‘যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংঘাত হবে ইরাক যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ’

পরামাণু সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েন ও একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার জেরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে প্রায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে সর্বশেষ ইরান ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ায় তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এ উত্তেজনা দেশ দুটির সাধারণ নাগরিক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনের বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা তুলসি গাবার্ড সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যদি যুদ্ধ বাধে, তবে তা ইরাক যুদ্ধের চেয়েও বিপর্যয়কর হবে। সম্প্রতি কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন আগামী ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোয়নপ্রত্যাশী তুলসি।

একদিকে তেহরান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা যুদ্ধ চায় না। তবে যুদ্ধ বাধলে ছেড়েও দেবে না। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না দাবি করলেও তবে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে দেশটি ‘ধ্বংস’ হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি জানায়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রাজনীতিক তুলসি গাবাড হাওয়াইয়ের একটি আসন থেকে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সদস্য। এমন যুদ্ধপরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন রিপালিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে যেন ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তেই নিয়ে যাচ্ছেন। ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় পরাশক্তি (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি) মিলে তেহরানের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে আগের মতোই তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন। ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসাটাও ট্রাম্পের ভুল সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন তুলসি। তিনি বলেন, যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে করা এ চুক্তির শর্ত আরও কঠিন হওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে চুক্তি না থাকার চেয়ে কম শক্তিশালী চুক্তিই ভালো। এ চুক্তিতে কিছু ভুল ছিল, তা সঠিক। তবে কমপক্ষে তা দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ ঠেকাতে কাজ করত। এখন ট্রাম্প প্রশাসন যে ভয়ংকর কাজটি করছে তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার সময় ওই অঞ্চলে মার্কিন সেনা পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে দু’দেশের উত্তেজনা আরও বেড়েছে। কারণ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। ইরাক যুদ্ধের সময় মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধাঞ্চলে হাওয়াই সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমের সঙ্গে কাজ করেছেন তুলসি। এত কাছ থেকে যুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বলেন, যদি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বাধে, তাহলে সেটি ইরাক যুদ্ধের চেয়েও আরও বিপর্যয়কর হবে।

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০১৯ , ২৫ আষাঢ় ১৪২৫, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪০

‘যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংঘাত হবে ইরাক যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ’

সংবাদ ডেস্ক

image

তুলসি গাবার্ড

পরামাণু সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েন ও একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার জেরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে প্রায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে সর্বশেষ ইরান ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ায় তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এ উত্তেজনা দেশ দুটির সাধারণ নাগরিক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনের বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা তুলসি গাবার্ড সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যদি যুদ্ধ বাধে, তবে তা ইরাক যুদ্ধের চেয়েও বিপর্যয়কর হবে। সম্প্রতি কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন আগামী ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোয়নপ্রত্যাশী তুলসি।

একদিকে তেহরান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা যুদ্ধ চায় না। তবে যুদ্ধ বাধলে ছেড়েও দেবে না। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না দাবি করলেও তবে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে দেশটি ‘ধ্বংস’ হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি জানায়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রাজনীতিক তুলসি গাবাড হাওয়াইয়ের একটি আসন থেকে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সদস্য। এমন যুদ্ধপরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন রিপালিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে যেন ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তেই নিয়ে যাচ্ছেন। ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় পরাশক্তি (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি) মিলে তেহরানের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে আগের মতোই তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন। ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসাটাও ট্রাম্পের ভুল সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন তুলসি। তিনি বলেন, যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে করা এ চুক্তির শর্ত আরও কঠিন হওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে চুক্তি না থাকার চেয়ে কম শক্তিশালী চুক্তিই ভালো। এ চুক্তিতে কিছু ভুল ছিল, তা সঠিক। তবে কমপক্ষে তা দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ ঠেকাতে কাজ করত। এখন ট্রাম্প প্রশাসন যে ভয়ংকর কাজটি করছে তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার সময় ওই অঞ্চলে মার্কিন সেনা পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে দু’দেশের উত্তেজনা আরও বেড়েছে। কারণ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। ইরাক যুদ্ধের সময় মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধাঞ্চলে হাওয়াই সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমের সঙ্গে কাজ করেছেন তুলসি। এত কাছ থেকে যুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বলেন, যদি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বাধে, তাহলে সেটি ইরাক যুদ্ধের চেয়েও আরও বিপর্যয়কর হবে।