পাবনায় শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা মামলার রায় কাল

দীর্ঘ ২৫ বছর পর আগামীকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১-এর বিচারক রোস্তম আলী উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ আদেশ দেন। এ সময় আসামিদের মধ্যে জেলহাজতে থাকা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু এবং অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

পাবনার সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) আখতারুজ্জামান মুক্তা বলেন, শেখ হাসিনাকে গুলিবর্ষণ মামলায় ৩৮ সাক্ষী আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সুস্পষ্টভাবে হামলার ঘটনায় আসামিদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খন্দকার জানান, এ মামলায় হাইকোর্টে লিভ টু আপিল চলমান। এরপরও রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। কোন সাক্ষীই সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামিরাই যে বোমাবাজি, গুলি করেছেন- তা বলেননি। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রায় হলে অবশ্যই আসামিরা খালাস পাবেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন, আখতারুজ্জামান মুক্তা, ওবায়দুল হক প্রমুখ। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরল ইসলাম গ্যাদা, মাসুদ খন্দকার, সনৎ কুমার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তাকে বহনকারী ট্রেনটি যাত্রাবিরতি করলে অতর্কিত শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ওইদিনই ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি তদন্ত শেষে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি করার বছরে এই মামলায় পুলিশ কোন সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্টও দাখিল করে। কিন্তু আদালত ওই রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল চার্জশিট দাখিল করে।

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪০

২৫ বছর পর

পাবনায় শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা মামলার রায় কাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা

দীর্ঘ ২৫ বছর পর আগামীকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১-এর বিচারক রোস্তম আলী উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ আদেশ দেন। এ সময় আসামিদের মধ্যে জেলহাজতে থাকা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু এবং অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

পাবনার সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) আখতারুজ্জামান মুক্তা বলেন, শেখ হাসিনাকে গুলিবর্ষণ মামলায় ৩৮ সাক্ষী আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সুস্পষ্টভাবে হামলার ঘটনায় আসামিদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খন্দকার জানান, এ মামলায় হাইকোর্টে লিভ টু আপিল চলমান। এরপরও রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। কোন সাক্ষীই সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামিরাই যে বোমাবাজি, গুলি করেছেন- তা বলেননি। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রায় হলে অবশ্যই আসামিরা খালাস পাবেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন, আখতারুজ্জামান মুক্তা, ওবায়দুল হক প্রমুখ। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরল ইসলাম গ্যাদা, মাসুদ খন্দকার, সনৎ কুমার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তাকে বহনকারী ট্রেনটি যাত্রাবিরতি করলে অতর্কিত শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ওইদিনই ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি তদন্ত শেষে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি করার বছরে এই মামলায় পুলিশ কোন সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্টও দাখিল করে। কিন্তু আদালত ওই রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল চার্জশিট দাখিল করে।