সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে টিআইবির উদ্বেগ

আজারবাইজনের বাকুতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য’-এর তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পূর্বেই অনতিবিলম্বে সুন্দরবন ও এর আশপাশের সংরক্ষিত অঞ্চলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ চলমান সব প্রকল্প স্থগিত করে ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও সময়াবদ্ধ অনন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব প্রমাণ করে, ‘রামপালসহ অন্যান্য প্রকল্পের কারণে সুন্দরবন ঝুঁকিতে আছে’- আমাদের দীর্ঘদিনের এমন আশঙ্কা ও উদ্বেগ অমূলক ছিল না। আমরা মনে করি, কোন ধরনের কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ছাড়াই সুন্দরবনের সন্নিকটে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সরকারি উদ্যোগে বৈশ্ব্যিক ও স্থানীয় উদ্বেগ ও পরামর্শ উপেক্ষা করায় আজ এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আসন্ন বাকু মিটিংয়ের আগেই অনতিবিলম্বে রামপাল, তালতলি ও কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে এবং ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য ১১ এর কথা তুলে ধরে ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষা ও সুরক্ষায় সরকারি প্রচেষ্টা শক্তিশালী করার কথা ছিল। কিন্তু কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই সুন্দরবনের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য ঝুঁকিতে রেখে রামপালসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সরকারের অঙ্গীকারের পরিপন্থী। ইউনেস্কোর এ প্রস্তাবের পর আর নির্বিকার থাকার সুযোগ নেই। অবিলম্বে সুন্দরবন সুরক্ষায় সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইউনেস্কোর সুপারিশ আমলে নিয়ে অবিলম্বে তেল ছড়িয়ে পড়া ও রাসায়নিক দূর্ঘটনা নিরসনে জাতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ দিয়ে তা কার্যকর করার দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব বাতিলে স্বল্পমেয়াদী আশু পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি ২০২০ সালে বিশ^ ঐতিহ্য সংস্থার ৪৪তম অধিবেশনের আগেই তাদের প্রস্তাবিত প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় সুন্দরবনের মতো বৈশ্ব্যিক সম্পদ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।

মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯ , ৪ আষাঢ় ১৪২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪০

সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে টিআইবির উদ্বেগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

আজারবাইজনের বাকুতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য’-এর তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পূর্বেই অনতিবিলম্বে সুন্দরবন ও এর আশপাশের সংরক্ষিত অঞ্চলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ চলমান সব প্রকল্প স্থগিত করে ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও সময়াবদ্ধ অনন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব প্রমাণ করে, ‘রামপালসহ অন্যান্য প্রকল্পের কারণে সুন্দরবন ঝুঁকিতে আছে’- আমাদের দীর্ঘদিনের এমন আশঙ্কা ও উদ্বেগ অমূলক ছিল না। আমরা মনে করি, কোন ধরনের কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ছাড়াই সুন্দরবনের সন্নিকটে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সরকারি উদ্যোগে বৈশ্ব্যিক ও স্থানীয় উদ্বেগ ও পরামর্শ উপেক্ষা করায় আজ এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আসন্ন বাকু মিটিংয়ের আগেই অনতিবিলম্বে রামপাল, তালতলি ও কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে এবং ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য ১১ এর কথা তুলে ধরে ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষা ও সুরক্ষায় সরকারি প্রচেষ্টা শক্তিশালী করার কথা ছিল। কিন্তু কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই সুন্দরবনের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য ঝুঁকিতে রেখে রামপালসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সরকারের অঙ্গীকারের পরিপন্থী। ইউনেস্কোর এ প্রস্তাবের পর আর নির্বিকার থাকার সুযোগ নেই। অবিলম্বে সুন্দরবন সুরক্ষায় সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইউনেস্কোর সুপারিশ আমলে নিয়ে অবিলম্বে তেল ছড়িয়ে পড়া ও রাসায়নিক দূর্ঘটনা নিরসনে জাতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ দিয়ে তা কার্যকর করার দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব বাতিলে স্বল্পমেয়াদী আশু পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি ২০২০ সালে বিশ^ ঐতিহ্য সংস্থার ৪৪তম অধিবেশনের আগেই তাদের প্রস্তাবিত প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় সুন্দরবনের মতো বৈশ্ব্যিক সম্পদ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।