ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ‘৫ শতাংশে উন্নীত করছে ইরান’

পরমাণু চুক্তি রক্ষায় আলোচনার ক্ষেত্র বিবেচনায় সম্মত ইরান-ফ্রান্স

ওয়াশিংটনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির আওতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য তেহরানকে বেঁধে দেয়া মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ইরান। এ লক্ষ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পরিমাণ ৫ শতাংশে উন্নীত করতে যাচ্ছে তেহরান । গতকাল রোববার ইরানের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকী দেশগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ইরানকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে প্রতি ৬০ দিন পর পর নিজেদের প্রতিশ্রুতি থেকে একটু একটু করে সরে আসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। এদিকে বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের এমন পদক্ষেপ তেহরানের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় অংশীদারদের সম্পর্ককে নাজুক করে তুলতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপকে তেহরানের দেওয়া ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর এ ঘোষণা এলো। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, তার দেশ এখনও চুক্তিটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। তার আক্ষেপ, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তেহরানের পরমাণু কর্মসূচিতে লাগাম টানার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ওয়াশিংটন ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞাও পুনর্বহাল করে। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে চলতি বছরের মে মাসে দেশটি চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করার লক্ষ্যে ইরানের পক্ষ থেকে ইউরোপকে দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয়েছে শনিবার (৬ জুলাই) রাতে। আর এর একদিনের মাথায় গতকাল (রোববার, ৭ জুলাই) তেহরান এ সমঝোতায় নিজেদের দেওয়া আরও কিছু প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করবে তার দেশ। তিনি আরও বলেন, কূটনৈতিকভাবে ইরান যথেষ্ট সময় দিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে জেসিপিও পরমাণু চুক্তিকে টিকিয়ে রাখতে নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্রগুলো বিবেচনা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইরান ও ফ্রান্স। গত শনিবার রাতে এক ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ বিষয়ে সম্মতি জানান। পরমাণু সমঝোতায় ইউরোপের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য তেহরানের পক্ষ থেকে দেওয়া ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এ ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে দেশটি চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। শনিবার (৬ জুলাই) রাতে সে সময়সীমা শেষ হয়েছে। ইরান ইতোমধ্যেই রোববার (গতকাল) থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বরে ঘোষণা দিয়েছে । ইউরোপকে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে শনিবার ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।

সেসময় আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো যথাযথভাবে পালনের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান রুহানি। এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করার লক্ষ্যে আবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে রুহানি বলেন, ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে আবার ইরানের আলোচনা শুরু হওয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি হতে পারে। প্রেসিডেন্ট রুহানি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক চাপ, হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান গত ১৪ মাস ধরে কৌশলগত ধৈর্য অবলম্বন করে একতরফাভাবে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলেছে।

কিন্তু এখন সে ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে এসেছে। এ ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট তার দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞাকে ‘সর্বাত্মক অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্বে নয়া হুমকির জন্ম হতে পারে। তিনি বলেন, ইরান সম্প্রতি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা পরমাণু সমঝোতা অনুসরণ করেই নেওয়া হয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে এ সমঝোতা রক্ষার লক্ষ্যেই এটা করেছে তেহরান। এ অবস্থায় ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে এ সমঝোতা রক্ষার জন্য আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান রুহানি। টেলিফোনালাপে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, শুরু থেকেই তার সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে। তিনি দাবি করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করতে চায় এবং প্যারিস এ লক্ষ্যে তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইউরোপ ইরানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করেন ম্যাক্রোঁ। এখন থেকে এ লক্ষ্যে আরো বেশি তৎপরতা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০১৯ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৫, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪০

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ‘৫ শতাংশে উন্নীত করছে ইরান’

পরমাণু চুক্তি রক্ষায় আলোচনার ক্ষেত্র বিবেচনায় সম্মত ইরান-ফ্রান্স

সংবাদ ডেস্ক

ওয়াশিংটনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির আওতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য তেহরানকে বেঁধে দেয়া মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ইরান। এ লক্ষ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পরিমাণ ৫ শতাংশে উন্নীত করতে যাচ্ছে তেহরান । গতকাল রোববার ইরানের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকী দেশগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ইরানকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে প্রতি ৬০ দিন পর পর নিজেদের প্রতিশ্রুতি থেকে একটু একটু করে সরে আসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। এদিকে বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের এমন পদক্ষেপ তেহরানের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় অংশীদারদের সম্পর্ককে নাজুক করে তুলতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপকে তেহরানের দেওয়া ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর এ ঘোষণা এলো। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, তার দেশ এখনও চুক্তিটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। তার আক্ষেপ, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তেহরানের পরমাণু কর্মসূচিতে লাগাম টানার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ওয়াশিংটন ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞাও পুনর্বহাল করে। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে চলতি বছরের মে মাসে দেশটি চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করার লক্ষ্যে ইরানের পক্ষ থেকে ইউরোপকে দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয়েছে শনিবার (৬ জুলাই) রাতে। আর এর একদিনের মাথায় গতকাল (রোববার, ৭ জুলাই) তেহরান এ সমঝোতায় নিজেদের দেওয়া আরও কিছু প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করবে তার দেশ। তিনি আরও বলেন, কূটনৈতিকভাবে ইরান যথেষ্ট সময় দিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে জেসিপিও পরমাণু চুক্তিকে টিকিয়ে রাখতে নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্রগুলো বিবেচনা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইরান ও ফ্রান্স। গত শনিবার রাতে এক ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ বিষয়ে সম্মতি জানান। পরমাণু সমঝোতায় ইউরোপের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য তেহরানের পক্ষ থেকে দেওয়া ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এ ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে দেশটি চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। শনিবার (৬ জুলাই) রাতে সে সময়সীমা শেষ হয়েছে। ইরান ইতোমধ্যেই রোববার (গতকাল) থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বরে ঘোষণা দিয়েছে । ইউরোপকে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে শনিবার ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।

সেসময় আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো যথাযথভাবে পালনের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান রুহানি। এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করার লক্ষ্যে আবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে রুহানি বলেন, ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে আবার ইরানের আলোচনা শুরু হওয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি হতে পারে। প্রেসিডেন্ট রুহানি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক চাপ, হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান গত ১৪ মাস ধরে কৌশলগত ধৈর্য অবলম্বন করে একতরফাভাবে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলেছে।

কিন্তু এখন সে ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে এসেছে। এ ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট তার দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞাকে ‘সর্বাত্মক অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্বে নয়া হুমকির জন্ম হতে পারে। তিনি বলেন, ইরান সম্প্রতি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা পরমাণু সমঝোতা অনুসরণ করেই নেওয়া হয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে এ সমঝোতা রক্ষার লক্ষ্যেই এটা করেছে তেহরান। এ অবস্থায় ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে এ সমঝোতা রক্ষার জন্য আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান রুহানি। টেলিফোনালাপে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, শুরু থেকেই তার সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে। তিনি দাবি করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করতে চায় এবং প্যারিস এ লক্ষ্যে তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইউরোপ ইরানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করেন ম্যাক্রোঁ। এখন থেকে এ লক্ষ্যে আরো বেশি তৎপরতা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।