রাজধানীর তিন সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ

বিকল্প ব্যবস্থা না করে রাজধানীর তিনটি প্রধান সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। এগুলো হলো- রাজধানীর কুড়িল-রামপুরা-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আসাদগেট-আজিমপুর ও সাইন্সল্যাব-শাহবাগ। এই তিনটি সড়কে আগামী ৭ জুলাই থেকে রিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া এই সড়কগুলোতে ফুটপাত হকারমুক্ত করা, অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও লেগুনা চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশপাশি সড়কের পাশের যেসব ভবন বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে, ভবনের র‌্যাম্প ফুটপাতে চলে এসেছে। এগুলো পথচারী চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। রাজউক এসব ভবন চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

গতকাল ডিএসসিসির নগর ভবনে ‘ঢাকা মহানগরীর অবৈধ যানবাহন দূর/বন্ধ, ফুটপাথ দখলমুক্ত ও অবৈধ পার্কিং বন্ধে’ গঠিত কমিটির প্রথম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, ডিটিসি এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। গত ১৯ জুন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) বৈঠকে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কুড়িল থেকে বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ, গাবতলী থেকে আসাদগেট, সাইন্সল্যাব হয়ে আজিমপুর পর্যন্ত ও সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে কোন রিকশা চলাচল করবে না। রিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ার কারণে নাগরিকদের যেন চলাচলে সমস্যা না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাত্রীদের যেন যানবাহন পেতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য পরিবহন মালিক সমিতি এবং বিআরটিসি পর্যাপ্ত বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া মহানগরীর সড়কের দুপাশে ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘœ করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে। এসব সড়কের পাশের যেসব ভবন বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে, ভবনের র‌্যাম্প ফুটপাতে চলে এসেছে। এগুলো পথচারী চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। রাজউক এসব ভবন চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়া নির্দেশনা দিয়েছে।

মেয়র বলেন, সাতদিন পর কমিটি আবার বৈঠকে বসে এই কমিটি কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে। এই কমিটির মূল দায়িত্ব পর্যায়ক্রমে ঢাকার মূল সড়কে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় সেটা নিশ্চিত করা। এজন্য সড়কে অবৈধ রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অবৈধ লেগুনা অপসারণ করে যানজট পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং ফুটপাত পথচারী চলাচলের উপযোগী করে দেয়া। ঢাকা শহরের সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ডিটিসিএর এই কমিটি গঠিত হয়; যার প্রথম বৈঠক ছিল এটি। বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অনুমোদনহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর দুই রুটে (কুড়িল থেকে খিলগাঁও, রামপুরা হয়ে সায়েদাবাদ এবং গাবতলী থেকে আসাদগেট মিরপুর রোড হয়ে আজিমপুর ও সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে রিকশার পাশাপাশি অন্য অবৈধ যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

সাঈদ খোকন বলেন, সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখলকৃত স্থাপনা, অবৈধভাবে নির্মিত ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদে কাজ করা হবে। সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখল করে যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজ নিজ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অপসারণ করবে। এ বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা ও হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অ-অনুমোদিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, রিকশা এবং এসব যানবাহন বন্ধের কারণে আমাদের নগরবাসীদের যেন কোন দুর্ভোগ পোহাতে না হয় তার জন্য সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বিআরটিসি এবং পরিবহন মালিক সমিতি। যাত্রীদের চলাচলে সড়কে পর্যাপ্ত পরিমাণ যানবাহনের ব্যবস্থা তাদের পক্ষ থেকে রাখা হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের মনোপলি বা ডিক্টেটরশিপের সুযোগ নেই। পুরো প্রক্রিয়াটি সার্বক্ষণিক আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০১৯ , ২০ আষাঢ় ১৪২৫, ৩০ শাওয়াল ১৪৪০

রাজধানীর তিন সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিকল্প ব্যবস্থা না করে রাজধানীর তিনটি প্রধান সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। এগুলো হলো- রাজধানীর কুড়িল-রামপুরা-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আসাদগেট-আজিমপুর ও সাইন্সল্যাব-শাহবাগ। এই তিনটি সড়কে আগামী ৭ জুলাই থেকে রিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া এই সড়কগুলোতে ফুটপাত হকারমুক্ত করা, অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও লেগুনা চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশপাশি সড়কের পাশের যেসব ভবন বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে, ভবনের র‌্যাম্প ফুটপাতে চলে এসেছে। এগুলো পথচারী চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। রাজউক এসব ভবন চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

গতকাল ডিএসসিসির নগর ভবনে ‘ঢাকা মহানগরীর অবৈধ যানবাহন দূর/বন্ধ, ফুটপাথ দখলমুক্ত ও অবৈধ পার্কিং বন্ধে’ গঠিত কমিটির প্রথম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, ডিটিসি এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। গত ১৯ জুন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) বৈঠকে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কুড়িল থেকে বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ, গাবতলী থেকে আসাদগেট, সাইন্সল্যাব হয়ে আজিমপুর পর্যন্ত ও সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে কোন রিকশা চলাচল করবে না। রিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ার কারণে নাগরিকদের যেন চলাচলে সমস্যা না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাত্রীদের যেন যানবাহন পেতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য পরিবহন মালিক সমিতি এবং বিআরটিসি পর্যাপ্ত বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া মহানগরীর সড়কের দুপাশে ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘœ করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে। এসব সড়কের পাশের যেসব ভবন বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে, ভবনের র‌্যাম্প ফুটপাতে চলে এসেছে। এগুলো পথচারী চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। রাজউক এসব ভবন চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়া নির্দেশনা দিয়েছে।

মেয়র বলেন, সাতদিন পর কমিটি আবার বৈঠকে বসে এই কমিটি কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে। এই কমিটির মূল দায়িত্ব পর্যায়ক্রমে ঢাকার মূল সড়কে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় সেটা নিশ্চিত করা। এজন্য সড়কে অবৈধ রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অবৈধ লেগুনা অপসারণ করে যানজট পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং ফুটপাত পথচারী চলাচলের উপযোগী করে দেয়া। ঢাকা শহরের সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ডিটিসিএর এই কমিটি গঠিত হয়; যার প্রথম বৈঠক ছিল এটি। বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অনুমোদনহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর দুই রুটে (কুড়িল থেকে খিলগাঁও, রামপুরা হয়ে সায়েদাবাদ এবং গাবতলী থেকে আসাদগেট মিরপুর রোড হয়ে আজিমপুর ও সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে রিকশার পাশাপাশি অন্য অবৈধ যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

সাঈদ খোকন বলেন, সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখলকৃত স্থাপনা, অবৈধভাবে নির্মিত ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদে কাজ করা হবে। সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখল করে যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজ নিজ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অপসারণ করবে। এ বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা ও হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অ-অনুমোদিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, রিকশা এবং এসব যানবাহন বন্ধের কারণে আমাদের নগরবাসীদের যেন কোন দুর্ভোগ পোহাতে না হয় তার জন্য সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বিআরটিসি এবং পরিবহন মালিক সমিতি। যাত্রীদের চলাচলে সড়কে পর্যাপ্ত পরিমাণ যানবাহনের ব্যবস্থা তাদের পক্ষ থেকে রাখা হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের মনোপলি বা ডিক্টেটরশিপের সুযোগ নেই। পুরো প্রক্রিয়াটি সার্বক্ষণিক আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে জানান তিনি।