দীনেশচন্দ্র গুপ্ত

জন্ম : ৬ ডিসেম্বর, ১৯১১, মুন্সীগঞ্জ

মৃত্যু : ৭ জুলাই, ১৯৩১

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন উপমহাদেশর স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বাঙালি বিপ্লবী। তিনি দীনেশ গুপ্ত নামেই সমধিক পরিচিত। তার ডাকনাম ছিল নসু। তার বাবার নাম সতীশচন্দ্র গুপ্ত ও মায়ের নাম বিনোদিনী দেবী। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ ছিলেন বাব-মায়ের তৃতীয় সন্তান। সতীশচন্দ্র ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মচারী। চাকরির সূত্রে তিনি কিছুকাল গৌরীপুরে অবস্থান করেন। গৌরীপুরের পাঠশালাতেই দীনেশের শিক্ষারম্ভ। পরে নয় বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। প্রথম দিকে দীনেশ ঢাকার গেন্ডারিয়া অঞ্চলে দাদুর বাড়িতে থাকতেন, পরে ওয়ারিতে পৈত্রিক বাসভবনে চলে আসেন।

ছোটবেলা থেকেই দীনেশের মধ্যে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল। তিনি ঢাকা ও মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তার সংগঠন মেদনীপুরে পরপর তিন জন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যা করেছিল।

১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিপ্লবী বিনয় বসুর নেতৃত্বে তিনি ও বাদল গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং (বর্তমান মহাকরণ) ভবনে অভিযান চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা করেন। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দায় পুলিশের সঙ্গে তাদের খন্ডযুদ্ধে বেশ কয়েকজন উচপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারী গুরুতরভাবে আহত হয়। এরপর তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিনয় বসু আর বাদল গুপ্ত আত্মহত্যায় সমর্থ হলেও মৃতপ্রায় দীনেশকে পুলিশ বাঁচিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।

বিচারে তার ফাঁসির আদেশ হয়। মৃত্যুর আগে জেলে বসে তিনি কয়েকটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিগুলো ভারতের বিপ্লবের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং সাহিত্যিক বিচারেও অত্যন্ত মূল্যবান। উপমহাদেশের স্বাধীনতার পর দীনেশ গুপ্ত ও তার অপর দুই সহবিপ্লবীর সম্মানার্থে কলকাতার প্রসিদ্ধ ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (সংক্ষেপে বিবাদীবাগ) রাখা হয়।

ইন্টারনেট

আরও খবর

রবিবার, ০৭ জুলাই ২০১৯ , ২৩ আষাঢ় ১৪২৫, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪০

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত

জন্ম : ৬ ডিসেম্বর, ১৯১১, মুন্সীগঞ্জ

মৃত্যু : ৭ জুলাই, ১৯৩১

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন উপমহাদেশর স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বাঙালি বিপ্লবী। তিনি দীনেশ গুপ্ত নামেই সমধিক পরিচিত। তার ডাকনাম ছিল নসু। তার বাবার নাম সতীশচন্দ্র গুপ্ত ও মায়ের নাম বিনোদিনী দেবী। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ ছিলেন বাব-মায়ের তৃতীয় সন্তান। সতীশচন্দ্র ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মচারী। চাকরির সূত্রে তিনি কিছুকাল গৌরীপুরে অবস্থান করেন। গৌরীপুরের পাঠশালাতেই দীনেশের শিক্ষারম্ভ। পরে নয় বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। প্রথম দিকে দীনেশ ঢাকার গেন্ডারিয়া অঞ্চলে দাদুর বাড়িতে থাকতেন, পরে ওয়ারিতে পৈত্রিক বাসভবনে চলে আসেন।

ছোটবেলা থেকেই দীনেশের মধ্যে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল। তিনি ঢাকা ও মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তার সংগঠন মেদনীপুরে পরপর তিন জন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যা করেছিল।

১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিপ্লবী বিনয় বসুর নেতৃত্বে তিনি ও বাদল গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং (বর্তমান মহাকরণ) ভবনে অভিযান চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা করেন। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দায় পুলিশের সঙ্গে তাদের খন্ডযুদ্ধে বেশ কয়েকজন উচপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারী গুরুতরভাবে আহত হয়। এরপর তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিনয় বসু আর বাদল গুপ্ত আত্মহত্যায় সমর্থ হলেও মৃতপ্রায় দীনেশকে পুলিশ বাঁচিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।

বিচারে তার ফাঁসির আদেশ হয়। মৃত্যুর আগে জেলে বসে তিনি কয়েকটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিগুলো ভারতের বিপ্লবের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং সাহিত্যিক বিচারেও অত্যন্ত মূল্যবান। উপমহাদেশের স্বাধীনতার পর দীনেশ গুপ্ত ও তার অপর দুই সহবিপ্লবীর সম্মানার্থে কলকাতার প্রসিদ্ধ ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (সংক্ষেপে বিবাদীবাগ) রাখা হয়।

ইন্টারনেট