সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উন্নয়ন দর্শন। বিগত ১০ বছরে দেশের দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ২১ ভাগে নেমে এসেছে। প্রস্তাবিত (২০১৯-২০) বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্যের হার আরও হ্রাস পাবে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় (বাজেট) অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়। আলোচনার একপর্যায়ে দুপুর ২টায় সংসদের বৈঠক বিকেল ৩টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনার দশম দিনে গতকাল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, পার্বত্য চট্টগ্রমবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশে সিং, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সরকারি দলের আসাদুজ্জামান নূর, শহীদুজ্জামাম সরকার, শেখ সালাহ উদ্দিন, অসীম কুমার উকিল, শওকত হাসানুর রহমান রিমন, মহিবুর রহমান, আকবর হোসেন পাঠান, আতাউর রহমান খান, এবাদুল করিম, আহমেদ ফিরোজ কবীর, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাহিন রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জয়া সেন গুপ্তা, সৈয়দা জাকিয়া নুর, বেগম শাহিন আক্তার, পারভীন শিকদার ও জাতীয় পার্টির মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী আলোচনায় অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১৫ হাজার : আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আরও বেশি প্রত্যাশা থাকার পরও প্রস্তাবিত বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে, পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে এটা বেড়ে ১৫ হাজার করা টাকা হবে। বিভিন্ন উৎসব ভাতা বেড়েছে। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস ভাতা চালু করা হয়েছে। সব মুক্তিযোদ্ধার ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধপত্র দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর দাফন ও সৎকারের টাকা দ্বিগুণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে করা হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২২শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতি মুক্তিযোদ্ধাকে ১৫ লাখ টাকা করে দেয়া হবে।
এক কোটি ২০ লাখ লোক বিদেশে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট উত্তম, তবে তা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সরকারের কাজের গতিশীলতা আনতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এখন সময়ের দাবি। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এ দেশে জেলা সরকার গঠন করেছিলেন। এখনো জেলা সরকার সময়ের দাবি। তাহলে কর্মপদ্ধতি আরও বেগবান হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বর্তমানে বিদেশে থাকে, তাদের অবস্থার উন্নয়ন এবং সহযোগিতার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু, অভিযোগ বাক্স স্থাপন, ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদানের জন্য দূতাবাসগুলোতে অ্যাপ্রস চালু, প্রতিটি দূতাবাসে দেশীয় টিভি দেখার ব্যবস্থা করা, দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স গ্রহণ, গণশুনানি গ্রহণ ও প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে বিমানবন্দরে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।
পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি : পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং বলেন, প্রস্তাাবিত বাজেট দেশের সব শ্রেণীপেশার মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাবে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে পার্বত্যাঞ্চলে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিসহ নানা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের বাজেট এখন হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এখন প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ হয়েছে। দেশের পার্বত্য এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে তিনি এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানান।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ : যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, যুবকদের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ইতিমধ্যে জাতীয় যুবনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ন্যাশনাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে লাখ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়েছে। তার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও আন্তরিকতায় ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নসাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে টাইগাররা বিশ্বকাপে যেভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেছে আশা করছি, বাংলাদেশ টিম ফাইনাল খেলবে।
চিফ হুইপ নুর-ই আলম চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উন্নয়ন দর্শন। এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে যে উন্নয়ন স্বপ্ন আমরা দেখেছি তা বাস্তবায়িত হবে।
রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০
সংসদ বার্তা পরিবেশক
সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উন্নয়ন দর্শন। বিগত ১০ বছরে দেশের দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ২১ ভাগে নেমে এসেছে। প্রস্তাবিত (২০১৯-২০) বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্যের হার আরও হ্রাস পাবে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় (বাজেট) অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়। আলোচনার একপর্যায়ে দুপুর ২টায় সংসদের বৈঠক বিকেল ৩টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনার দশম দিনে গতকাল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, পার্বত্য চট্টগ্রমবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশে সিং, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সরকারি দলের আসাদুজ্জামান নূর, শহীদুজ্জামাম সরকার, শেখ সালাহ উদ্দিন, অসীম কুমার উকিল, শওকত হাসানুর রহমান রিমন, মহিবুর রহমান, আকবর হোসেন পাঠান, আতাউর রহমান খান, এবাদুল করিম, আহমেদ ফিরোজ কবীর, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাহিন রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জয়া সেন গুপ্তা, সৈয়দা জাকিয়া নুর, বেগম শাহিন আক্তার, পারভীন শিকদার ও জাতীয় পার্টির মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী আলোচনায় অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১৫ হাজার : আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আরও বেশি প্রত্যাশা থাকার পরও প্রস্তাবিত বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে, পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে এটা বেড়ে ১৫ হাজার করা টাকা হবে। বিভিন্ন উৎসব ভাতা বেড়েছে। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস ভাতা চালু করা হয়েছে। সব মুক্তিযোদ্ধার ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধপত্র দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর দাফন ও সৎকারের টাকা দ্বিগুণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে করা হবে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২২শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতি মুক্তিযোদ্ধাকে ১৫ লাখ টাকা করে দেয়া হবে।
এক কোটি ২০ লাখ লোক বিদেশে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট উত্তম, তবে তা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সরকারের কাজের গতিশীলতা আনতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এখন সময়ের দাবি। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এ দেশে জেলা সরকার গঠন করেছিলেন। এখনো জেলা সরকার সময়ের দাবি। তাহলে কর্মপদ্ধতি আরও বেগবান হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বর্তমানে বিদেশে থাকে, তাদের অবস্থার উন্নয়ন এবং সহযোগিতার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু, অভিযোগ বাক্স স্থাপন, ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদানের জন্য দূতাবাসগুলোতে অ্যাপ্রস চালু, প্রতিটি দূতাবাসে দেশীয় টিভি দেখার ব্যবস্থা করা, দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স গ্রহণ, গণশুনানি গ্রহণ ও প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে বিমানবন্দরে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।
পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি : পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং বলেন, প্রস্তাাবিত বাজেট দেশের সব শ্রেণীপেশার মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাবে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে পার্বত্যাঞ্চলে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিসহ নানা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের বাজেট এখন হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এখন প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ হয়েছে। দেশের পার্বত্য এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে তিনি এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানান।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ : যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, যুবকদের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ইতিমধ্যে জাতীয় যুবনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ন্যাশনাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে লাখ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়েছে। তার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও আন্তরিকতায় ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নসাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে টাইগাররা বিশ্বকাপে যেভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেছে আশা করছি, বাংলাদেশ টিম ফাইনাল খেলবে।
চিফ হুইপ নুর-ই আলম চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উন্নয়ন দর্শন। এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে যে উন্নয়ন স্বপ্ন আমরা দেখেছি তা বাস্তবায়িত হবে।