নিম্নমানের গুঁড়ো দুধ আমদানি নিষিদ্ধের দাবি

নিম্নমানের গুঁড়ো দুধ স্বাস্থ্য ও দেশীয় দুগ্ধশিল্পের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাই এ দুধ আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মিল্কভিটা আয়োজিত ‘ইম্পোর্টেড পাউডার মিল্ক : থ্রেটস ফর ডেইরি ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’ বিষয়ক সেমিনারে এ দাবি জানান বক্তারা। সেমিনারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও অ্যানিমেল হাজেন্ডারি ফ্যাকাল্টির ডিন ড. মো. নুরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব কামাল উদ্দিন তালুকদার ।

সেমিনারে নুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যে পাউডার মিল্ক তৈরি হয় এর মেজর অংশই মিল্কভিটা, প্রাণ ও আড়ং ডেইরি উৎপাদন করে। ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে পাউডার মিল্কের উৎপাদন ছিল ৫ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা হয়েছে ১১ হাজার টন। অন্যদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমাদের দেশে এক লাখ ৩০ হাজার টন পাউডার মিল্ক আমদানি করা হয়। স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে বড় গ্যাপ রয়েছে। আমাদের স্থানীয়ভাবে পাউডার মিল্ক করার মতো ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপ করতে হবে। পাউডার মিল্ক আনার কারণে আমদানিকারকরা লাভবান হচ্ছেন। ফলে স্থানীয় দুধ উৎপাদকরা দুধ বিক্রি করতে পারে না। আমদানি করা কম দামি পাউডার মিল্ক বিক্রির কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বেশি দামের পিওর দুধ মানুষ কিনতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, আমদানি হয়ে আসা বেশির ভাগ পাউডার মিল্ক নিম্নমানের। এজন্য এগিয়ে যাওয়া ডেইরি সেক্টর এখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নিম্নমানের (ডাম্পিং লো কোয়ালিটি) পাউডার মিল্ক আমদানি করতে প্রতি বছর দেশ থেকে ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। মিল্কভিটা এক কেজি গুঁড়ো দুধ উৎপাদনে খরচ হয় ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, তা বাজারে বিক্রি হয় ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা। কিন্তু আমদানি করা গুঁড়ো দুধ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুল্ক সুবিধা নিতে বেশিরভাগ গুঁড়ো দুধ শিশুখাদ্য নামে আসছে জানিয়ে কিন্তু দেখা গেছে আমদানি করা গুঁড়ো দুধের মাত্র ১০ শতাংশ শিশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাকি ৯০ শতাংশ গুঁড়ো দুধ ব্যবহৃত হয়।

সোমবার, ০১ জুলাই ২০১৯ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৫, ২৭ শাওয়াল ১৪৪০

মিল্কভিটার সেমিনারে বক্তারা

নিম্নমানের গুঁড়ো দুধ আমদানি নিষিদ্ধের দাবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

নিম্নমানের গুঁড়ো দুধ স্বাস্থ্য ও দেশীয় দুগ্ধশিল্পের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাই এ দুধ আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মিল্কভিটা আয়োজিত ‘ইম্পোর্টেড পাউডার মিল্ক : থ্রেটস ফর ডেইরি ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’ বিষয়ক সেমিনারে এ দাবি জানান বক্তারা। সেমিনারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও অ্যানিমেল হাজেন্ডারি ফ্যাকাল্টির ডিন ড. মো. নুরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব কামাল উদ্দিন তালুকদার ।

সেমিনারে নুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যে পাউডার মিল্ক তৈরি হয় এর মেজর অংশই মিল্কভিটা, প্রাণ ও আড়ং ডেইরি উৎপাদন করে। ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে পাউডার মিল্কের উৎপাদন ছিল ৫ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা হয়েছে ১১ হাজার টন। অন্যদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমাদের দেশে এক লাখ ৩০ হাজার টন পাউডার মিল্ক আমদানি করা হয়। স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে বড় গ্যাপ রয়েছে। আমাদের স্থানীয়ভাবে পাউডার মিল্ক করার মতো ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপ করতে হবে। পাউডার মিল্ক আনার কারণে আমদানিকারকরা লাভবান হচ্ছেন। ফলে স্থানীয় দুধ উৎপাদকরা দুধ বিক্রি করতে পারে না। আমদানি করা কম দামি পাউডার মিল্ক বিক্রির কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বেশি দামের পিওর দুধ মানুষ কিনতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, আমদানি হয়ে আসা বেশির ভাগ পাউডার মিল্ক নিম্নমানের। এজন্য এগিয়ে যাওয়া ডেইরি সেক্টর এখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নিম্নমানের (ডাম্পিং লো কোয়ালিটি) পাউডার মিল্ক আমদানি করতে প্রতি বছর দেশ থেকে ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। মিল্কভিটা এক কেজি গুঁড়ো দুধ উৎপাদনে খরচ হয় ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, তা বাজারে বিক্রি হয় ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা। কিন্তু আমদানি করা গুঁড়ো দুধ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুল্ক সুবিধা নিতে বেশিরভাগ গুঁড়ো দুধ শিশুখাদ্য নামে আসছে জানিয়ে কিন্তু দেখা গেছে আমদানি করা গুঁড়ো দুধের মাত্র ১০ শতাংশ শিশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাকি ৯০ শতাংশ গুঁড়ো দুধ ব্যবহৃত হয়।