বরগুনা

রিফাত হত্যায় গ্রেফতার ৯

দু’জনের স্বীকারোক্তি

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায় পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ৫ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ ৪ জনসহ মোট ৯ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

সোমবার দুপুরে বরগুনার পুলিশের সভাকক্ষে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ৪ নং আসামি চন্দন (২১), ৯ নং আসামি হাসান (১৯), ১১ নং আসামি অলি ও ১২ নং আসামি টিকটক। সন্দেহজনক গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের লতিফ খানের ছেলে সাগর (১৯) ও হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১)। এছাড়া গতকাল আরও একজনকে গ্রেফতার করা হলেও তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছেন তারা। শুধু পুলিশই নয়, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অনেক ইনটেলিজেন্স ইউনিট এখন বরগুনা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। তিনি বলেন, রিফাদ হত্যা মামলায় প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামি গ্রেফতারের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘণ্টা দিয়ে আসামি ধরা সম্ভব নয়। যারা অপরাধ করে তারা ঘন্টা হিসাব করে না। প্রধান আসামি গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমে প্রধান আসামি বলে কিছু নেই। এ বিষয় তিনবার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে কয়েকবার। তবে পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানায়, রিফাদ হত্যা মামলার মূল আসামি পুলিশের নজরে রয়েছে। শীঘ্রই তাকে ধরা সম্ভব হবে।

  • ৬ আসামি মেজিস্ট্রেট আদালতে
  • ৪ জনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর
  • ২ জনের স্বীকারোক্তি

গ্রেফতারকৃত ৬ জনকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে মামলার বাদী বরগুনা থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির রিফাদ হত্যা মামলার ২ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড ও ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদনের জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করেন। আদালত আসামি অলি ও তানভীরের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং ৪ আসামিকে ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলো নাজমুল, সাগর, সাইমুন ও সদ্য ধৃত শ্রাবণ। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছে অলি, এজাহার ছাড়া নাজমুল, তানভীর, সাগর, সাইমুন ও শ্রাবণ।

গ্রেফতারকৃত সাগর পুলিশের চাকরিতে প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছিল

গ্রেফতার হওয়া সাগর সদ্য পুলিশের চাকরিতে প্রাথমিকভাবে মনোনীত সাগর, পিতা লতিফ খান, মাতা ইসমাত জাহান, সাং নলীমাইঠা, উপজেলা ও জেলা বরগুনা নয়ন বন্ডের সদস্য হওয়ায় তার চাকরি অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২২ জুন বরগুনা জেলা থেকে পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনেস্টবল (টিআরসি) নিয়োগ ২০১৯-এর কনেস্টবল নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। তবে গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের রাস্তায় রিফাদ হত্যায় বরগুনা থানায় ২৬ জুন মামলা নং ৩১ করা হলে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট টিম কর্তৃক তদন্তকালীন উল্লেখিত সাগরকে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি নয়নের নেতৃত্বাধীন মেসেঞ্জার গ্রুপ আইডি ০০৭-এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাই তদন্ত টিম তাকে ৩০/০৬/১৯ তারিখ বরিশাল জেলার বানরীপাড়া উপজেলার ৫ নং সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নে তার নানাবাড়ি ধারালিয়া থেকে গ্রেফতার করে।

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪০

বরগুনা

রিফাত হত্যায় গ্রেফতার ৯

দু’জনের স্বীকারোক্তি

প্রতিনিধি, বরগুনা

image

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায় পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ৫ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ ৪ জনসহ মোট ৯ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

সোমবার দুপুরে বরগুনার পুলিশের সভাকক্ষে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ৪ নং আসামি চন্দন (২১), ৯ নং আসামি হাসান (১৯), ১১ নং আসামি অলি ও ১২ নং আসামি টিকটক। সন্দেহজনক গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের লতিফ খানের ছেলে সাগর (১৯) ও হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১)। এছাড়া গতকাল আরও একজনকে গ্রেফতার করা হলেও তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছেন তারা। শুধু পুলিশই নয়, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অনেক ইনটেলিজেন্স ইউনিট এখন বরগুনা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। তিনি বলেন, রিফাদ হত্যা মামলায় প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামি গ্রেফতারের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘণ্টা দিয়ে আসামি ধরা সম্ভব নয়। যারা অপরাধ করে তারা ঘন্টা হিসাব করে না। প্রধান আসামি গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমে প্রধান আসামি বলে কিছু নেই। এ বিষয় তিনবার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে কয়েকবার। তবে পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানায়, রিফাদ হত্যা মামলার মূল আসামি পুলিশের নজরে রয়েছে। শীঘ্রই তাকে ধরা সম্ভব হবে।

  • ৬ আসামি মেজিস্ট্রেট আদালতে
  • ৪ জনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর
  • ২ জনের স্বীকারোক্তি

গ্রেফতারকৃত ৬ জনকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে মামলার বাদী বরগুনা থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির রিফাদ হত্যা মামলার ২ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড ও ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদনের জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করেন। আদালত আসামি অলি ও তানভীরের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং ৪ আসামিকে ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলো নাজমুল, সাগর, সাইমুন ও সদ্য ধৃত শ্রাবণ। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছে অলি, এজাহার ছাড়া নাজমুল, তানভীর, সাগর, সাইমুন ও শ্রাবণ।

গ্রেফতারকৃত সাগর পুলিশের চাকরিতে প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছিল

গ্রেফতার হওয়া সাগর সদ্য পুলিশের চাকরিতে প্রাথমিকভাবে মনোনীত সাগর, পিতা লতিফ খান, মাতা ইসমাত জাহান, সাং নলীমাইঠা, উপজেলা ও জেলা বরগুনা নয়ন বন্ডের সদস্য হওয়ায় তার চাকরি অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২২ জুন বরগুনা জেলা থেকে পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনেস্টবল (টিআরসি) নিয়োগ ২০১৯-এর কনেস্টবল নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। তবে গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের রাস্তায় রিফাদ হত্যায় বরগুনা থানায় ২৬ জুন মামলা নং ৩১ করা হলে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট টিম কর্তৃক তদন্তকালীন উল্লেখিত সাগরকে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি নয়নের নেতৃত্বাধীন মেসেঞ্জার গ্রুপ আইডি ০০৭-এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাই তদন্ত টিম তাকে ৩০/০৬/১৯ তারিখ বরিশাল জেলার বানরীপাড়া উপজেলার ৫ নং সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নে তার নানাবাড়ি ধারালিয়া থেকে গ্রেফতার করে।