নতুন ভিডিও ভাইরাল

ন্যায়বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা ঘটনায় নতুন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

গতকাল রাতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২৬ জুন চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার ঘটনা শুরু হয় সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে এবং শেষ হয় ১০টা ৩০ মিনিটে। ব্যস্ততম এলাকা কলেজ সড়কে ছাত্রছাত্রী লোকজন আসা-যাওয়া করছে। এর মধ্যে ১০-১২ জনের একটি দল রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে কলেজের রাস্তার পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে যাচ্ছে। ঠিক ১ মিনিট পর তারাই আবার রিফাত শরীফকে ধরাধরি করে নিয়ে আসে। ১৪ মিনিটে তারা মারধর শুরু করে, এর মধ্যে কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো সাদা জামাপরা একজন প্রথম কিল-ঘুষি দিতে শুরু করে; পরে অন্যরা তাতে অংশ নেয়। এমতাবস্থায় তারা ক্যালিক্স স্কুলের গেটের কাছে যায় এবং সেখানে ভয়ংকরভাবে রিফাত রামদা নিয়ে আক্রমণ করে। আক্রমণে নেতৃত্ব দেয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। তৎপরতা দেখে মনে হয় এ কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিফাত ফরাজী। এর মধ্যে হত্যাকারীদের একজনকে হাতে আঘাত লাগা অবস্থায় আহতকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায়। হত্যাকান্ডের সময় রিফাত শরীফের পিছু পিছু তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আগে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর মতোই স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিলিং মিশন চলে মাত্র ৪-৫ মিনিটের মতো। ঘটনাস্থলে ২ জন পুলিশ আসে ২৩ নিটের মাথায়, এরপর আর তাদের দেখা যায়নি। এ ভিডিও নিয়েও বরগুনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তবে একই ভিডিও ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির বিভিন্ন সাক্ষাৎকার নিয়ে ইউটিউবে মিন্নিকে এ ঘটনায় ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যা নিয়ে অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, রিফাত হত্যা মামলার অনেক প্রত্যক্ষদর্শী হলেও প্রকৃত সাক্ষী দেয়ার লোক একমাত্র মিন্নিই। যদি তার স্বামীকে হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ থাকে, তাহলে পুলিশ এর বিরুদ্ধে নিশ্চই অভিযোগ আনবে, বিচার করবেন কোর্ট কিন্তু মিন্নিকে বিতর্কিত বা কোন পক্ষে প্রভাবিত করা হলে তার প্রভাব তদন্তে বা বিচার প্রক্রিয়ায় পড়তে পারে। বরগুনা একজন মানবাধিকার কর্মী বলেন, নয়ন বন্ড গ্রুপ রিফাত শরীফকে হত্যা করেছে এ কথা প্রকাশিত সত্য, নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী গং হত্যা করেছে তাও সত্য। মিন্নি জড়িত থাকলে তা তদন্তসাপেক্ষ কিন্তু নয়ন বন্ড গং ধরা পড়ার আগেই মিন্নিকে চরিত্রহীন বলা এবং এ ঘটনায় মিন্নিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা আসল খুনিদের আড়াল করার প্রবণতাই বটে। তারা বলেন, মিন্নির বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা আছে, পুলিশি তদন্তে প্রমাণ পেলে যেকোন সময় মিন্নিকে গ্রেফাতর দেখানো যাবে। কিন্তু তদন্ত ও বিচারকাজে প্রভাব সৃষ্টির জন্য মিন্নিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা ঠিক নয়।

এদিকে রিফাত হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তি দাবিতে পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরগুনা জেলা শাখা। মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তারসহ অন্যান্যরা স্মারকলিপিতে সই করেন। তারা মিন্নিকে এই মামলায় ভিলেন সাজানো প্রসঙ্গে বলেন, মিন্নি যদি এই ঘটনায় জড়িত থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। জড়িত না থাকলে নানা অপপ্রচারের মাধ্যমে তাকে ছোট করা বা এই মামলায় বেহুদা প্রভাব সৃষ্টি করা অনর্থক।

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০১৯ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৫, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪০

রিফাত হত্যা

নতুন ভিডিও ভাইরাল

ন্যায়বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি

চিত্তরঞ্জন শীল, বরগুনা

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা ঘটনায় নতুন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

গতকাল রাতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২৬ জুন চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার ঘটনা শুরু হয় সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে এবং শেষ হয় ১০টা ৩০ মিনিটে। ব্যস্ততম এলাকা কলেজ সড়কে ছাত্রছাত্রী লোকজন আসা-যাওয়া করছে। এর মধ্যে ১০-১২ জনের একটি দল রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে কলেজের রাস্তার পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে যাচ্ছে। ঠিক ১ মিনিট পর তারাই আবার রিফাত শরীফকে ধরাধরি করে নিয়ে আসে। ১৪ মিনিটে তারা মারধর শুরু করে, এর মধ্যে কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো সাদা জামাপরা একজন প্রথম কিল-ঘুষি দিতে শুরু করে; পরে অন্যরা তাতে অংশ নেয়। এমতাবস্থায় তারা ক্যালিক্স স্কুলের গেটের কাছে যায় এবং সেখানে ভয়ংকরভাবে রিফাত রামদা নিয়ে আক্রমণ করে। আক্রমণে নেতৃত্ব দেয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। তৎপরতা দেখে মনে হয় এ কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিফাত ফরাজী। এর মধ্যে হত্যাকারীদের একজনকে হাতে আঘাত লাগা অবস্থায় আহতকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায়। হত্যাকান্ডের সময় রিফাত শরীফের পিছু পিছু তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আগে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর মতোই স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিলিং মিশন চলে মাত্র ৪-৫ মিনিটের মতো। ঘটনাস্থলে ২ জন পুলিশ আসে ২৩ নিটের মাথায়, এরপর আর তাদের দেখা যায়নি। এ ভিডিও নিয়েও বরগুনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তবে একই ভিডিও ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির বিভিন্ন সাক্ষাৎকার নিয়ে ইউটিউবে মিন্নিকে এ ঘটনায় ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যা নিয়ে অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, রিফাত হত্যা মামলার অনেক প্রত্যক্ষদর্শী হলেও প্রকৃত সাক্ষী দেয়ার লোক একমাত্র মিন্নিই। যদি তার স্বামীকে হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ থাকে, তাহলে পুলিশ এর বিরুদ্ধে নিশ্চই অভিযোগ আনবে, বিচার করবেন কোর্ট কিন্তু মিন্নিকে বিতর্কিত বা কোন পক্ষে প্রভাবিত করা হলে তার প্রভাব তদন্তে বা বিচার প্রক্রিয়ায় পড়তে পারে। বরগুনা একজন মানবাধিকার কর্মী বলেন, নয়ন বন্ড গ্রুপ রিফাত শরীফকে হত্যা করেছে এ কথা প্রকাশিত সত্য, নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী গং হত্যা করেছে তাও সত্য। মিন্নি জড়িত থাকলে তা তদন্তসাপেক্ষ কিন্তু নয়ন বন্ড গং ধরা পড়ার আগেই মিন্নিকে চরিত্রহীন বলা এবং এ ঘটনায় মিন্নিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা আসল খুনিদের আড়াল করার প্রবণতাই বটে। তারা বলেন, মিন্নির বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা আছে, পুলিশি তদন্তে প্রমাণ পেলে যেকোন সময় মিন্নিকে গ্রেফাতর দেখানো যাবে। কিন্তু তদন্ত ও বিচারকাজে প্রভাব সৃষ্টির জন্য মিন্নিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা ঠিক নয়।

এদিকে রিফাত হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তি দাবিতে পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরগুনা জেলা শাখা। মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তারসহ অন্যান্যরা স্মারকলিপিতে সই করেন। তারা মিন্নিকে এই মামলায় ভিলেন সাজানো প্রসঙ্গে বলেন, মিন্নি যদি এই ঘটনায় জড়িত থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। জড়িত না থাকলে নানা অপপ্রচারের মাধ্যমে তাকে ছোট করা বা এই মামলায় বেহুদা প্রভাব সৃষ্টি করা অনর্থক।