রাঙ্গামাটিতে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধস : নিহত ২

টানা ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কলাবাগানের মালি কলোনি এলাকায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় এক শিশুসহ দুজন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে টানা বর্ষণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে ও লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষণে গতকাল দুপুরে কাপ্তাই উপজেলার কলাবাগানের মালি কলোনি এলাকায় পাহাড় ধসে ঘটনা ঘটে। এতে মাটিচাপা পড়ে ৩ বছরের শিশু সূর্য্য মল্লিক ও একই এলাকয় তাহমিনা বেগম নিহত হয়েছেন। এ সময় আবদুল গফুর ও সুনীল মল্লিক নামের দুজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ও স্থানীয় লোকজন নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। পরে আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসার আহমেদ রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাটিচাপা পড়ে এক শিশুসহ ২ জন নিহত হয়েছে ও ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, টানা বর্ষণে রাঙামাটি শহরের কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কন্দ্রে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হলেও এখনো তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। রাঙামাটি শহরে ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিমসহ স্থানীয় সমাজ উন্নয়ন কমিটি পৌর কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বারবার অনুরোধ করছে। তারপরও লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।

অপরদিকে টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গতকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত বাড়িঘরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শিমুতলী, রূপনগরসহ কয়েকটি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা লোকজনকে জেলা প্রশাসনের খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণসহ লোকজনকে সচেতন সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের জন্য ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া গতকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে এবং লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসের কারণে দুই সেনা কর্মকর্তা ও ৩ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসহ অনেক ঘরবাড়ি ও মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০১৯ , ২৫ আষাঢ় ১৪২৫, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪০

রাঙ্গামাটিতে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধস : নিহত ২

পার্বত্য অঞ্চল প্রতিনিধি

টানা ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কলাবাগানের মালি কলোনি এলাকায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় এক শিশুসহ দুজন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে টানা বর্ষণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে ও লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষণে গতকাল দুপুরে কাপ্তাই উপজেলার কলাবাগানের মালি কলোনি এলাকায় পাহাড় ধসে ঘটনা ঘটে। এতে মাটিচাপা পড়ে ৩ বছরের শিশু সূর্য্য মল্লিক ও একই এলাকয় তাহমিনা বেগম নিহত হয়েছেন। এ সময় আবদুল গফুর ও সুনীল মল্লিক নামের দুজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ও স্থানীয় লোকজন নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। পরে আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসার আহমেদ রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাটিচাপা পড়ে এক শিশুসহ ২ জন নিহত হয়েছে ও ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, টানা বর্ষণে রাঙামাটি শহরের কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কন্দ্রে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হলেও এখনো তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। রাঙামাটি শহরে ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিমসহ স্থানীয় সমাজ উন্নয়ন কমিটি পৌর কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বারবার অনুরোধ করছে। তারপরও লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।

অপরদিকে টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গতকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত বাড়িঘরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শিমুতলী, রূপনগরসহ কয়েকটি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা লোকজনকে জেলা প্রশাসনের খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণসহ লোকজনকে সচেতন সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের জন্য ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া গতকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে এবং লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসের কারণে দুই সেনা কর্মকর্তা ও ৩ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসহ অনেক ঘরবাড়ি ও মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।