আফগানদের পুঁজি ২২৭ রান

আফগানিস্তানের ২২৭ রানের জবাবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান ৩১ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৯ রান করেছে। বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটাকে নিয়ে অনেক বোদ্ধাও আশাবাদী ছিলেন। বাস্তবতা হলো অন্য দেশের সহানুভূতিতে স্পন্সর পাওয়া, ভিনদেশের স্টেডিয়াম ভাড়া করে খেলা ক্রিকেটের সঙ্গে বিশ্বমঞ্চের তফাৎ কত বড় হতে পারে তা হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছে কাবুলিওয়ালার দেশ। বিশ্বকাপের চলতি আসরে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে জয়হীন থাকা আফগানরা গতকাল পাকিস্তানের সঙ্গে অষ্টম ম্যাচ খেলতে নেমে আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের তেজ টের পেয়েছে। হেডিংলিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহিন আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমিরের মতো ভয়ঙ্কর সব পেসারের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী সূচনা পাওয়া আফগানরা শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে করতে পেরেছে মাত্র ২২৭ রান। ‘আনপ্রেডিক্টিবল’ পাকিস্তানের ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট কোন কারণে দিশেহারা না হলে ২২৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে সাবলীলভাবেই পৌঁছোনোর আশা করতে পারে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ীরা। পাকিস্তানের কাছে এই ম্যাচ বাঁচামরার। কেননা হেরে গেলেই রুদ্ধ হয়ে যাবে সেমিফাইনালের স্বপ্ন।

প্রথম চারটা ওভার বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই মোকাবিলা করেছিলেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। ওভারপ্রতি গড়ে পাঁচের ওপরে রান পাচ্ছিলেন তারা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট হারায় তারা। হন্তারক হলেন পেসার শাহিন আফ্রিদি। বাঁহাতি এই পেসার প্রথমে ফেরান গুলবদিন নাইবকে। পরের বলেই হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও সাজঘরে ফেরান তিনি।

আফ্রিদির করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ১৫ রান করা গুলবদিন ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে থাকা সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে। ফিল্ড আম্পায়ার প্রথমে সাড়া দেননি পাকিস্তান রিভিউ নিলে দেখা যায় বল ব্যাটের কানায় চুমু খেয়ে সরফরাজের গ্লাভসে জমা হয়েছে বল। আউট হন আফগান অধিনায়ক।

এরপরের বলেই হাস্যকর এক শট খেলে আত্মাহুতি দেন হাশমতউল্লাহ শহিদি। অহেতুক শট খেলতে গেলে বল ব্যাটের কানায় লেগে মিড-অফে জমা পড়ে ইমাদ ওয়াসিমের হাতে।

তৃতীয় উইকেটে রহমত শাহ ও ইকরাম আলিখিলের প্রতিরোধ ভাঙেন ইমাদ ওয়াসিম। ৩৫ রান করা ওপেনার রহমত শাহ ক্যাচ দেন বাবর আজমের হাতে। চতুর্থ উইকেটে অভিজ্ঞ আসগর আফগান ও ইকরাম আলি খিল স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৬৪ রান।

আসগরকে ৪২ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন শাদাব খান। বোল্ড হন আসগর আফগান। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের বিদায় হতে না হতে বিদায় নেন ইকরাম আলিখিল (২৪)। ন ইমাদ ওয়াসিমের বলে লং-অনে মোহাম্মদ হাফিজের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

আফ্রিদি-রিয়াজ-ইমাদ ওয়াসিমদের বোলিংয়ে তখন ২০০ রানই আফগানদের জন্য অনেক দূরের পথ মনে হচ্ছিল। আসগরের পর নজিবুল্লাহ জাদরান এগিয়ে নেন দলের স্কোর। বাকিরা একের পর এক ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও, তিনি খেলেন দায়িত্বশীল এক ইনিংস। আসগরের মতো তিনিও হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। তারও স্কোর ৪২ রান। তবে এই ইনিংসেই ২০০ পার করার মতো শক্তি পেয়ে যায় আফগানিস্তান।

নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২২৭ রান তোলে দলটি। পাকিস্তানের হয়ে ৪৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট শিকার করেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাদ ওয়াসিম শিকার করেন দুটো করে উইকেট।

রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০

আফগানদের পুঁজি ২২৭ রান

বিশেষ প্রতিনিধি

আফগানিস্তানের ২২৭ রানের জবাবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান ৩১ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৯ রান করেছে। বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটাকে নিয়ে অনেক বোদ্ধাও আশাবাদী ছিলেন। বাস্তবতা হলো অন্য দেশের সহানুভূতিতে স্পন্সর পাওয়া, ভিনদেশের স্টেডিয়াম ভাড়া করে খেলা ক্রিকেটের সঙ্গে বিশ্বমঞ্চের তফাৎ কত বড় হতে পারে তা হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছে কাবুলিওয়ালার দেশ। বিশ্বকাপের চলতি আসরে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে জয়হীন থাকা আফগানরা গতকাল পাকিস্তানের সঙ্গে অষ্টম ম্যাচ খেলতে নেমে আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের তেজ টের পেয়েছে। হেডিংলিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহিন আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমিরের মতো ভয়ঙ্কর সব পেসারের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী সূচনা পাওয়া আফগানরা শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে করতে পেরেছে মাত্র ২২৭ রান। ‘আনপ্রেডিক্টিবল’ পাকিস্তানের ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট কোন কারণে দিশেহারা না হলে ২২৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে সাবলীলভাবেই পৌঁছোনোর আশা করতে পারে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ীরা। পাকিস্তানের কাছে এই ম্যাচ বাঁচামরার। কেননা হেরে গেলেই রুদ্ধ হয়ে যাবে সেমিফাইনালের স্বপ্ন।

প্রথম চারটা ওভার বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই মোকাবিলা করেছিলেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। ওভারপ্রতি গড়ে পাঁচের ওপরে রান পাচ্ছিলেন তারা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট হারায় তারা। হন্তারক হলেন পেসার শাহিন আফ্রিদি। বাঁহাতি এই পেসার প্রথমে ফেরান গুলবদিন নাইবকে। পরের বলেই হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও সাজঘরে ফেরান তিনি।

আফ্রিদির করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ১৫ রান করা গুলবদিন ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে থাকা সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে। ফিল্ড আম্পায়ার প্রথমে সাড়া দেননি পাকিস্তান রিভিউ নিলে দেখা যায় বল ব্যাটের কানায় চুমু খেয়ে সরফরাজের গ্লাভসে জমা হয়েছে বল। আউট হন আফগান অধিনায়ক।

এরপরের বলেই হাস্যকর এক শট খেলে আত্মাহুতি দেন হাশমতউল্লাহ শহিদি। অহেতুক শট খেলতে গেলে বল ব্যাটের কানায় লেগে মিড-অফে জমা পড়ে ইমাদ ওয়াসিমের হাতে।

তৃতীয় উইকেটে রহমত শাহ ও ইকরাম আলিখিলের প্রতিরোধ ভাঙেন ইমাদ ওয়াসিম। ৩৫ রান করা ওপেনার রহমত শাহ ক্যাচ দেন বাবর আজমের হাতে। চতুর্থ উইকেটে অভিজ্ঞ আসগর আফগান ও ইকরাম আলি খিল স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৬৪ রান।

আসগরকে ৪২ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন শাদাব খান। বোল্ড হন আসগর আফগান। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের বিদায় হতে না হতে বিদায় নেন ইকরাম আলিখিল (২৪)। ন ইমাদ ওয়াসিমের বলে লং-অনে মোহাম্মদ হাফিজের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

আফ্রিদি-রিয়াজ-ইমাদ ওয়াসিমদের বোলিংয়ে তখন ২০০ রানই আফগানদের জন্য অনেক দূরের পথ মনে হচ্ছিল। আসগরের পর নজিবুল্লাহ জাদরান এগিয়ে নেন দলের স্কোর। বাকিরা একের পর এক ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও, তিনি খেলেন দায়িত্বশীল এক ইনিংস। আসগরের মতো তিনিও হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। তারও স্কোর ৪২ রান। তবে এই ইনিংসেই ২০০ পার করার মতো শক্তি পেয়ে যায় আফগানিস্তান।

নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২২৭ রান তোলে দলটি। পাকিস্তানের হয়ে ৪৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট শিকার করেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাদ ওয়াসিম শিকার করেন দুটো করে উইকেট।