সোনালী ব্যাংকের ২২ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

সোনালী ব্যাংকের ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ওই ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছর সনদ জালিয়াতি ও জ্যেষ্ঠতার নিয়ম লঙ্ঘন করে পদোন্নতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট ‘সংবাদ’-এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নূর আলম সিদ্দিকীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পেয়ে তিনি গত ১৮ এপ্রিল অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ২২ জনকে নোটিশ দেন। নোটিশ পেয়ে অনেকেই দুদকে গিয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সোনালী ব্যাংকের ওই ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা জ্যেষ্ঠতা ও অভিজ্ঞাতা পাশ কাটিয়ে অনিয়ম এবং অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে পদোন্নতি নিয়েছেন। তাদের নিয়োগ থেকে শুরু করে চারবার পদবিবদল ও তিনবার পদোন্নতিÑ সবই অনিয়মের মাধ্যমে হয়েছে। নিয়োগের সময় দেয়া তাদের বিভিন্ন সনদ ছিল বানানো। একই সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতাও ছিল না। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাদের ব্যাংকটির সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) পদে পদোন্নতি হয়েছে। এরপর বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় দুদক।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, মো. মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া, ইনফরমেশন টেকনোলজি ডিভিশন (বিজনেস আইটি), সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে জাল কম্পিউটার সার্টিফিকেট এবং ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদের মাধ্যমে অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে চিঠিতে উল্লেখিত বর্তমান নির্বাহীদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ উপস্থিত হয়ে মোহাম্মদ নূর আলম সিদ্দিকীর কাছে বক্তব্য প্রদানের নির্দেশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বহুদিন ধরে অনৈতিকভাবে এ তদন্ত প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। মাঝখানে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ায় এতে তারা ব্যর্থ হন। একই সঙ্গে তাদের নিয়োগকর্তারাও এটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০০৪ সালে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাসকৃত প্রার্থীকে নিয়োগের পরিকল্পনা ছিল ব্যাংকটির এবং ওই সময় বুয়েটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল নিয়োগ তদারক করার। কিন্তু তৎকালীন সিবিএ নেতা বিএম বাকির হোসেন সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপে বুয়েটের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যমে শুধু কম্পিউটারের টাইপ জানা ভুয়া কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ ও অভিজ্ঞতা সনদধারী ১০০ জনকে কম্পিউটার অপারেটর ও প্রায় ৫০ জনকে সিনিয়র কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ব্যাংকিং আইন অনুসারে ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে শুরুতে ফাউন্ডেশন কোর্স করা বাধ্যতামূলক হলেও পদোন্নতিপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তাদের নেই কোন ফাউন্ডেশন কোর্সের সত্যতা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতাও নেই। ব্যাংকিংয়ের সাধারণ কোন যোগ্যতাও নেই। এমনকি কম্পিউটার জ্ঞানও নেই তাদের। তাদের পর্যাপ্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বারবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১৯৮৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন বারবার।

সূত্র বলছে, ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী সিনিয়র অফিসাররা যেখানে ৯ থেকে ১০ বছর পর পর পদোন্নতি পান, সেখানে তখন অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ভুয়া সার্টিফিকেটধারী এসব কর্মকর্তা মাত্র তিন বছরে পদোন্নতি পেয়েছেন (যদিও তখন প্রথম পদোন্নতি কমপক্ষে ৫ বছরের আগে পাওয়া যেত না)। ২০০৮ সালে প্যাকেজ ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে তারা প্রথমে কম্পিউটার সিস্টেম অফিসার, পরে অ্যাসিস্ট্যান্স অপারেশন ম্যানেজার হোন। এরপর থেকে তাদের পদোন্নতির দৌড় আর থামেনি। ২০১২ সালে ওই ব্যক্তিরাই অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। আবার ওই একই ব্যক্তিরা ২০১৪ সালে ব্যাংকটির তৎকালীন এমডি প্রদীপ দত্ত ও জিএম শহিদ হোসেনের সঙ্গে একটি বড় প্যাকেজ ঘুষের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে ব্যাংকের মূলধারায় চলে আসেন। বর্তমানে তাদের মধ্য থেকে ২২ জন এজিএম হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব ব্যক্তির মাঠপর্যায়ে চাকরির অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। ম্যানেজার, ঋণ কর্মকর্তা, সাধারণ ব্যাংকিং, এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতা নেই। শিল্পঋণে কাজের অভিজ্ঞতাও একজনের নেই।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা ব্যাংক খাতের মূলধারায় চলে আসায় শুধু দক্ষ সিনিয়র ব্যাংকারদের পদোন্নতিবঞ্চিত করেননি, বরং দেশের ব্যাংকিং খাতে ভবিষ্যতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। এই অচলাবস্থা চলতে থাকলে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অদক্ষ-অযোগ্যদের বারবার পদোন্নতি দেয়া হলে ভবিষ্যতে সোনালী ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

রবিবার, ০৭ জুলাই ২০১৯ , ২৩ আষাঢ় ১৪২৫, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪০

সোনালী ব্যাংকের ২২ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সোনালী ব্যাংকের ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ওই ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছর সনদ জালিয়াতি ও জ্যেষ্ঠতার নিয়ম লঙ্ঘন করে পদোন্নতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট ‘সংবাদ’-এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নূর আলম সিদ্দিকীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পেয়ে তিনি গত ১৮ এপ্রিল অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ২২ জনকে নোটিশ দেন। নোটিশ পেয়ে অনেকেই দুদকে গিয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সোনালী ব্যাংকের ওই ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা জ্যেষ্ঠতা ও অভিজ্ঞাতা পাশ কাটিয়ে অনিয়ম এবং অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে পদোন্নতি নিয়েছেন। তাদের নিয়োগ থেকে শুরু করে চারবার পদবিবদল ও তিনবার পদোন্নতিÑ সবই অনিয়মের মাধ্যমে হয়েছে। নিয়োগের সময় দেয়া তাদের বিভিন্ন সনদ ছিল বানানো। একই সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতাও ছিল না। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাদের ব্যাংকটির সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) পদে পদোন্নতি হয়েছে। এরপর বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় দুদক।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, মো. মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া, ইনফরমেশন টেকনোলজি ডিভিশন (বিজনেস আইটি), সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে জাল কম্পিউটার সার্টিফিকেট এবং ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদের মাধ্যমে অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে চিঠিতে উল্লেখিত বর্তমান নির্বাহীদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ উপস্থিত হয়ে মোহাম্মদ নূর আলম সিদ্দিকীর কাছে বক্তব্য প্রদানের নির্দেশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বহুদিন ধরে অনৈতিকভাবে এ তদন্ত প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। মাঝখানে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ায় এতে তারা ব্যর্থ হন। একই সঙ্গে তাদের নিয়োগকর্তারাও এটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০০৪ সালে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাসকৃত প্রার্থীকে নিয়োগের পরিকল্পনা ছিল ব্যাংকটির এবং ওই সময় বুয়েটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল নিয়োগ তদারক করার। কিন্তু তৎকালীন সিবিএ নেতা বিএম বাকির হোসেন সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপে বুয়েটের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যমে শুধু কম্পিউটারের টাইপ জানা ভুয়া কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ ও অভিজ্ঞতা সনদধারী ১০০ জনকে কম্পিউটার অপারেটর ও প্রায় ৫০ জনকে সিনিয়র কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ব্যাংকিং আইন অনুসারে ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে শুরুতে ফাউন্ডেশন কোর্স করা বাধ্যতামূলক হলেও পদোন্নতিপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তাদের নেই কোন ফাউন্ডেশন কোর্সের সত্যতা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতাও নেই। ব্যাংকিংয়ের সাধারণ কোন যোগ্যতাও নেই। এমনকি কম্পিউটার জ্ঞানও নেই তাদের। তাদের পর্যাপ্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বারবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১৯৮৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন বারবার।

সূত্র বলছে, ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী সিনিয়র অফিসাররা যেখানে ৯ থেকে ১০ বছর পর পর পদোন্নতি পান, সেখানে তখন অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ভুয়া সার্টিফিকেটধারী এসব কর্মকর্তা মাত্র তিন বছরে পদোন্নতি পেয়েছেন (যদিও তখন প্রথম পদোন্নতি কমপক্ষে ৫ বছরের আগে পাওয়া যেত না)। ২০০৮ সালে প্যাকেজ ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে তারা প্রথমে কম্পিউটার সিস্টেম অফিসার, পরে অ্যাসিস্ট্যান্স অপারেশন ম্যানেজার হোন। এরপর থেকে তাদের পদোন্নতির দৌড় আর থামেনি। ২০১২ সালে ওই ব্যক্তিরাই অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। আবার ওই একই ব্যক্তিরা ২০১৪ সালে ব্যাংকটির তৎকালীন এমডি প্রদীপ দত্ত ও জিএম শহিদ হোসেনের সঙ্গে একটি বড় প্যাকেজ ঘুষের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে ব্যাংকের মূলধারায় চলে আসেন। বর্তমানে তাদের মধ্য থেকে ২২ জন এজিএম হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব ব্যক্তির মাঠপর্যায়ে চাকরির অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। ম্যানেজার, ঋণ কর্মকর্তা, সাধারণ ব্যাংকিং, এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজের অভিজ্ঞতা নেই। শিল্পঋণে কাজের অভিজ্ঞতাও একজনের নেই।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা ব্যাংক খাতের মূলধারায় চলে আসায় শুধু দক্ষ সিনিয়র ব্যাংকারদের পদোন্নতিবঞ্চিত করেননি, বরং দেশের ব্যাংকিং খাতে ভবিষ্যতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। এই অচলাবস্থা চলতে থাকলে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অদক্ষ-অযোগ্যদের বারবার পদোন্নতি দেয়া হলে ভবিষ্যতে সোনালী ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।