৫ দিনের পাটপণ্যের মেলা উদ্বোধন

পাটের স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণের তাগিদ শিল্পমন্ত্রীর

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার অনেক ছোট, মাত্র ১ শতাংশ। পাটের স্থানীয় বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। এজন্য বহুমুখী পাটপণ্যের নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে করিম চেম্বারে জুট ডাইভার্সিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)-এর উদ্যোগে পাঁচদিনের বহুমুখী পাটপণ্য মেলার উদ্বোধনের সময় শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, জেডিপিসি-এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী রাশেদুল করিম মুন্না বক্তৃতা করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার অনেক ছোট, মাত্র ১ শতাংশ। পাটের স্থানীয় বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। এজন্য বহুমুখী পাটপণ্যের নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাদের নরসিংদী পাটকল, বিসিক শিল্পনগরীসহ অন্যান্য স্থানে প্লট প্রদান করা হবে বলে শিল্পমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশে পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে শুধু নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে নয়, পাটপণ্যের মেলা বছরজুড়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে আয়োজন করতে হবে। সেই সঙ্গে ঢাকার বাইরে সব জেলাতেও নিয়মিত মেলার আয়োজন করতে হবে। পাটপণ্যের মূল্য যাতে সাধারণ জনগণের সাধ্যের মধ্যে থাকে সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি শিল্পমন্ত্রী আহ্বান জানান।

দেশে রাজনৈতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতার বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তাব নিয়ে প্রতিদিন আসছেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরও বিনিয়োগের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার হার প্রশংসনীয়। সরকার চায় আরও অধিক সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখুক। এ জন্য তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বহুমুখী পাটপণ্যের একটি বিশাল বাজার রয়েছে। এদেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে পাটপণ্য পৌঁছে দিতে হবে। ভারতে উৎপাদিত পাটের ৮০ ভাগ স্থানীয়ভাবে ব্যবহার হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পাটপণ্যের উদ্যোক্তাদের বিদেশে রপ্তানির আগে দেশীয় বাজারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। আর্থিক সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেলে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ক্ষতিকর পলিথিনের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রতিদিন ১ লক্ষ পিস পাটের তৈরি ‘সোনালী ব্যাগ’ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই পাটের ব্যাগ বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পাটের শুধু আঁশ নয়, পাটকাঠিও একটি সম্ভাবনাপূর্ণ পণ্য। পাটকাঠি থেকে কয়লা উৎপাদন করে তা বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে পাটপাতার বিশাল চাহিদার কথা উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, গতবছর আড়াই টন পাট পাতা জার্মানিতে রপ্তানি করা হয়েছে। এ বছর পাঁচ টন পাটপাতা রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, দেশের কৃষক শ্রেণীসহ প্রায় ৪ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারতের পাটের চেয়ে বাংলাদেশর পাটের মান উন্নত। কৃষকরা যেন পাট উৎপাদনে উন্নত বীজ ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যাবহার করতে পারেন সেদিকে আরও মনযোগী হবার আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত সচিব। তিনি বলেন, সরকার পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পরে শিল্পমন্ত্রী পাঁচ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, ভারপ্রাপ্ত সচিব, জেডিপিসি নির্বাহী পরিচালক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০১৯ , ২০ আষাঢ় ১৪২৫, ৩০ শাওয়াল ১৪৪০

৫ দিনের পাটপণ্যের মেলা উদ্বোধন

পাটের স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণের তাগিদ শিল্পমন্ত্রীর

অর্থনৈকিত বার্তা পরিবেশক

image

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার অনেক ছোট, মাত্র ১ শতাংশ। পাটের স্থানীয় বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। এজন্য বহুমুখী পাটপণ্যের নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে করিম চেম্বারে জুট ডাইভার্সিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)-এর উদ্যোগে পাঁচদিনের বহুমুখী পাটপণ্য মেলার উদ্বোধনের সময় শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, জেডিপিসি-এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী রাশেদুল করিম মুন্না বক্তৃতা করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার অনেক ছোট, মাত্র ১ শতাংশ। পাটের স্থানীয় বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। এজন্য বহুমুখী পাটপণ্যের নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাদের নরসিংদী পাটকল, বিসিক শিল্পনগরীসহ অন্যান্য স্থানে প্লট প্রদান করা হবে বলে শিল্পমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশে পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে শুধু নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে নয়, পাটপণ্যের মেলা বছরজুড়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে আয়োজন করতে হবে। সেই সঙ্গে ঢাকার বাইরে সব জেলাতেও নিয়মিত মেলার আয়োজন করতে হবে। পাটপণ্যের মূল্য যাতে সাধারণ জনগণের সাধ্যের মধ্যে থাকে সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি শিল্পমন্ত্রী আহ্বান জানান।

দেশে রাজনৈতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতার বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তাব নিয়ে প্রতিদিন আসছেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরও বিনিয়োগের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার হার প্রশংসনীয়। সরকার চায় আরও অধিক সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখুক। এ জন্য তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বহুমুখী পাটপণ্যের একটি বিশাল বাজার রয়েছে। এদেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে পাটপণ্য পৌঁছে দিতে হবে। ভারতে উৎপাদিত পাটের ৮০ ভাগ স্থানীয়ভাবে ব্যবহার হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পাটপণ্যের উদ্যোক্তাদের বিদেশে রপ্তানির আগে দেশীয় বাজারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। আর্থিক সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেলে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ক্ষতিকর পলিথিনের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রতিদিন ১ লক্ষ পিস পাটের তৈরি ‘সোনালী ব্যাগ’ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই পাটের ব্যাগ বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পাটের শুধু আঁশ নয়, পাটকাঠিও একটি সম্ভাবনাপূর্ণ পণ্য। পাটকাঠি থেকে কয়লা উৎপাদন করে তা বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে পাটপাতার বিশাল চাহিদার কথা উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, গতবছর আড়াই টন পাট পাতা জার্মানিতে রপ্তানি করা হয়েছে। এ বছর পাঁচ টন পাটপাতা রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, দেশের কৃষক শ্রেণীসহ প্রায় ৪ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারতের পাটের চেয়ে বাংলাদেশর পাটের মান উন্নত। কৃষকরা যেন পাট উৎপাদনে উন্নত বীজ ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যাবহার করতে পারেন সেদিকে আরও মনযোগী হবার আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত সচিব। তিনি বলেন, সরকার পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পরে শিল্পমন্ত্রী পাঁচ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, ভারপ্রাপ্ত সচিব, জেডিপিসি নির্বাহী পরিচালক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।