বুড়িগঙ্গার তীরে ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নতুন করে সীমানা পিলার স্থাপন শুরু শনিবার থেকে

নদী দখল ও দূষণরোধে ঢাকার চারপাশের নদীর তীরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আগামী শনিবার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে নতুন সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। গতকাল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অভিযান চালিয়ে ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ঢাকার কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া লঞ্চঘাট থেকে বাবুবাজার ব্রিজের কাছাকাছি মান্দাইল গোকুলচর পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনতলা পাকা ভবন ১টি, দোতলা পাকা ভবন ১৩টি, এক তলা পাকা ভবন ৩৭টি, আধাপাকা ভবন ৮৫টি, পাকা বাউন্ডারি ওয়াল ১৭টি ও ৪৫টি টিনসেট ভবনসহ ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ২ একর নদীর ভূমি অবমুক্ত করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন সংবাদকে বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ ও দখল প্রতিরোধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় চতুর্থ দফায় এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। মঙ্গলবার ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার একই স্থান থেকে আবার অভিযান শুরু হবে। নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বিস্তৃত ‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে যোগান দেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি গত জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হবার কথা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মোট ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের ৩৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটারই নির্মিত হবে নদীর নিচু তীরভূমিতে। ১০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে নদীর উঁচু তীরভূমিতে। ৫ দশমিক ৯২ কিলোমিটার নদীর তীরভূমিতে কলামের উপর ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণ করা হবে। দশমিক ৩০ কিলোমিটার পায়ে হাঁটার সেতু নির্মাণ করা হবে। ৪৪ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার তীররক্ষা কাজ করা হবে। ১ কিলোমিটার ওয়াল নির্মাণ করা হবে। ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়াসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। ৩টি ইকো-পার্ক নির্মাণ করা হবে। ১৯টি জেটি নির্মাণ করা হবে এবং ১ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢাকার চারপাশের নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর এম. মাহবুব উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চতুর্থ দফা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন মোট ১২ দিন এই অভিযান চলবে। ঢাকার চারটি নদীর তীর উচ্ছেদ করে সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। এর জন্য ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। আগামী শনিবার কেরানীগঞ্জ এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রমের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করা হবে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর।

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০১৯ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৫, ২৯ শাওয়াল ১৪৪০

বুড়িগঙ্গার তীরে ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নতুন করে সীমানা পিলার স্থাপন শুরু শনিবার থেকে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

বুড়িগঙ্গার তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নদী দখল ও দূষণরোধে ঢাকার চারপাশের নদীর তীরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আগামী শনিবার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে নতুন সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। গতকাল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অভিযান চালিয়ে ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ঢাকার কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া লঞ্চঘাট থেকে বাবুবাজার ব্রিজের কাছাকাছি মান্দাইল গোকুলচর পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনতলা পাকা ভবন ১টি, দোতলা পাকা ভবন ১৩টি, এক তলা পাকা ভবন ৩৭টি, আধাপাকা ভবন ৮৫টি, পাকা বাউন্ডারি ওয়াল ১৭টি ও ৪৫টি টিনসেট ভবনসহ ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ২ একর নদীর ভূমি অবমুক্ত করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন সংবাদকে বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ ও দখল প্রতিরোধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় চতুর্থ দফায় এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। মঙ্গলবার ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার একই স্থান থেকে আবার অভিযান শুরু হবে। নৌমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বিস্তৃত ‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে যোগান দেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি গত জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হবার কথা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মোট ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের ৩৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটারই নির্মিত হবে নদীর নিচু তীরভূমিতে। ১০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে নদীর উঁচু তীরভূমিতে। ৫ দশমিক ৯২ কিলোমিটার নদীর তীরভূমিতে কলামের উপর ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণ করা হবে। দশমিক ৩০ কিলোমিটার পায়ে হাঁটার সেতু নির্মাণ করা হবে। ৪৪ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার তীররক্ষা কাজ করা হবে। ১ কিলোমিটার ওয়াল নির্মাণ করা হবে। ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়াসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। ৩টি ইকো-পার্ক নির্মাণ করা হবে। ১৯টি জেটি নির্মাণ করা হবে এবং ১ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢাকার চারপাশের নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর এম. মাহবুব উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চতুর্থ দফা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন মোট ১২ দিন এই অভিযান চলবে। ঢাকার চারটি নদীর তীর উচ্ছেদ করে সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। এর জন্য ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। আগামী শনিবার কেরানীগঞ্জ এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রমের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করা হবে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর।