যশোর পুলিশে ঘুষ ছাড়াই চাকরি

যশোরের ঝিকরগাছা থানার সামনে প্রায় ২০ বছর ধরে নরসুন্দর (নাপিত) হিসেবে কাজ করেন রবিউল ইসলাম। রবিউল ইসলামের ছেলে সাহেব আলী এ বছর পুলিশের কনস্টেবল পদে পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। সাহেব আলী জানালেন, ‘একশ’ টাকার চালান আর তিন টাকার স্ট্যাম্পের খরচে চাকরি হয়েছে। লাইনে দাঁড়ানোর পর কত লোক কত কথা বলেছে! কিন্তু চাকরির জন্যে কোন টাকা লাগেনি। টাকা ছাড়া যে চাকরি হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি!’

ঝিকরগাছার গদখালি এলাকার কাশেম আলী ৬/৭ বছর ধরে বাজারে সবজি বিক্রি করেন। এর আগে জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাতেন। সেই কাশেম আলীর ছেলে আবুল বাশারও পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আবুল বাশার জানালেন, ‘অনেক কষ্ট করে দাখিল পাস করেছেন। এখন লাইনে দাঁড়িয়ে কোন ঘুষ না দিয়ে চাকরি হয়েছে। এভাবে চাকরি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তার বাড়ির লোকজন ভাবতেই পারেনি এভাবে ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়া যায়!’ শুধু সাহেব আলী বা আবুল বাশার নন; যশোর জেলায় এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে ২২৩ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, যশোর পুলিশ লাইন্সে গত ২২ জুন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য এক হাজার ৯৫০ জন শারিরীক পরীক্ষায় অংশ নেন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন এক হাজার ৬৯ জন। উত্তীর্ণরা ২৪ জুন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন এবং পাস করেন ৩৫৪ জন। ২৬ জুন মৌখিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এদের মধ্যে থেকে ২২৩ জন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন।

যশোরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান বলেন, ‘শুধু সাহেব আলী বা আবুল বাশার নন, এবার যশোরের ৮ উপজেলার অনেক কৃষক, শ্রমিকসহ দরিদ্র পরিবারের সন্তান চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। তারা ভাবতেই পারেননি এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা দিয়ে পুলিশের চাকরি পাওয়া যায়।’

সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান আরও বলেন, এ বছর পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি পুলিশ সুপার মঈনুল হক কঠোরভাবে তদারকি করেছেন। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এ কারণে কোন ধরনের অনৈতিকতার আশ্রয় ছাড়াই মেধাবী ও যোগ্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। এভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও তিনি মনে করেন।

আরও খবর
টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর নিম্নাঞ্চল
পাহাড়ধসে রুমা ও থানচী সড়ক বন্ধ
তারেককে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাজ্যের আদালত
সাড়ে ৮ লাখ নারী প্রবাসে কর্মরত
বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত
কোরবানির পশুর হাট তদারকিতে থাকবে ভোক্তা অধিদফতরও
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
ঐক্যফ্রন্ট ছাড়লেন কাদের সিদ্দিকী
রাবি হলের সিট শুধু দখলদারদের!
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট চার্জ কমেছে
ভূমি আইন যুগোপযোগী করা হচ্ছে
এমপি ফিরোজ রশিদের পুত্রবধূ গুলিবিদ্ধ
ছাত্রীর পর্নোভিডিও শিক্ষককে গণপিটুনি
রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
বগুড়ায় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০১৯ , ২৫ আষাঢ় ১৪২৫, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪০

যশোর পুলিশে ঘুষ ছাড়াই চাকরি

যশোর অফিস

যশোরের ঝিকরগাছা থানার সামনে প্রায় ২০ বছর ধরে নরসুন্দর (নাপিত) হিসেবে কাজ করেন রবিউল ইসলাম। রবিউল ইসলামের ছেলে সাহেব আলী এ বছর পুলিশের কনস্টেবল পদে পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। সাহেব আলী জানালেন, ‘একশ’ টাকার চালান আর তিন টাকার স্ট্যাম্পের খরচে চাকরি হয়েছে। লাইনে দাঁড়ানোর পর কত লোক কত কথা বলেছে! কিন্তু চাকরির জন্যে কোন টাকা লাগেনি। টাকা ছাড়া যে চাকরি হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি!’

ঝিকরগাছার গদখালি এলাকার কাশেম আলী ৬/৭ বছর ধরে বাজারে সবজি বিক্রি করেন। এর আগে জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাতেন। সেই কাশেম আলীর ছেলে আবুল বাশারও পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আবুল বাশার জানালেন, ‘অনেক কষ্ট করে দাখিল পাস করেছেন। এখন লাইনে দাঁড়িয়ে কোন ঘুষ না দিয়ে চাকরি হয়েছে। এভাবে চাকরি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তার বাড়ির লোকজন ভাবতেই পারেনি এভাবে ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়া যায়!’ শুধু সাহেব আলী বা আবুল বাশার নন; যশোর জেলায় এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে ২২৩ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, যশোর পুলিশ লাইন্সে গত ২২ জুন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য এক হাজার ৯৫০ জন শারিরীক পরীক্ষায় অংশ নেন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন এক হাজার ৬৯ জন। উত্তীর্ণরা ২৪ জুন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন এবং পাস করেন ৩৫৪ জন। ২৬ জুন মৌখিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এদের মধ্যে থেকে ২২৩ জন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন।

যশোরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান বলেন, ‘শুধু সাহেব আলী বা আবুল বাশার নন, এবার যশোরের ৮ উপজেলার অনেক কৃষক, শ্রমিকসহ দরিদ্র পরিবারের সন্তান চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। তারা ভাবতেই পারেননি এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা দিয়ে পুলিশের চাকরি পাওয়া যায়।’

সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান আরও বলেন, এ বছর পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি পুলিশ সুপার মঈনুল হক কঠোরভাবে তদারকি করেছেন। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এ কারণে কোন ধরনের অনৈতিকতার আশ্রয় ছাড়াই মেধাবী ও যোগ্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। এভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও তিনি মনে করেন।