রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে বৈঠক

চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত দিতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টির আশ্বাস দিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)। এপিজি বলছে, কোন দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের নিয়ম-কানুন পুরোপুরি পরিপালন করলে এ টাকাটা ব্যাংকের বাইরে যেত না। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, ফিলিপাইনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের নিয়ম-কানুন পরিপালনে বেশ দুর্বলতা রয়েছে। ফিলিপাইন সদস্য দেশ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এপিজি চাপ প্রয়োগ করতে পারে। এ হিসেবে তারা ফিলিপাইনের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। গতকাল অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা এবং নীতিপ্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে এপিজির পরিচালক ডেভিট শ্যানন ও মোস্তফা আকবরের বৈঠক হয়। বৈঠকে তারা বাংলাদেশকে এ আশ্বাস দেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান প্রমুখ।

রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিলিপাইন বাংলাদেশকে ফেরত দিচ্ছে না- এ বিষয়ে এপিজি কিছু বলেছে কিনাÑ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, এটা নিয়েও তারা একটু আলাপ করেছেন। এপিজি বলছে, যেসব দেশে মানি লন্ডারিং বিষয়গুলো পুরোপুরি পরিপালন হয় না সেসব দেশে যেমন- ফিলিপাইন; এগুলো বেশি হয়। সে দেশে যদি মানি লন্ডারিং বিষয়টা পরিপালন করা হতো তাহলে টাকাটা ব্যাংকের বাইরে যেত না।

এসব টাকা ফেরতের জন্য আপনারা এপিজির মাধ্যমে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন কিÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এপিজি দেখবে। কারণ এপিজির প্রত্যেক দেশের জন্য যে কমন ক্রাইটেরিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো জাজ করতে গেলে তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ধরা পড়বে।

সূত্র জানায়, চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত আনতে গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা করা হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় মামলার বিভিন্ন বিষয় পর্ষদে অবহিত করা হয়। এ সময় পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সায় দেয়। পরে ওই মামলা করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে মোট ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে ইতোমধ্যে চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত এসেছে। ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার দেশটির কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে, যা আরসিবিসির কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আরও খবর
বাম জোটের হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত
হরতালে মরিচা ধরে গেছে
পাঁচ বছরে ২ কোটি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে
৯ম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড অচিরেই
এবার মগবাজার থেকে বাবুবাজার চালু হচ্ছে চক্রাকার বাস সার্ভিস
১৩ জুলাই প্রতিবাদ দিবস পালনের ঘোষণা ঐক্যন্যাপের
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ মশকনিধনে কার্যকর ব্যবস্থার নির্দেশ
বিতর্কিত আদেশ সংশোধন করল মন্ত্রণালয়
বরিশাল ৩০৭ মে. ও. কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি
অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেফতার
ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই
এরশাদ শঙ্কামুক্ত নন
জকসু নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে ১১ শিক্ষার্থী
শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন
বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের প্রকল্প

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০১৯ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৫, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪০

রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে বৈঠক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত দিতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টির আশ্বাস দিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)। এপিজি বলছে, কোন দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের নিয়ম-কানুন পুরোপুরি পরিপালন করলে এ টাকাটা ব্যাংকের বাইরে যেত না। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, ফিলিপাইনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের নিয়ম-কানুন পরিপালনে বেশ দুর্বলতা রয়েছে। ফিলিপাইন সদস্য দেশ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এপিজি চাপ প্রয়োগ করতে পারে। এ হিসেবে তারা ফিলিপাইনের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। গতকাল অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা এবং নীতিপ্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে এপিজির পরিচালক ডেভিট শ্যানন ও মোস্তফা আকবরের বৈঠক হয়। বৈঠকে তারা বাংলাদেশকে এ আশ্বাস দেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান প্রমুখ।

রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিলিপাইন বাংলাদেশকে ফেরত দিচ্ছে না- এ বিষয়ে এপিজি কিছু বলেছে কিনাÑ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, এটা নিয়েও তারা একটু আলাপ করেছেন। এপিজি বলছে, যেসব দেশে মানি লন্ডারিং বিষয়গুলো পুরোপুরি পরিপালন হয় না সেসব দেশে যেমন- ফিলিপাইন; এগুলো বেশি হয়। সে দেশে যদি মানি লন্ডারিং বিষয়টা পরিপালন করা হতো তাহলে টাকাটা ব্যাংকের বাইরে যেত না।

এসব টাকা ফেরতের জন্য আপনারা এপিজির মাধ্যমে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন কিÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এপিজি দেখবে। কারণ এপিজির প্রত্যেক দেশের জন্য যে কমন ক্রাইটেরিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো জাজ করতে গেলে তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ধরা পড়বে।

সূত্র জানায়, চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত আনতে গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা করা হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় মামলার বিভিন্ন বিষয় পর্ষদে অবহিত করা হয়। এ সময় পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সায় দেয়। পরে ওই মামলা করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে মোট ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে ইতোমধ্যে চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত এসেছে। ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার দেশটির কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে, যা আরসিবিসির কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।