যশোরের কেশবপুরে এক সুদখোর ব্যবসায়ীর পাতানো ফাঁদে পড়ে শহরের ১০ জন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা লাখে ঘণ্টায় এক হাজার টাকা সুদ দিয়েও সুদখোরের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না। গত সোমবার কেশবপুর প্রেসক্লাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষে স্টিফেন বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই সুদখোরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠাকলে স্টিফেন বিশ্বাস বলেন, আমি একজন পেশায় ব্যবসায়ী ও খ্রিস্টান মিশনে চাকরি করি। এর ওপর নির্ভর করে চলে আমার সংসার। অপরদিকে, উপজেলার ভোগতী গ্রামের নওশের আলীর ছেলে এসএম আবদুল্লাহ তপু কেশবপুর শহরের ত্রিমোহিনী মোড়ে বিকাশের ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করেন। তিনি কর্মস্থলে না গিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি দায়গ্রস্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাঝে চড়া সুদে টাকা বিনিয়োগ করে ইতোমধ্যে শহরের শীর্ষ সুদখোর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি বন্ধু সেজে উপকারের নামে স্বাক্ষরিত সাদা স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের সাদা চেক পাতা নিয়ে সুদে টাকা দিয়ে থাকেন। এরপর ওই স্ট্যাম্প ও চেকের পাতায় নিজের ইচ্ছামতো টাকা বসিয়ে তিনি আদায় করেন। আমি গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনালী ব্যাংক, কেশবপুর শাখার চেকবই এর একটি পাতা দিয়ে তার কাছ থেকে সুদে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করি। এ পর্যন্ত সুদাসলসহ আমি ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করে আমার দেয়া সাদা চেকের পাতাটি তাকে কাছে ফেরৎ চাই। কিন্তু সে ওই চেকপাতা দিতে তালবাহানা শুরু করে এবং আমার ব্লাংক চেকটি জিম্মি করে আরও ১০ লাখ টাকা সুদ দাবি করেন। আমি উপায়ন্তর না পেয়ে গত ১৮ এপ্রিল তপুর বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। যার প্রেক্ষিতে, ১৯ এপ্রিল উভয়ের মধ্যে একটি আপসনামা হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি চেক তাকে দিলে তিনি আগের চেকটি ফেরত দেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে অদ্যাবধি তার সুদের ওই ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হই। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি নতুন ফাদ পেতে আমার স্বাক্ষর জাল করে সাদা স্ট্যাম্পে নিজের ইচ্ছামতো ১০ লাখ টাকা বসিয়ে ২৬ জুন আইনজীবীর মাধ্যমে টাকা পরিশোধের জন্যে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়ে আমাকে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন। আমি ছাড়াও তার পাতানো সুদের ফাদে পড়ে শহরের প্রিন্টিং ব্যবসায়ী অমিত সরকার ২৫ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এএস কম্পিউটারের মালিক আবদুস শহীদ ৬ লাখ টাকা সুদে নিয়ে ২২ লাখ টাকা দিয়েও তার সুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে না পেরে বর্তমান তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। টিএ ডিজিটাল ও প্রিন্টিং ব্যবসায়ী মারুফ হোসেন তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেও তার সুদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এভাবে সে আমার মত উপজেলাব্যাপী কমপক্ষে ৫০/৬০ জন ব্যবসায়ীকে তার সুদের ফাদে ফেলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। এমতাবস্থায় ওই সুদখোর মহাজনের হাত থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের রক্ষার দাবি করেছেন স্টিফেন বিশ্বাস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী অমিত সরকার, আবদুস শহীদ, মারুফ হোসেন প্রমুখ। এ ব্যাপারে এস এম আবদুল্লাহ তপুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাকরির পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসা করি। আমি সুদের কারবার করি না। যারা অভিযোগ করেছেন তারা আমার পার্শ্ববর্তী দোকানদার। তাদের ব্যবসায়ীক কাজের জন্যে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে এখন পরিশোধ করতে তালবাহানা করছেন। আমার টাকা আদায়ের স্বার্থে স্টিফেন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছি।
বুধবার, ০৩ জুলাই ২০১৯ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৫, ২৯ শাওয়াল ১৪৪০
প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)
যশোরের কেশবপুরে এক সুদখোর ব্যবসায়ীর পাতানো ফাঁদে পড়ে শহরের ১০ জন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা লাখে ঘণ্টায় এক হাজার টাকা সুদ দিয়েও সুদখোরের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না। গত সোমবার কেশবপুর প্রেসক্লাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষে স্টিফেন বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই সুদখোরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠাকলে স্টিফেন বিশ্বাস বলেন, আমি একজন পেশায় ব্যবসায়ী ও খ্রিস্টান মিশনে চাকরি করি। এর ওপর নির্ভর করে চলে আমার সংসার। অপরদিকে, উপজেলার ভোগতী গ্রামের নওশের আলীর ছেলে এসএম আবদুল্লাহ তপু কেশবপুর শহরের ত্রিমোহিনী মোড়ে বিকাশের ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করেন। তিনি কর্মস্থলে না গিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি দায়গ্রস্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাঝে চড়া সুদে টাকা বিনিয়োগ করে ইতোমধ্যে শহরের শীর্ষ সুদখোর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি বন্ধু সেজে উপকারের নামে স্বাক্ষরিত সাদা স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের সাদা চেক পাতা নিয়ে সুদে টাকা দিয়ে থাকেন। এরপর ওই স্ট্যাম্প ও চেকের পাতায় নিজের ইচ্ছামতো টাকা বসিয়ে তিনি আদায় করেন। আমি গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনালী ব্যাংক, কেশবপুর শাখার চেকবই এর একটি পাতা দিয়ে তার কাছ থেকে সুদে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করি। এ পর্যন্ত সুদাসলসহ আমি ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করে আমার দেয়া সাদা চেকের পাতাটি তাকে কাছে ফেরৎ চাই। কিন্তু সে ওই চেকপাতা দিতে তালবাহানা শুরু করে এবং আমার ব্লাংক চেকটি জিম্মি করে আরও ১০ লাখ টাকা সুদ দাবি করেন। আমি উপায়ন্তর না পেয়ে গত ১৮ এপ্রিল তপুর বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। যার প্রেক্ষিতে, ১৯ এপ্রিল উভয়ের মধ্যে একটি আপসনামা হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি চেক তাকে দিলে তিনি আগের চেকটি ফেরত দেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে অদ্যাবধি তার সুদের ওই ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হই। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি নতুন ফাদ পেতে আমার স্বাক্ষর জাল করে সাদা স্ট্যাম্পে নিজের ইচ্ছামতো ১০ লাখ টাকা বসিয়ে ২৬ জুন আইনজীবীর মাধ্যমে টাকা পরিশোধের জন্যে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়ে আমাকে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন। আমি ছাড়াও তার পাতানো সুদের ফাদে পড়ে শহরের প্রিন্টিং ব্যবসায়ী অমিত সরকার ২৫ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এএস কম্পিউটারের মালিক আবদুস শহীদ ৬ লাখ টাকা সুদে নিয়ে ২২ লাখ টাকা দিয়েও তার সুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে না পেরে বর্তমান তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। টিএ ডিজিটাল ও প্রিন্টিং ব্যবসায়ী মারুফ হোসেন তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেও তার সুদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এভাবে সে আমার মত উপজেলাব্যাপী কমপক্ষে ৫০/৬০ জন ব্যবসায়ীকে তার সুদের ফাদে ফেলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। এমতাবস্থায় ওই সুদখোর মহাজনের হাত থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের রক্ষার দাবি করেছেন স্টিফেন বিশ্বাস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী অমিত সরকার, আবদুস শহীদ, মারুফ হোসেন প্রমুখ। এ ব্যাপারে এস এম আবদুল্লাহ তপুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাকরির পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসা করি। আমি সুদের কারবার করি না। যারা অভিযোগ করেছেন তারা আমার পার্শ্ববর্তী দোকানদার। তাদের ব্যবসায়ীক কাজের জন্যে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে এখন পরিশোধ করতে তালবাহানা করছেন। আমার টাকা আদায়ের স্বার্থে স্টিফেন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছি।