সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদ মিন্নির

মিন্নির সঙ্গে নয়নের আগে বিয়ে ছিল এবং নানা কুৎসা রটনার প্রতিবাদ করেছেন নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। মিন্নি ও দুলাল শরীফের বাড়িতে সাংবাদিকদের এ বক্তব্য দেন তারা। সম্প্রতি দু’একটি পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিন্নি ও নয়ন বন্ডের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের সংবাদ ছাপা হলে তারা এর প্রতিবাদ জানান।

শনিবার বিকেলে বরগুনার করইতলা মাইঠায় মিন্নিদের বাবার বাড়িতে এক সাক্ষাৎকারে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জানায়, রিফাত শরিফের সঙ্গে তার বিয়ের আগে নয়ন বন্ড তাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে। সে বরগুনা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। কিন্তু নয়নের কোন ক্লাস ছিল না। সে প্রতিদিন মিন্নিকে উত্যক্ত করত এবং নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। নয়ন বন্ড এলাকার শীর্ষ সন্ত্রসী। তার হাতে অস্ত্র আছে। তার গ্যাং অনেক বড়। তারা কাউকে পরোয়া করে না। স্কুল কলেজে পড়ে এমন অনেক মেয়েই তার লাঞ্ছনার শিকার। অস্ত্র ও সন্ত্রাসের ভয় দেখিয়ে এমন কাজ নেই যা তারা করে না। মিন্নি জানায়, ২০১৮ সালের দিকে একদিন কলেজে যাবার সময় নয়ন বন্ড তাকে কিডন্যাপ করে বরগুনার ডি কে পি সড়কের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ অন্যরা মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা সেখানে বসে একটি খাতায় সই দিতে বলে। সই না দিলে মিন্নির স্কুলে পড়ুয়া ভাই ও বোনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে সে খাতায় দস্তখত দেয়, কিন্তু সেটি বিয়ের কাবিন কি না সে জানে না। বিষয়টি সে বাসায় এসে বরগুনা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবু জাফর সালেহকে জানায়। সে এলাকার বিশিষ্ট আইনজীবী কামরুল আহসান মহারাজকে জানালে মিন্নিকে দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করেন এবং ৬ মাস আগে বড়লবণ গোলা এলাকার আ. হালিম দুলাল শরীফের ছেলে রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বরগুনা আলিয়া মাদ্রাসার জামে মসজিদে প্রায় এক হাজার লোকের সামনে এ বিয়ে দেয়া হয়। মিন্নি জানায়, নয়ন যদি বিয়েই করে তাহলে এতদিন কাউকে জানাল না কেন?

এদিকে মিন্নির শ্বশুর দুলাল শরীফ জানায়, প্রায় ১হাজার লোকের সামনে আলিয়া মাদ্রাসার মসজিদে বসে ছেলের বিয়ে হয়েছে। যারা যাই বলুক এ ঘটনার বিচার হবেই। পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করবেই। তিনি বলেন, বহু কথা আমরা শুনি কিন্ত আমরাতো প্রত্যক্ষদর্শী না।

নয়ন মিন্নির বিয়ের কাবিন প্রসঙ্গে

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কাবিননামার ফটোকপি প্রকাশ নিয়ে বরগুনায় এখন তোলপাড়। কাবিনে দেখা যায় ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর বরগুনার ক্রোক এলাকার কাজি আনিসুর রহমান ভূইয়ার মাধ্যমে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও সাব্বির আহাম্মেদ নয়নের সামনে একটি কাবিন রয়েছে। যার মোহরানা ৫ লাখ টাকা। তবে কোন উশুল নেই। যে কাবিনে অভিভাবকদেরও কোন সই নেই। এ কাবিনে ১ম সাক্ষী রিফাত হত্যা মামলার ২য় আসামি রিফাদ ফরাজী, উকিল হিসেবে রয়েছে নয়ন বন্ডের সদস্য শাওন। এ কাবিনে দলিল খরচ দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ১শ’ টাকা।

রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০

সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদ মিন্নির

প্রতিনিধি, বরগুনা

মিন্নির সঙ্গে নয়নের আগে বিয়ে ছিল এবং নানা কুৎসা রটনার প্রতিবাদ করেছেন নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। মিন্নি ও দুলাল শরীফের বাড়িতে সাংবাদিকদের এ বক্তব্য দেন তারা। সম্প্রতি দু’একটি পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিন্নি ও নয়ন বন্ডের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের সংবাদ ছাপা হলে তারা এর প্রতিবাদ জানান।

শনিবার বিকেলে বরগুনার করইতলা মাইঠায় মিন্নিদের বাবার বাড়িতে এক সাক্ষাৎকারে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জানায়, রিফাত শরিফের সঙ্গে তার বিয়ের আগে নয়ন বন্ড তাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে। সে বরগুনা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। কিন্তু নয়নের কোন ক্লাস ছিল না। সে প্রতিদিন মিন্নিকে উত্যক্ত করত এবং নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। নয়ন বন্ড এলাকার শীর্ষ সন্ত্রসী। তার হাতে অস্ত্র আছে। তার গ্যাং অনেক বড়। তারা কাউকে পরোয়া করে না। স্কুল কলেজে পড়ে এমন অনেক মেয়েই তার লাঞ্ছনার শিকার। অস্ত্র ও সন্ত্রাসের ভয় দেখিয়ে এমন কাজ নেই যা তারা করে না। মিন্নি জানায়, ২০১৮ সালের দিকে একদিন কলেজে যাবার সময় নয়ন বন্ড তাকে কিডন্যাপ করে বরগুনার ডি কে পি সড়কের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ অন্যরা মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা সেখানে বসে একটি খাতায় সই দিতে বলে। সই না দিলে মিন্নির স্কুলে পড়ুয়া ভাই ও বোনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে সে খাতায় দস্তখত দেয়, কিন্তু সেটি বিয়ের কাবিন কি না সে জানে না। বিষয়টি সে বাসায় এসে বরগুনা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবু জাফর সালেহকে জানায়। সে এলাকার বিশিষ্ট আইনজীবী কামরুল আহসান মহারাজকে জানালে মিন্নিকে দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করেন এবং ৬ মাস আগে বড়লবণ গোলা এলাকার আ. হালিম দুলাল শরীফের ছেলে রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বরগুনা আলিয়া মাদ্রাসার জামে মসজিদে প্রায় এক হাজার লোকের সামনে এ বিয়ে দেয়া হয়। মিন্নি জানায়, নয়ন যদি বিয়েই করে তাহলে এতদিন কাউকে জানাল না কেন?

এদিকে মিন্নির শ্বশুর দুলাল শরীফ জানায়, প্রায় ১হাজার লোকের সামনে আলিয়া মাদ্রাসার মসজিদে বসে ছেলের বিয়ে হয়েছে। যারা যাই বলুক এ ঘটনার বিচার হবেই। পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করবেই। তিনি বলেন, বহু কথা আমরা শুনি কিন্ত আমরাতো প্রত্যক্ষদর্শী না।

নয়ন মিন্নির বিয়ের কাবিন প্রসঙ্গে

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কাবিননামার ফটোকপি প্রকাশ নিয়ে বরগুনায় এখন তোলপাড়। কাবিনে দেখা যায় ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর বরগুনার ক্রোক এলাকার কাজি আনিসুর রহমান ভূইয়ার মাধ্যমে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও সাব্বির আহাম্মেদ নয়নের সামনে একটি কাবিন রয়েছে। যার মোহরানা ৫ লাখ টাকা। তবে কোন উশুল নেই। যে কাবিনে অভিভাবকদেরও কোন সই নেই। এ কাবিনে ১ম সাক্ষী রিফাত হত্যা মামলার ২য় আসামি রিফাদ ফরাজী, উকিল হিসেবে রয়েছে নয়ন বন্ডের সদস্য শাওন। এ কাবিনে দলিল খরচ দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ১শ’ টাকা।