২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি

জাতিসংঘ প্রতিবেদন

পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৭০ কোটিতে উন্নীত হবে। পৃথিবীর ৯টি দেশে এই জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি বৃদ্ধি পাবে। এর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হিসেবে ২০২৭ সালে চীনকে ভারত ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। গতকাল জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক দফতরের জনসংখ্যা বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি শতকের শেষ দিকে বিশ্বের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। তা হবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি।

জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্ট ২০১৯ : হাইলাইটস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক জনমিতির বিস্তৃত নিদর্শন ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বর্তমান ৭৭০ কোটি জনসংখ্যার সঙ্গে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আরও ২০০ কোটি যোগ হবে।

নতুন অনুমান অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যার যে বৃদ্ধি হবে, এর অর্ধেকের বেশি হবে ৯ দেশেÑ ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ডেমক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইথিওপিয়া, তাঞ্জানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রে। চীনে ২০১৯ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৩ কোটি ১৪ লাখ বা প্রায় ২.২ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে বলা হচ্ছে। ফলে জনসংখ্যার দেশ হিসেবে ২০২৭ সালে চীনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। অন্যদিকে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের জনসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ দ্বিগুণ হবে (৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে)। বৈশ্বিক প্রজনন হারÑ যা ১৯৯০ সালে ছিল প্রতি নারীতে ৩.২, তা ২০১৯ সালে কমে ২.৫-এ দাঁড়িয়েছে। সেটি ২০৫০ সালে কমে ২.২ হবে।

পৃথিবীতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, প্রজননের হার হ্রাস ও জনসংখ্যা কমতে থাকা দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি। চলতি শতকের শেষ দিকে বিশ্বের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। তা হবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি। ১৯৯০ সালের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৬৪.২ বছর থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে ৭২.৬ বছর হয়েছে। তা ২০৫০ সালে আরও বেড়ে ৭৭.১ বছর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে ২৭ দেশ বা অঞ্চলে ১ শতাংশ বা এর বেশি জনসংখ্যা হ্রাস পেতে দেখা গেছে। ধারাবাহিকভাবে প্রজনন হার কমে যাওয়ার কারণে এ হ্রাসের সৃষ্টি হয়।

জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া রোধ ও এক প্রজন্মকে আরেক প্রজন্ম দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে প্রতি নারীতে প্রজনন হার থাকতে হয় ২.১। প্রতিবেদনে জানানো হয়, গরিব দেশগুলোর মানুষ বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় ৭ বছর কম বাঁচেন।

১৯৫০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিচালিত ১ হাজার ৬৯০টি জাতীয় আদমশুমারির ফল ব্যবহার করে এ নতুন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে এতে গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধন ব্যবস্থা ও ২ হাজার ৭০০ নমুনা জরিপের তথ্য ব্যবহৃত হয়েছে।

মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯ , ৪ আষাঢ় ১৪২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪০

২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি

জাতিসংঘ প্রতিবেদন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৭০ কোটিতে উন্নীত হবে। পৃথিবীর ৯টি দেশে এই জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি বৃদ্ধি পাবে। এর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হিসেবে ২০২৭ সালে চীনকে ভারত ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। গতকাল জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক দফতরের জনসংখ্যা বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি শতকের শেষ দিকে বিশ্বের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। তা হবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি।

জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্ট ২০১৯ : হাইলাইটস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক জনমিতির বিস্তৃত নিদর্শন ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বর্তমান ৭৭০ কোটি জনসংখ্যার সঙ্গে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আরও ২০০ কোটি যোগ হবে।

নতুন অনুমান অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যার যে বৃদ্ধি হবে, এর অর্ধেকের বেশি হবে ৯ দেশেÑ ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ডেমক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইথিওপিয়া, তাঞ্জানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রে। চীনে ২০১৯ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৩ কোটি ১৪ লাখ বা প্রায় ২.২ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে বলা হচ্ছে। ফলে জনসংখ্যার দেশ হিসেবে ২০২৭ সালে চীনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। অন্যদিকে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের জনসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ দ্বিগুণ হবে (৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে)। বৈশ্বিক প্রজনন হারÑ যা ১৯৯০ সালে ছিল প্রতি নারীতে ৩.২, তা ২০১৯ সালে কমে ২.৫-এ দাঁড়িয়েছে। সেটি ২০৫০ সালে কমে ২.২ হবে।

পৃথিবীতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, প্রজননের হার হ্রাস ও জনসংখ্যা কমতে থাকা দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি। চলতি শতকের শেষ দিকে বিশ্বের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। তা হবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি। ১৯৯০ সালের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৬৪.২ বছর থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে ৭২.৬ বছর হয়েছে। তা ২০৫০ সালে আরও বেড়ে ৭৭.১ বছর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে ২৭ দেশ বা অঞ্চলে ১ শতাংশ বা এর বেশি জনসংখ্যা হ্রাস পেতে দেখা গেছে। ধারাবাহিকভাবে প্রজনন হার কমে যাওয়ার কারণে এ হ্রাসের সৃষ্টি হয়।

জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া রোধ ও এক প্রজন্মকে আরেক প্রজন্ম দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে প্রতি নারীতে প্রজনন হার থাকতে হয় ২.১। প্রতিবেদনে জানানো হয়, গরিব দেশগুলোর মানুষ বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় ৭ বছর কম বাঁচেন।

১৯৫০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিচালিত ১ হাজার ৬৯০টি জাতীয় আদমশুমারির ফল ব্যবহার করে এ নতুন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে এতে গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধন ব্যবস্থা ও ২ হাজার ৭০০ নমুনা জরিপের তথ্য ব্যবহৃত হয়েছে।