বিশ্ব ঐতিহ্যে ব্যাবিলন

চার হাজার বছরের পুরনো মেসোপটেমিয়া সভ্যতার ইরাকি নগরী ব্যাবিলনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। প্রাচীন এ নগরীর বিখ্যাত ঝুলন্ত বাগান এক সময় পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি ছিল। তবে বিভিন্ন সহিংসতায় বিগত কয়েক বছরে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওই নগরীর প্রাচীন নিদর্শনের। ইরাকের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান সাদ্দাম হোসেনের প্রাসাদ তৈরি ও পরে মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটি তৈরির সময়ে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাবিলন।

প্রাচীন এ নগরীটিকে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিতে ১৯৮৩ সাল থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল ইরাক। যেসব নগরীর স্থাপনা পুরো মানব জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয় সেসব এলাকা বা স্থাপনাকে মর্যাদাপূর্ণ এ তালিকায় স্থান দেয় ইউনেস্কো। একবার তালিকাভুক্ত হলে আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে তার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। গত শুক্রবার আজারবাইজানে জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সভায় ব্যাবিলনকে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময়ে জাতিসংঘ বলেছে, হাম্মুরাবি ও নেরুচাদনেজারের মতো সফল শাসকদের অধীনে ব্যাবিলন শহর ব্যাবিলীয় সভ্যতার সৃষ্টিশীলতার গভীরতার প্রতিনিধিত্ব করে। প্রাচীন ব্যবিলন নগরী মারাত্মক দুর্বল অবস্থায় আছে বলে সতর্ক করে দিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি জানিয়েছে, অতি দ্রুত এর সংরক্ষণ দরকার। ১৯৮০-এর দশকে ইরাকের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেন প্রাচীন নগরীর বড় একটি অংশ ধ্বংস করে ফেলেন। মূল স্থাপনার অনুরূপ মডেল স্থাপনের জন্য ওই সময়ে এই কাজ করেন তিনি। পরে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর প্রাচীন নগরীর আরেকটি অংশে নিজের জন্য এক সুরম্য প্রাসাদ নির্মাণ করেন সাদ্দাম। ২০০৫ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়াম সতর্ক করে দিয়ে জানায়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট প্রাচীন নগরীর মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়েছে। ওই সময়ে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের রক্ষক জন কার্টিস জানান, প্রাচীন নগরীর বড় একটি অংশ ট্যাঙ্ক চালিয়ে নষ্ট করেছে মার্কিন বাহিনী। এছাড়া প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের নানা অংশ জুড়ে ১২টি পরিখা খনন করা হয় বলে জানান তিনি।

রবিবার, ০৭ জুলাই ২০১৯ , ২৩ আষাঢ় ১৪২৫, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪০

বিশ্ব ঐতিহ্যে ব্যাবিলন

সংবাদ ডেস্ক

image

চার হাজার বছরের পুরনো মেসোপটেমিয়া সভ্যতার ইরাকি নগরী ব্যাবিলনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। প্রাচীন এ নগরীর বিখ্যাত ঝুলন্ত বাগান এক সময় পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি ছিল। তবে বিভিন্ন সহিংসতায় বিগত কয়েক বছরে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওই নগরীর প্রাচীন নিদর্শনের। ইরাকের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান সাদ্দাম হোসেনের প্রাসাদ তৈরি ও পরে মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটি তৈরির সময়ে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাবিলন।

প্রাচীন এ নগরীটিকে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিতে ১৯৮৩ সাল থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল ইরাক। যেসব নগরীর স্থাপনা পুরো মানব জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয় সেসব এলাকা বা স্থাপনাকে মর্যাদাপূর্ণ এ তালিকায় স্থান দেয় ইউনেস্কো। একবার তালিকাভুক্ত হলে আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে তার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। গত শুক্রবার আজারবাইজানে জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সভায় ব্যাবিলনকে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময়ে জাতিসংঘ বলেছে, হাম্মুরাবি ও নেরুচাদনেজারের মতো সফল শাসকদের অধীনে ব্যাবিলন শহর ব্যাবিলীয় সভ্যতার সৃষ্টিশীলতার গভীরতার প্রতিনিধিত্ব করে। প্রাচীন ব্যবিলন নগরী মারাত্মক দুর্বল অবস্থায় আছে বলে সতর্ক করে দিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি জানিয়েছে, অতি দ্রুত এর সংরক্ষণ দরকার। ১৯৮০-এর দশকে ইরাকের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেন প্রাচীন নগরীর বড় একটি অংশ ধ্বংস করে ফেলেন। মূল স্থাপনার অনুরূপ মডেল স্থাপনের জন্য ওই সময়ে এই কাজ করেন তিনি। পরে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর প্রাচীন নগরীর আরেকটি অংশে নিজের জন্য এক সুরম্য প্রাসাদ নির্মাণ করেন সাদ্দাম। ২০০৫ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়াম সতর্ক করে দিয়ে জানায়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট প্রাচীন নগরীর মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়েছে। ওই সময়ে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের রক্ষক জন কার্টিস জানান, প্রাচীন নগরীর বড় একটি অংশ ট্যাঙ্ক চালিয়ে নষ্ট করেছে মার্কিন বাহিনী। এছাড়া প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের নানা অংশ জুড়ে ১২টি পরিখা খনন করা হয় বলে জানান তিনি।