জাতিসংঘ মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি

মায়ানমারে রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানে সৃষ্ট সংকট নিরসনে পদ্ধতিগত ব্যর্থতার দায়ে জাতিসংঘ মহাসচিব ও তার ঊর্ধ্বতন এক সহকারীর পদত্যাগ দাবি করেছে রোহিঙ্গা এক্টিভিস্টদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ (এফআরসি)। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার নীতি-নৈতিকতার এরকম মারাত্মক লঙ্ঘনের পরও দেসালিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এফআরসি বলছে জাতিসংঘ মহাসচিবের যথাযথ ভূমিকার অভাবেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তাদের অভিযোগ ব্যর্থতার জন্য দেসালিনকে দায়ী করার পরিবর্তে তাকে ভারতের জাতিসংঘের প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে পুরস্কৃত করেছিলেন গুতেরেস।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মায়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ছিলেন দেসালিন। মায়ানমারে কর্মরত থাকার সময়ে তার বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে এফআরসি’র বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া জাতিসংঘের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন গোপন করেছিলেন দেসালিন।

মায়ানামারের নির্বাসিত ভিন্নমতালম্বী ও মানবাধিকারকর্মী মং জার্নি বলেছেন, জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর নৈতিকভাবে, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ও আইনগতভাবে জাতিসংঘের কোনও পদে গুতেরেস ও দেসালিনের থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন পরিচালকের আসনে বসে তারা বিদ্যমান নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে সংস্থাটিকে ভুল পথে নিয়ে গেছেন।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনো সেখানে থেকে গেছে। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মায়ানমারে জাতিসংঘের কর্মকান্ড খতিয়ে দেখতে চলতি বছর গুয়াতেমালার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গার্ড রোজেনথালকে নিয়োগ দেন মহাসচিব অ্যান্থনিও গুয়েতেরেস। প্রকাশের আগেই তার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

প্রতিবেদনে মায়ানমারে জাতিসংঘের কর্মকান্ড নিয়ে রোজেনথাল বলেছেন, এটা (মায়ানমারে সংকট নিরসন) সমষ্টিগত দায়িত্ব ছিলো। একে সত্যিকার অর্থে জাতিসংঘের পদ্ধতিগত ব্যর্থতা বলা যেতে পারে। তিনি বলেন, নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মায়ানমারে বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন নাকি কূটনৈতিক তৎপড়তা চালাবেন তা নিয়েই একমত হতে পারছিলেন না। আর তৃণমূল থেকে জাতিসংঘের সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিবেদন।

এই প্রতিবেদন সামনে আসার পরই জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও মায়ানমারে সংস্থাটির সাবেক আবাসিক সমন্বয়ক রেনেটা লক দেসালিনকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন।

আরও খবর
বাস্তবায়ন হয়নি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা
মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদকে চিহ্নিত করবে সরকার
আজও সাকিবে ভর করে অজিদের হারাতে চায় টাইগাররা
বাংলাদেশের কাঁধে ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা
অজি পেস আক্রমণ নিয়ে আমরা চিন্তিত নই : সাকিব
দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২৪১
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকা হচ্ছে
ঢাকার সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে কমিটি
মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল
অবশেষে পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ল ডন আল-আমিন
আ’লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ সাব কমিটির সম্মেলন
বিশ্বে শরণার্থী ৭০ মিলিয়ন
পিডব্লিউসির বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা টিআইবির
সংরক্ষণাগার না থাকায় বিপাকে চাষিরা

বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০১৯ , ৫ আষাঢ় ১৪২৫, ১৫ শাওয়াল ১৪৪০

এফআরসির বিবৃতি

জাতিসংঘ মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মায়ানমারে রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানে সৃষ্ট সংকট নিরসনে পদ্ধতিগত ব্যর্থতার দায়ে জাতিসংঘ মহাসচিব ও তার ঊর্ধ্বতন এক সহকারীর পদত্যাগ দাবি করেছে রোহিঙ্গা এক্টিভিস্টদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ (এফআরসি)। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার নীতি-নৈতিকতার এরকম মারাত্মক লঙ্ঘনের পরও দেসালিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এফআরসি বলছে জাতিসংঘ মহাসচিবের যথাযথ ভূমিকার অভাবেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তাদের অভিযোগ ব্যর্থতার জন্য দেসালিনকে দায়ী করার পরিবর্তে তাকে ভারতের জাতিসংঘের প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে পুরস্কৃত করেছিলেন গুতেরেস।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মায়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ছিলেন দেসালিন। মায়ানমারে কর্মরত থাকার সময়ে তার বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে এফআরসি’র বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া জাতিসংঘের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন গোপন করেছিলেন দেসালিন।

মায়ানামারের নির্বাসিত ভিন্নমতালম্বী ও মানবাধিকারকর্মী মং জার্নি বলেছেন, জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর নৈতিকভাবে, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ও আইনগতভাবে জাতিসংঘের কোনও পদে গুতেরেস ও দেসালিনের থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন পরিচালকের আসনে বসে তারা বিদ্যমান নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে সংস্থাটিকে ভুল পথে নিয়ে গেছেন।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনো সেখানে থেকে গেছে। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মায়ানমারে জাতিসংঘের কর্মকান্ড খতিয়ে দেখতে চলতি বছর গুয়াতেমালার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গার্ড রোজেনথালকে নিয়োগ দেন মহাসচিব অ্যান্থনিও গুয়েতেরেস। প্রকাশের আগেই তার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

প্রতিবেদনে মায়ানমারে জাতিসংঘের কর্মকান্ড নিয়ে রোজেনথাল বলেছেন, এটা (মায়ানমারে সংকট নিরসন) সমষ্টিগত দায়িত্ব ছিলো। একে সত্যিকার অর্থে জাতিসংঘের পদ্ধতিগত ব্যর্থতা বলা যেতে পারে। তিনি বলেন, নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মায়ানমারে বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন নাকি কূটনৈতিক তৎপড়তা চালাবেন তা নিয়েই একমত হতে পারছিলেন না। আর তৃণমূল থেকে জাতিসংঘের সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিবেদন।

এই প্রতিবেদন সামনে আসার পরই জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও মায়ানমারে সংস্থাটির সাবেক আবাসিক সমন্বয়ক রেনেটা লক দেসালিনকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন।