চীনবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার হংকংয়ের তরুণদের

প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিক্ষোভ

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল ও চীনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন হংকংয়ের তরুণরা। বিক্ষোভের মুখে বিলটি স্থগিত করে দেশটির নেতা ক্ষমা চাইলেও বিক্ষোভকারীরা তা একেবারে বাতিল ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

এই বিতর্কিত আইনের ফলে হংকংয়ের যে কোন ব্যক্তি চীনের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে। গত সপ্তাহে কয়েক হাজার তরুণ রাজপথে নেমে এলে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে দেশটি। বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। হংকং এক সময় ছিল চীনের কাছ থেকে লিজ নেয়া ব্রিটিশ উপনিবেশ- যা ১৯৯৭ সালে আবার চীনের হাতে ফিরিয়ে দেয় ব্রিটেন। তখন ‘এক দেশ দুই পদ্ধতি’ নামের একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় হংকং চীন দ্বারা শাসিত হবে এবং স্বায়ত্তশাসনের গ্যারান্টি থাকবে। সেই হস্তান্তরের বার্ষিকীতে কয়েক হাজার হংকংবাসী গণতন্ত্রের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয়। এরই ধাবারহিকতায় বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল বাতিল ও চীনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার দাবিতে গতকাল শুরু হওয়া নতুন এ বিক্ষোভে সরকার যেন বিলটি সম্পূর্ণ বাতিল করে এবং বিক্ষোভের সময় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দেয়-এমন দাবি করছেন প্রতিবাদকারীরা। এছাড়া শান্তিপূর্ণ জমায়েতের পুলিশের শক্তি প্রয়োগের ঘটনার স্বাধীন তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা কোন চেষ্টা বাদ রেখেছি? আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি এবং চেষ্টা করেছি পার্লামেন্ট ভবন দখল করতে।কয়েকজন তো মৃত্যুর মুখে লাফিয়ে পড়েছে। এরচেয়ে বিপ্লবী আর কী হতে পারে? দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বার্তা একেবারে স্পষ্ট। তারা সহসাই সহিংসতায় পা দেবে না। রাজনৈতিক দাবি মেনে না নিলে কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনাও একেবারে বাতিল করছে না তারা। অপর এক বিক্ষোভকারীর ভাষায়, সহজে দাবি আদায় হবে না, জনগণকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। যখন আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি তখন সেটার কোন সীমানা থাকে না। আমাদেরও কোন সীমা নেই।

অপরদিকে হংকংয়ের পার্লামেন্ট ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বিক্ষোভকারীদের আচরণকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে বেইজিং। চীন সরকারের হংকং বিষয়ক দূত এক বিবৃতিতে বলেন, এটি মারাত্মক বেআইনি কর্মকান্ড এবং আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়তে কিছু উগ্রপন্থি অতিরিক্ত সহিংসতা ব্যবহার করেছে। আর বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।

এটা বিস্ময়কর, মর্মান্তিক আর ক্ষোভ সৃষ্টিকারী। এ ধরনের সহিংস কর্মকান্ড হংকংয়ের আইনের শাসনের ওপর চরম চ্যালেঞ্জ এবং হংকংয়ের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি মারাত্মক অবজ্ঞা। যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০১৯ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৫, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪০

চীনবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার হংকংয়ের তরুণদের

প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সংবাদ ডেস্ক

image

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল ও চীনের বিরুদ্ধে হংকংয়ে বিক্ষোভের একাংশ -রয়টার্স

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল ও চীনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন হংকংয়ের তরুণরা। বিক্ষোভের মুখে বিলটি স্থগিত করে দেশটির নেতা ক্ষমা চাইলেও বিক্ষোভকারীরা তা একেবারে বাতিল ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

এই বিতর্কিত আইনের ফলে হংকংয়ের যে কোন ব্যক্তি চীনের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে। গত সপ্তাহে কয়েক হাজার তরুণ রাজপথে নেমে এলে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে দেশটি। বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। হংকং এক সময় ছিল চীনের কাছ থেকে লিজ নেয়া ব্রিটিশ উপনিবেশ- যা ১৯৯৭ সালে আবার চীনের হাতে ফিরিয়ে দেয় ব্রিটেন। তখন ‘এক দেশ দুই পদ্ধতি’ নামের একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় হংকং চীন দ্বারা শাসিত হবে এবং স্বায়ত্তশাসনের গ্যারান্টি থাকবে। সেই হস্তান্তরের বার্ষিকীতে কয়েক হাজার হংকংবাসী গণতন্ত্রের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয়। এরই ধাবারহিকতায় বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল বাতিল ও চীনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার দাবিতে গতকাল শুরু হওয়া নতুন এ বিক্ষোভে সরকার যেন বিলটি সম্পূর্ণ বাতিল করে এবং বিক্ষোভের সময় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দেয়-এমন দাবি করছেন প্রতিবাদকারীরা। এছাড়া শান্তিপূর্ণ জমায়েতের পুলিশের শক্তি প্রয়োগের ঘটনার স্বাধীন তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা কোন চেষ্টা বাদ রেখেছি? আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি এবং চেষ্টা করেছি পার্লামেন্ট ভবন দখল করতে।কয়েকজন তো মৃত্যুর মুখে লাফিয়ে পড়েছে। এরচেয়ে বিপ্লবী আর কী হতে পারে? দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বার্তা একেবারে স্পষ্ট। তারা সহসাই সহিংসতায় পা দেবে না। রাজনৈতিক দাবি মেনে না নিলে কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনাও একেবারে বাতিল করছে না তারা। অপর এক বিক্ষোভকারীর ভাষায়, সহজে দাবি আদায় হবে না, জনগণকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। যখন আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি তখন সেটার কোন সীমানা থাকে না। আমাদেরও কোন সীমা নেই।

অপরদিকে হংকংয়ের পার্লামেন্ট ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বিক্ষোভকারীদের আচরণকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে বেইজিং। চীন সরকারের হংকং বিষয়ক দূত এক বিবৃতিতে বলেন, এটি মারাত্মক বেআইনি কর্মকান্ড এবং আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়তে কিছু উগ্রপন্থি অতিরিক্ত সহিংসতা ব্যবহার করেছে। আর বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।

এটা বিস্ময়কর, মর্মান্তিক আর ক্ষোভ সৃষ্টিকারী। এ ধরনের সহিংস কর্মকান্ড হংকংয়ের আইনের শাসনের ওপর চরম চ্যালেঞ্জ এবং হংকংয়ের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি মারাত্মক অবজ্ঞা। যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।