দেশের ৭৫ ভাগ নৌপথ হারিয়ে গেছে

তীরের ১৫ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ : নৌ প্রতিমন্ত্রী

নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে ১৯৬০ সালের আগে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু কালক্রমে নৌপথ সংকুচিত হয়ে তা ৬ হাজার কিলোমিটারে নেমে আসে। অর্থাৎ প্রায় সাত দশকে ১৮ হাজার কিলোমিটার বা ৪ ভাগের ৩ ভাগ (৭৫ শতাংশ) নৌপথ হারিয়ে গেছে। তবে বর্তমান সরকারের গত ১০ বছর মেয়াদে পুনঃখননের কারণে নৌপথের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় (বাজেট) অধিবেশনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর দেয়া তথ্য থেকে এসব বিষয় উঠে এসেছে। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

১০ হাজার কিলোমিটার নদী পুনঃখনন : প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশ। নদী আমাদের প্রাণ, জীবন ও জীবিকার উৎস। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১০ বছরে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করে। ফলে বর্তমানে নৌপথের দৈর্ঘ্য ৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের নৌযাতায়াত ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে আরও ১৭৮টি নদীর ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের কাজ চলমান রয়েছে। সারাদেশে নৌপথ রক্ষার্থে নদী কমিশন গঠনসহ নদী দখল ও দূষণ রোধে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নিরাপদ নৌচলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপথের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৬টি ভেসেল স্টর্ম শেল্টারস নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন।

নদীতীরের ১৫ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ : সরকারি দলের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নদীবন্দরের আওতাধীন নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১৫ হাজার ১৭৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫৬৭ দশমিক ১২ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা নদীবন্দরের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১২ হাজার ৩৯৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং ৩৭২ দশমিক ১২ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের আওতাধীন শীতলক্ষ্যা নদীর তীরভূমি থেকে প্রায় ২ হাজার ৭৭৯টি অবৈধ স্থাপনা ও ১৯৪ একর তীরভূমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদের পর নদীর তীরভূমি পুনঃদখল রোধকল্পে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে নদীর উভয় তীরে ওয়াকওয়ে, আরসিসি স্টেপস, বসার বেঞ্চ, ইকো পার্ক নির্মাণ, নদীরপাড় বাঁধাই, গাইড ওয়াল নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সোমবার, ২৪ জুন ২০১৯ , ১০ আষাঢ় ১৪২৫, ২০ শাওয়াল ১৪৪০

দেশের ৭৫ ভাগ নৌপথ হারিয়ে গেছে

তীরের ১৫ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ : নৌ প্রতিমন্ত্রী

সংসদ বার্তা পরিবেশক

নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে ১৯৬০ সালের আগে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু কালক্রমে নৌপথ সংকুচিত হয়ে তা ৬ হাজার কিলোমিটারে নেমে আসে। অর্থাৎ প্রায় সাত দশকে ১৮ হাজার কিলোমিটার বা ৪ ভাগের ৩ ভাগ (৭৫ শতাংশ) নৌপথ হারিয়ে গেছে। তবে বর্তমান সরকারের গত ১০ বছর মেয়াদে পুনঃখননের কারণে নৌপথের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় (বাজেট) অধিবেশনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর দেয়া তথ্য থেকে এসব বিষয় উঠে এসেছে। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

১০ হাজার কিলোমিটার নদী পুনঃখনন : প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশ। নদী আমাদের প্রাণ, জীবন ও জীবিকার উৎস। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১০ বছরে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করে। ফলে বর্তমানে নৌপথের দৈর্ঘ্য ৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের নৌযাতায়াত ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে আরও ১৭৮টি নদীর ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের কাজ চলমান রয়েছে। সারাদেশে নৌপথ রক্ষার্থে নদী কমিশন গঠনসহ নদী দখল ও দূষণ রোধে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নিরাপদ নৌচলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপথের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৬টি ভেসেল স্টর্ম শেল্টারস নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন।

নদীতীরের ১৫ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ : সরকারি দলের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নদীবন্দরের আওতাধীন নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১৫ হাজার ১৭৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫৬৭ দশমিক ১২ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা নদীবন্দরের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১২ হাজার ৩৯৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং ৩৭২ দশমিক ১২ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের আওতাধীন শীতলক্ষ্যা নদীর তীরভূমি থেকে প্রায় ২ হাজার ৭৭৯টি অবৈধ স্থাপনা ও ১৯৪ একর তীরভূমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদের পর নদীর তীরভূমি পুনঃদখল রোধকল্পে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে নদীর উভয় তীরে ওয়াকওয়ে, আরসিসি স্টেপস, বসার বেঞ্চ, ইকো পার্ক নির্মাণ, নদীরপাড় বাঁধাই, গাইড ওয়াল নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।