জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাজস্ব ও উন্নয়নসহ ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট ঘোষণা করা হয়। সকাল ১০টায় গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিনেট অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনেটের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নোমান উর রশীদ বাজেট পেশ করেন, যা সিনেটে গৃহীত হয়। ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বাজেটের মধ্যে পৌনঃপুনিক (রাজস্ব) ২৮৫ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ২০২ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সিনেট অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী নিয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা, বিতর্ক অনুষ্ঠান, রচনা প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও স্মারকগ্রন্থ রচনা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম জানান, সিনেট অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীনও হতাম না, বাংলাদেশ রাষ্ট্রও পেতাম না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারি ও মুক্তিদাতা। আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় এ মহামানবের জন্মশতবার্ষিকী (২০২০-২০২১) পালন করতে চাই। এ উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত ২২৬০টি কলেজে বছরব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্য ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের সিনেট অধিবেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এ ছাড়া উপাচার্য তার অভিভাষণে বার্ষিক কলেজ পারফরমেন্স র্যাংকিং, আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান ও পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে মডেল কলেজ প্রকল্প গ্রহণ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম ১৩টি শতবর্ষী কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় মানের শিক্ষা-গবেষণা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শতবর্ষী কলেজ প্রকল্প, পাঠ্যপুস্তক রচনা, ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং চালু, মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ৫টি ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ক্যাম্পাসে শীঘ্রই মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, কলেজ মনিটরিং জোরদার, ঢাকার আগারগাঁও-এ ইউজিসি সংলগ্ন স্থানে ঘট-অটই টাওয়ার নির্মাণের অগ্রগতি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ, কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রকল্পের অগ্রগতি, নিজস্ব জমিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি স্থায়ী আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের অগ্রগতি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।
উপাচার্যের অভিভাষণের ওপর আলোকপাত করে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারী, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়া, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বরোচিস সরকার, বিএল কলেজের শিক্ষক ড. ফাতেমা হোসেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যাপক শাহনাজ পারভীনসহ ১৬ জন সিনেট সদস্য বক্তব্য রাখেন। তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
এ অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য প্রফেসর ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, প্রফেসর ড. মশিউর রহমানসহ মোট ৬০ জন সিনেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন, বার্ষিক বাজেট, বার্ষিক প্রতিবেদন, গত অধিবেশনের কার্যবিবরণী, সার্ভিস রুলস ও অধিভুক্ত কলেজসমূহের গভর্নিং বডি’র কতিপয় সংশোধনী ইত্যাদি পাসের পর সিনেটের সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০
প্রতিনিধি, গাজীপুর
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাজস্ব ও উন্নয়নসহ ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট ঘোষণা করা হয়। সকাল ১০টায় গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিনেট অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনেটের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নোমান উর রশীদ বাজেট পেশ করেন, যা সিনেটে গৃহীত হয়। ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বাজেটের মধ্যে পৌনঃপুনিক (রাজস্ব) ২৮৫ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ২০২ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সিনেট অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী নিয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা, বিতর্ক অনুষ্ঠান, রচনা প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও স্মারকগ্রন্থ রচনা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম জানান, সিনেট অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীনও হতাম না, বাংলাদেশ রাষ্ট্রও পেতাম না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারি ও মুক্তিদাতা। আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় এ মহামানবের জন্মশতবার্ষিকী (২০২০-২০২১) পালন করতে চাই। এ উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত ২২৬০টি কলেজে বছরব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্য ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের সিনেট অধিবেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এ ছাড়া উপাচার্য তার অভিভাষণে বার্ষিক কলেজ পারফরমেন্স র্যাংকিং, আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান ও পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে মডেল কলেজ প্রকল্প গ্রহণ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম ১৩টি শতবর্ষী কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় মানের শিক্ষা-গবেষণা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শতবর্ষী কলেজ প্রকল্প, পাঠ্যপুস্তক রচনা, ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং চালু, মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ৫টি ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ক্যাম্পাসে শীঘ্রই মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, কলেজ মনিটরিং জোরদার, ঢাকার আগারগাঁও-এ ইউজিসি সংলগ্ন স্থানে ঘট-অটই টাওয়ার নির্মাণের অগ্রগতি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ, কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রকল্পের অগ্রগতি, নিজস্ব জমিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি স্থায়ী আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের অগ্রগতি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।
উপাচার্যের অভিভাষণের ওপর আলোকপাত করে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারী, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়া, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বরোচিস সরকার, বিএল কলেজের শিক্ষক ড. ফাতেমা হোসেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যাপক শাহনাজ পারভীনসহ ১৬ জন সিনেট সদস্য বক্তব্য রাখেন। তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
এ অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য প্রফেসর ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, প্রফেসর ড. মশিউর রহমানসহ মোট ৬০ জন সিনেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন, বার্ষিক বাজেট, বার্ষিক প্রতিবেদন, গত অধিবেশনের কার্যবিবরণী, সার্ভিস রুলস ও অধিভুক্ত কলেজসমূহের গভর্নিং বডি’র কতিপয় সংশোধনী ইত্যাদি পাসের পর সিনেটের সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।