাপ্ত তথ্য অভিযুক্তের কাছে চালান করে দিয়ে আপস-রফার মাধ্যমে দুই দফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন তিনি।

ডিআইজি মিজান নিজেই এমন অভিযোগ করেছেন দুদকের পরিচালকের বিরুদ্ধে। দুদকের কাছে ডিআইজি মিজানের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে টাকা নিয়েও শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন জমা দেন বাছির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধ লেনদেনের এই ঘটনা দুদকের কাছে ফাঁস করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান।

তার অভিযোগকে আমলে নিয়ে এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দুর্নীতি দমন সংস্থাটি। যদিও দুদক পরিচালক এনামুল বাছির অভিযোগটি অস্বীকার করেন। এরপর গত ৯ জুন বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯ , ৩ আষাঢ় ১৪২৫, ১৩ শাওয়াল ১৪৪০

ডিআইজি মিজান কি দুদকের চেয়ে শক্তিশালী

আপিল বিভাগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালককে ঘুষ দেয়ার দায়ে পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ডিআইজি মিজানকে এখনও গ্রেফতার করছেন না কেন? সে কি দুদকের চেয়েও বেশি শক্তিশালী?’

হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের শুনানিকালে গতকাল (১৬ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় আদালতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

জেসমিন ইসলামের জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের শুনানিকালে আপিল বিভাগ খুরশীদ আলম খানের কাছে উপরোক্ত প্রশ্ন করেন। জবাবে দুদক আইনজীবী আপিল বিভাগকে জানান, ওই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরে আদালত বলেন, দুদক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার বিষয়টি অ্যালার্মিং।

প্রসঙ্গত, গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে। এরপর তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত চলাকালেই প্রাপ্ত তথ্য অভিযুক্তের কাছে চালান করে দিয়ে আপস-রফার মাধ্যমে দুই দফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন তিনি।

ডিআইজি মিজান নিজেই এমন অভিযোগ করেছেন দুদকের পরিচালকের বিরুদ্ধে। দুদকের কাছে ডিআইজি মিজানের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে টাকা নিয়েও শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন জমা দেন বাছির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধ লেনদেনের এই ঘটনা দুদকের কাছে ফাঁস করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান।

তার অভিযোগকে আমলে নিয়ে এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দুর্নীতি দমন সংস্থাটি। যদিও দুদক পরিচালক এনামুল বাছির অভিযোগটি অস্বীকার করেন। এরপর গত ৯ জুন বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।