এবার কংগ্রেসের সব মন্ত্রীর পদত্যাগ কর্নাটকে

ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্নাটকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস-জনতা দল সেক্যুলার (জেডিএস) জোটের মোট ১৩ জন বিধায়ক পদত্যাগ করায় রাজ্য সরকারের স্থায়িত্ব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিতে কংগ্রেসের ২১ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করা কংগ্রেসের মন্ত্রীদের মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরও রয়েছেন। গতকাল সর্বশেষ এ পদক্ষেপে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে রাজ্যটির জোট সরকার। সরকার বাঁচাতেই মন্ত্রীদের এ পদত্যাগ বলে দল দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে রাজ্যে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপিকেই বারবার দায়ী করেছে কংগ্রেস-জেডিএস।

রাজ্যের এমন টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করা উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর আগেই জানান যে, ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে দল যদি তাদের ইস্তফা দিতে বলে তবে সবাই পদত্যাগ করবেন। এরই মধ্যে গতকাল সকালেই পদত্যাগ করেন কংগ্রেসের সব মন্ত্রী। এর আগে শনিবার পদত্যাগ করেন কংগ্রেস ও জেডিএসের মোট ১৩ জন বিধায়ক। তাদের বুঝিয়ে দলে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যেই আরও একটা ধাক্কা খেলেন কুমারস্বামী। এ দিন সকালেই ইস্তফা দেন রাজ্যের এক মন্ত্রী তথা স্বতন্ত্র বিধায়ক নাগেশ। সূত্রমতে, কংগ্রেসের আরও দুই বিধায়কও পদত্যাগ করতে চলেছেন। এদের মধ্যে কর্নাটকের সাবেক মন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডির মেয়ে কংগ্রেসের সৌমিয়া রেড্ডি রয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফর সংক্ষিপ্ত করে গত রোববার রাজ্যে ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। একের পর এক বিধায়কের পদত্যাগে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়ানো দলকে টেনে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। রাজ্যে পা দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ওই দিনই কংগ্রেসের শীর্ষনেতাদের নিয়ে এক দফায় বৈঠক করেন তিন। দলীয় সূত্রমতে, কীভাবে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের দলে ফিরিয়ে আনা যায়, তারও একটা নীলনকশা তৈরি করা হয় ওই বৈঠকে। ওই রাতে আবারও জোটের নেতাদের সঙ্গে আরেক দফায় বৈঠক করেন কুমারস্বামী। কিন্তু ওই বৈঠকে কোন সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায়নি হয়নি বলে দাবি দলীয় সূত্রের। তবে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়করা তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টাবেন বলে প্রত্যাশা জোট সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের। দেবগৌড়া দলের সব নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। অপরদিকে, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল, সিদ্দারামাইয়া এবং ডি কে শিবকুমার কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন। আজ (মঙ্গলবার) বৈঠকও ডেকেছেন তারা। সেখানে সব বিধায়কের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে স্বতন্ত্র বিধায়ক নাগেশের পদত্যাগ প্রসঙ্গে শিবকুমার বলেন, চাপে পড়েই ইস্তফা দিয়েছেন নাগেশ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। আমরা ওর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। এছাড়া কংগ্রেস ও জেডিএসের যেসব বিধায়ক মুম্বইয়ের হোটেলে উঠেছেন, তাদের ওপর কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। হোটেলের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে বিধায়কদের। বিজেপি যাতে এই বিধায়কদের কেনাবেচা করতে না পারে, তা রুখতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী।

রাজ্যে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিজেপিকেই (ভারতীয় জনতা পার্টি) বারবার দায়ী করেছে কংগ্রেস-জেডিএস। জবাবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিজেপির পাল্টা দাবি, এ অস্থিরতার জন্য বিজেপি কোনভাবেই দায়ী নয়। গতকাল সংসদে কর্নাটকের প্রসঙ্গ উঠলে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সঠিক নয়। কর্নাটকের এ ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কোনভাবেই জড়িত নয়। এ ঘটনার জন্য পাল্টা তিনি রাহুল গান্ধীকেই দোষারোপ করেছেন।

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০১৯ , ২৫ আষাঢ় ১৪২৫, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪০

এবার কংগ্রেসের সব মন্ত্রীর পদত্যাগ কর্নাটকে

সংবাদ ডেস্ক

image

কর্নাটকের পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই করার নেই বিজেপির

ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্নাটকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস-জনতা দল সেক্যুলার (জেডিএস) জোটের মোট ১৩ জন বিধায়ক পদত্যাগ করায় রাজ্য সরকারের স্থায়িত্ব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিতে কংগ্রেসের ২১ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করা কংগ্রেসের মন্ত্রীদের মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরও রয়েছেন। গতকাল সর্বশেষ এ পদক্ষেপে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে রাজ্যটির জোট সরকার। সরকার বাঁচাতেই মন্ত্রীদের এ পদত্যাগ বলে দল দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে রাজ্যে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপিকেই বারবার দায়ী করেছে কংগ্রেস-জেডিএস।

রাজ্যের এমন টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করা উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর আগেই জানান যে, ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে দল যদি তাদের ইস্তফা দিতে বলে তবে সবাই পদত্যাগ করবেন। এরই মধ্যে গতকাল সকালেই পদত্যাগ করেন কংগ্রেসের সব মন্ত্রী। এর আগে শনিবার পদত্যাগ করেন কংগ্রেস ও জেডিএসের মোট ১৩ জন বিধায়ক। তাদের বুঝিয়ে দলে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যেই আরও একটা ধাক্কা খেলেন কুমারস্বামী। এ দিন সকালেই ইস্তফা দেন রাজ্যের এক মন্ত্রী তথা স্বতন্ত্র বিধায়ক নাগেশ। সূত্রমতে, কংগ্রেসের আরও দুই বিধায়কও পদত্যাগ করতে চলেছেন। এদের মধ্যে কর্নাটকের সাবেক মন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডির মেয়ে কংগ্রেসের সৌমিয়া রেড্ডি রয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফর সংক্ষিপ্ত করে গত রোববার রাজ্যে ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। একের পর এক বিধায়কের পদত্যাগে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়ানো দলকে টেনে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। রাজ্যে পা দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ওই দিনই কংগ্রেসের শীর্ষনেতাদের নিয়ে এক দফায় বৈঠক করেন তিন। দলীয় সূত্রমতে, কীভাবে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের দলে ফিরিয়ে আনা যায়, তারও একটা নীলনকশা তৈরি করা হয় ওই বৈঠকে। ওই রাতে আবারও জোটের নেতাদের সঙ্গে আরেক দফায় বৈঠক করেন কুমারস্বামী। কিন্তু ওই বৈঠকে কোন সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায়নি হয়নি বলে দাবি দলীয় সূত্রের। তবে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়করা তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টাবেন বলে প্রত্যাশা জোট সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের। দেবগৌড়া দলের সব নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। অপরদিকে, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল, সিদ্দারামাইয়া এবং ডি কে শিবকুমার কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন। আজ (মঙ্গলবার) বৈঠকও ডেকেছেন তারা। সেখানে সব বিধায়কের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে স্বতন্ত্র বিধায়ক নাগেশের পদত্যাগ প্রসঙ্গে শিবকুমার বলেন, চাপে পড়েই ইস্তফা দিয়েছেন নাগেশ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। আমরা ওর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। এছাড়া কংগ্রেস ও জেডিএসের যেসব বিধায়ক মুম্বইয়ের হোটেলে উঠেছেন, তাদের ওপর কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। হোটেলের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে বিধায়কদের। বিজেপি যাতে এই বিধায়কদের কেনাবেচা করতে না পারে, তা রুখতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী।

রাজ্যে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিজেপিকেই (ভারতীয় জনতা পার্টি) বারবার দায়ী করেছে কংগ্রেস-জেডিএস। জবাবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিজেপির পাল্টা দাবি, এ অস্থিরতার জন্য বিজেপি কোনভাবেই দায়ী নয়। গতকাল সংসদে কর্নাটকের প্রসঙ্গ উঠলে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সঠিক নয়। কর্নাটকের এ ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কোনভাবেই জড়িত নয়। এ ঘটনার জন্য পাল্টা তিনি রাহুল গান্ধীকেই দোষারোপ করেছেন।