মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন

বংশাই ও ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন

নদীতে বিলীন সড়ক-ফসলি জমি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে বংশাই ও ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে কুর্ণী-ফতেপুর সড়কের কালভার্টসহ প্রায় ৪০০ ফুট রাস্তা নদীগর্ভে চলে গেছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। এতে চাকলেশ্বর, থলপাড়া, বৈলানপুর-পাতিলাপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনের তীব্রতার কারণে এরই মধ্যে রাস্তা, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হিলরা বাজারের উত্তর পাশের অধিকাংশ স্থান ভেঙে গেছে। বাজারের পাশ দিয়ে এলজিইডি নির্মিত রাস্তাটি কালভার্টসহ ভেঙে গেছে। পানি বাড়ার পাশাপাশি নদী থেকে বালু তোলাই ভাঙনের কারণ বলে জানা গেছে। শুকনো মৌসুমে নদীর পাড় থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা এবং বর্ষা মৌসুমে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছরই এলাকায় ভাঙন শুরু হয় এবং রাস্তা-ঘাট, আবাদি জমিসহ ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এর প্রতিকারে এখনো কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙনের ফলে নদীর পাশে থাকা আবাদি জমির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৫০০ যানবাহন চলতো এখন সেখানে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র স্থানীয়দের মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আবদুল হক মিয়া জানান, ভাঙনের ফলে আগে যেখানে প্রায় ৩০০ সিএনজি চলতো এখন সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মাত্র ৬০-৭০টি সিএনজি চলে। বাকিরা অন্য জায়গা দিয়ে সিএনজি চালাচ্ছেন। এতে তাদের আয়ও কমে গেছে। ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ খান জানান, পাতিলাপাড়া-বৈলানপুর এলাকার পানি নদীতে ফেলতে প্রায় ১৫ বছর আগে কালভার্ট স্থাপন করা হয়েছিল। আর চার বছর আগে রাস্তা সংস্কার করার সময় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছিল। যার কোন প্রয়োজনই ছিল না। কী কারণে কালভার্ট নির্মাণ করা হয় তা তার বোধগম্য নয়। পাইপের মাথায় কালভার্ট থাকাতে পানি চুইয়ে নদীতে পড়ায় কালভার্টের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা ড্রেজার দিয়ে একই স্থানে নদী থেকে বালু তোলে। ফলে হিলরা বাজারের উত্তর পাশসহ, কালভার্ট ও সড়ক নদীতে ভেঙে গেছে। থলপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, ওই এলাকা প্রতিবছরই নদীভাঙনের শিকার হয়। কিন্তু ভাঙন রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয় না। জরুরিভিত্তিতে এর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

মির্জাপুর উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০১৯ , ২২ আষাঢ় ১৪২৫, ২ জ্বিলকদ ১৪৪০

মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন

বংশাই ও ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন

নদীতে বিলীন সড়ক-ফসলি জমি

প্রতিনিধি, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

image

মির্জাপুরে বংশাই ও ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় মাটিকাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে বংশাই ও ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে কুর্ণী-ফতেপুর সড়কের কালভার্টসহ প্রায় ৪০০ ফুট রাস্তা নদীগর্ভে চলে গেছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। এতে চাকলেশ্বর, থলপাড়া, বৈলানপুর-পাতিলাপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনের তীব্রতার কারণে এরই মধ্যে রাস্তা, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হিলরা বাজারের উত্তর পাশের অধিকাংশ স্থান ভেঙে গেছে। বাজারের পাশ দিয়ে এলজিইডি নির্মিত রাস্তাটি কালভার্টসহ ভেঙে গেছে। পানি বাড়ার পাশাপাশি নদী থেকে বালু তোলাই ভাঙনের কারণ বলে জানা গেছে। শুকনো মৌসুমে নদীর পাড় থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা এবং বর্ষা মৌসুমে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছরই এলাকায় ভাঙন শুরু হয় এবং রাস্তা-ঘাট, আবাদি জমিসহ ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এর প্রতিকারে এখনো কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙনের ফলে নদীর পাশে থাকা আবাদি জমির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৫০০ যানবাহন চলতো এখন সেখানে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র স্থানীয়দের মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আবদুল হক মিয়া জানান, ভাঙনের ফলে আগে যেখানে প্রায় ৩০০ সিএনজি চলতো এখন সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মাত্র ৬০-৭০টি সিএনজি চলে। বাকিরা অন্য জায়গা দিয়ে সিএনজি চালাচ্ছেন। এতে তাদের আয়ও কমে গেছে। ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ খান জানান, পাতিলাপাড়া-বৈলানপুর এলাকার পানি নদীতে ফেলতে প্রায় ১৫ বছর আগে কালভার্ট স্থাপন করা হয়েছিল। আর চার বছর আগে রাস্তা সংস্কার করার সময় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছিল। যার কোন প্রয়োজনই ছিল না। কী কারণে কালভার্ট নির্মাণ করা হয় তা তার বোধগম্য নয়। পাইপের মাথায় কালভার্ট থাকাতে পানি চুইয়ে নদীতে পড়ায় কালভার্টের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা ড্রেজার দিয়ে একই স্থানে নদী থেকে বালু তোলে। ফলে হিলরা বাজারের উত্তর পাশসহ, কালভার্ট ও সড়ক নদীতে ভেঙে গেছে। থলপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, ওই এলাকা প্রতিবছরই নদীভাঙনের শিকার হয়। কিন্তু ভাঙন রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয় না। জরুরিভিত্তিতে এর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

মির্জাপুর উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।