সুস্থ হলেও ভুগতে হবে দীর্ঘদিন কিশোর ভ্যান চালক শাহীনকে

চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলেও যশোরের কিশোর ভ্যানচালক শাহীন মোড়লের (১৬) শরীরের ডান পাশের অঙ্গগুলো তাকে ভোগাবে। অনুভূতিহীন থাকবে দীর্ঘদিন। তবে ঠিকমতো পরিচর্যা পেলে এ অবস্থা সে ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠতে পারবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শাহীনের চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই বোর্ড ও নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, শাহীনের মাথার বাম পাশে সবচেয়ে বেশি আঘাত করা হয়েছে। খুলির এ অংশের হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়ে মস্তিষ্কের বাম পাশে আঘাত করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় আমরা যেটিকে বলছি ডিপ্রেসড ফ্র্যাকচার। এ জন্য শাহীন যদি পুরোপুরি সুস্থও হয় তারপরও দীর্ঘদিন ধরে শরীরের ডান পাশের অঙ্গগুলো দুর্বল ও অনুভূতিহীন থাকবে।

শাহীনের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, গত সোমবার পর্যন্ত শাহীন বেশ ভালো ছিল। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জ্বর এসেছে। এটিই ভয়ের বিষয়। কারণ, এই অবস্থায় জ্বর হওয়া মানেই শরীরের কোথাও না কোথাও ইনফেকশন হওয়া। গত ১৩ জুন সাতক্ষীরায় দুর্বৃত্তরা শাহীনের ভ্যান ছিনতাইয়ের সময় তার মাথায় আঘাত করে ফেলে রেখে চলে যায়। শাহীনের বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। গোলাঘাটা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে নিজের ও ছোট দুই বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে ভ্যান চালাত সে।

এদিকে গত সোমবার শাহীনের ওপর হামলা চালিয়েছে এমন সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরা পুলিশ। তারা হলো যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের নাইমুল ইসলাম (২৪), সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের আরশাদ পাড় (৬৫) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের বাকের আলী (৪৫)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, এই তিনজন শাহীনের ভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে মুঠোফোনে ডেকে নেন। ছিনতাইয়ের সময় শাহীন বাধা দিলে তাকে আঘাত করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে শাহীনের পরিবার। গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহীনের মা খাদিজা বেগম বলেন, আমার ছেলের কোন দোষ ছিল না। যারা মেরেছে তাদের একজন আমাদের গ্রামের। সে আমাদের অভাব আর শাহীনের কষ্ট করে টাকা আয়ের কথা জানত। তারপরও নিষ্ঠুরের মতো ছেলেটাকে মেরে এই অবস্থা করেছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০১৯ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৫, ২৯ শাওয়াল ১৪৪০

সুস্থ হলেও ভুগতে হবে দীর্ঘদিন কিশোর ভ্যান চালক শাহীনকে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলেও যশোরের কিশোর ভ্যানচালক শাহীন মোড়লের (১৬) শরীরের ডান পাশের অঙ্গগুলো তাকে ভোগাবে। অনুভূতিহীন থাকবে দীর্ঘদিন। তবে ঠিকমতো পরিচর্যা পেলে এ অবস্থা সে ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠতে পারবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শাহীনের চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই বোর্ড ও নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, শাহীনের মাথার বাম পাশে সবচেয়ে বেশি আঘাত করা হয়েছে। খুলির এ অংশের হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়ে মস্তিষ্কের বাম পাশে আঘাত করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় আমরা যেটিকে বলছি ডিপ্রেসড ফ্র্যাকচার। এ জন্য শাহীন যদি পুরোপুরি সুস্থও হয় তারপরও দীর্ঘদিন ধরে শরীরের ডান পাশের অঙ্গগুলো দুর্বল ও অনুভূতিহীন থাকবে।

শাহীনের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, গত সোমবার পর্যন্ত শাহীন বেশ ভালো ছিল। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জ্বর এসেছে। এটিই ভয়ের বিষয়। কারণ, এই অবস্থায় জ্বর হওয়া মানেই শরীরের কোথাও না কোথাও ইনফেকশন হওয়া। গত ১৩ জুন সাতক্ষীরায় দুর্বৃত্তরা শাহীনের ভ্যান ছিনতাইয়ের সময় তার মাথায় আঘাত করে ফেলে রেখে চলে যায়। শাহীনের বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। গোলাঘাটা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে নিজের ও ছোট দুই বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে ভ্যান চালাত সে।

এদিকে গত সোমবার শাহীনের ওপর হামলা চালিয়েছে এমন সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরা পুলিশ। তারা হলো যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের নাইমুল ইসলাম (২৪), সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের আরশাদ পাড় (৬৫) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের বাকের আলী (৪৫)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, এই তিনজন শাহীনের ভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে মুঠোফোনে ডেকে নেন। ছিনতাইয়ের সময় শাহীন বাধা দিলে তাকে আঘাত করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে শাহীনের পরিবার। গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহীনের মা খাদিজা বেগম বলেন, আমার ছেলের কোন দোষ ছিল না। যারা মেরেছে তাদের একজন আমাদের গ্রামের। সে আমাদের অভাব আর শাহীনের কষ্ট করে টাকা আয়ের কথা জানত। তারপরও নিষ্ঠুরের মতো ছেলেটাকে মেরে এই অবস্থা করেছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।