মোবাইলের মাধ্যমে চলছে মাদক ব্যবসা

বন্দীদের কাছে পৌঁছে যায় ইয়াবা-গাঁজা

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে এক শ্রেণীর অপরাধীরা। কারাবিধি লঙ্ঘন করে কারাগারের ভেতরে বন্দিদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই চলছে তাদের মাদক ব্যবসা। বিশেষ করে কারারক্ষীর মাধ্যমে কারাগারের ভেতরে বন্দীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট-গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক। কারাগারে নিয়মিত মাদকসেবন তো চলছেই আবার সেখানে বসে বন্দীদের কেউ কেউ মোবাইল ফোনে আলাপ করছে। ১৫ জুন সন্ধ্যায় কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে নগরীর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কারারক্ষী সাইফুলসহ তাদের গতকাল রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এদিকে জেলের ভেতরে মাদকের ব্যবসা ও সেবন এবং বন্দীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. নাশির আহমেদ বলেন, কারারক্ষী সাইফুলকে গ্রেফতারের পর মাদকের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, গ্রেফতার সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাওয়া গেছে, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী নুর আলম ওরফে হামকা নুর আলম কারাগারে বসেই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। কারাগারের ভেতরে তার কাছে ইয়াবা ট্যাবলেট পৌঁছে দেয় কারারক্ষী সাইফুল। একইভাবে নুর আলমের নির্দেশে কারাগারের বাইরেও চলছে মাদক ব্যবসা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশ এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী বাহিনী ‘হামকা গ্রুপ’-এর প্রধান ছিল নুর আলম। তার বিরুদ্ধে ছয়টি অস্ত্র মামলাসহ ১০টি মামলা আছে। ২০১৭ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানায়। আর তার মাদক ব্যবসার সহযোগী মাসুমের বিরুদ্ধে ১২টি মাদকসহ মোট ১৩টি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ওসি মহসীন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানিয়েছে, হামকা নুর আলমের নির্দেশে সে আরও কয়েকবার মাসুমের কাছ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে কারাগারে নিয়ে গেছে। সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ই কারাগারের ভেতর থেকে হামকা নুর আলম তার মোবাইলে ফোন করে। সে জানতে চায়, জালালের কাছ থেকে গাঁজাগুলো সংগ্রহ করেছে কি না। কারাগারের ভেতরে নুর আলমের কাছে ইয়াবা ট্যাবলেট-গাঁজা পৌঁছে দেয়ার পর সেগুলো সেখানে বিক্রি হয় এবং নিয়মিত মাদকের আসর বসার তথ্যও সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, মাসুমও আগে কারাগারে ছিল। তখন নুর আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কারাগার থেকে বের হওযার পরও মাসুমের সঙ্গে নুর আলমের যোগাযোগ আছে। নুর আলমের নির্দেশেই সে ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসা করে। নুর আলম, মাসুম, জালাল, আলোরা একই সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা কারাগারের ভেতর ও বাইরে ইয়াবা ট্যাবলেট আনা-নেয়া আর বিক্রিতে ব্যবহার করে কারারক্ষী সাইফুলকে। এই মাদক কারবারে আরও কোনো কারারক্ষী জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আরও খবর
পাঁচ প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি
ব্যর্থতার দায় স্বীকার জাতিসংঘের
ড্রেসিং রুমে কেউই মনে করেননি কাজটা কঠিন হবে : সাকিব
সাকিব-লিটনের অবিস্মরণীয় জুটিতে বাংলাদেশের স্বপ্ন সফল হতে পারে
আবার ইংল্যান্ডের রানের পাহাড়
মানহানির দুই মামলায় খালেদার জামিন
সর্বজনীন পেনশন চালু করতে চায় সরকার
ফলের রাসায়নিক পরীক্ষার যন্ত্র নেই
ডিআইজি মিজানের শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংসে এক মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সমাপ্ত ২০২২ সালে
আসামি রুহুলের মুক্তি চেয়ে আ’লীগের নামে পোস্টার
বিলুপ্তির পথে শিল্পী পাখি বাবুইয়ের গড়া নীড়

বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯ , ৫ আষাঢ় ১৪২৫, ১৫ শাওয়াল ১৪৪০

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে

মোবাইলের মাধ্যমে চলছে মাদক ব্যবসা

বন্দীদের কাছে পৌঁছে যায় ইয়াবা-গাঁজা

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে এক শ্রেণীর অপরাধীরা। কারাবিধি লঙ্ঘন করে কারাগারের ভেতরে বন্দিদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই চলছে তাদের মাদক ব্যবসা। বিশেষ করে কারারক্ষীর মাধ্যমে কারাগারের ভেতরে বন্দীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট-গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক। কারাগারে নিয়মিত মাদকসেবন তো চলছেই আবার সেখানে বসে বন্দীদের কেউ কেউ মোবাইল ফোনে আলাপ করছে। ১৫ জুন সন্ধ্যায় কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে নগরীর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কারারক্ষী সাইফুলসহ তাদের গতকাল রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এদিকে জেলের ভেতরে মাদকের ব্যবসা ও সেবন এবং বন্দীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. নাশির আহমেদ বলেন, কারারক্ষী সাইফুলকে গ্রেফতারের পর মাদকের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, গ্রেফতার সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাওয়া গেছে, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী নুর আলম ওরফে হামকা নুর আলম কারাগারে বসেই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। কারাগারের ভেতরে তার কাছে ইয়াবা ট্যাবলেট পৌঁছে দেয় কারারক্ষী সাইফুল। একইভাবে নুর আলমের নির্দেশে কারাগারের বাইরেও চলছে মাদক ব্যবসা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশ এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী বাহিনী ‘হামকা গ্রুপ’-এর প্রধান ছিল নুর আলম। তার বিরুদ্ধে ছয়টি অস্ত্র মামলাসহ ১০টি মামলা আছে। ২০১৭ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানায়। আর তার মাদক ব্যবসার সহযোগী মাসুমের বিরুদ্ধে ১২টি মাদকসহ মোট ১৩টি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ওসি মহসীন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানিয়েছে, হামকা নুর আলমের নির্দেশে সে আরও কয়েকবার মাসুমের কাছ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে কারাগারে নিয়ে গেছে। সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ই কারাগারের ভেতর থেকে হামকা নুর আলম তার মোবাইলে ফোন করে। সে জানতে চায়, জালালের কাছ থেকে গাঁজাগুলো সংগ্রহ করেছে কি না। কারাগারের ভেতরে নুর আলমের কাছে ইয়াবা ট্যাবলেট-গাঁজা পৌঁছে দেয়ার পর সেগুলো সেখানে বিক্রি হয় এবং নিয়মিত মাদকের আসর বসার তথ্যও সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, মাসুমও আগে কারাগারে ছিল। তখন নুর আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কারাগার থেকে বের হওযার পরও মাসুমের সঙ্গে নুর আলমের যোগাযোগ আছে। নুর আলমের নির্দেশেই সে ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসা করে। নুর আলম, মাসুম, জালাল, আলোরা একই সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা কারাগারের ভেতর ও বাইরে ইয়াবা ট্যাবলেট আনা-নেয়া আর বিক্রিতে ব্যবহার করে কারারক্ষী সাইফুলকে। এই মাদক কারবারে আরও কোনো কারারক্ষী জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।