দ্বিতীয় দিনেও

রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ

মেয়র সাঈদ খোকনের আলোচনার জন্য চায়ের আমন্ত্রণ : প্রত্যাখ্যান রিকশা মালিকদের

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়কে রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল থেকে রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করেন রিকশাচালকরা। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা ও মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার কয়েক জায়গায় জড়ো হয়ে কয়েক হাজার রিকশাচালক বিক্ষোভ করে। এতে করে প্রগতি সরণি হয়ে মালিবাগ থেকে রামপুরা হয়ে কুড়িলের দিকে যান চলাচল বন্ধ থাকে। গত সোমবারও মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা, বালুরমাঠ ও কমলাপুর টিটিপাড়ায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন রিকশা চালকরা।

সকালে প্রগতি সরণিতে রিকশা মালিকরাও অবরোধে যোগ দেয়। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বড় একটি অংশ বন্ধ থাকায় সকালে রাস্তায় বেরিয়ে অফিসগামী যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে। এ সময় আশপাশের সড়কগুলোতেও সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। উত্তরা থেকে মুগদা যেতে চেয়েছিলেন হামিদুর রহমান একজন যাত্রী। কিন্তু কুড়িল থেকেই সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় তিনি পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যান। হামিদুর রহমান বলেন, জরুরি কাজ থাকায় আমাকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হয়। বাধ্য হয়ে হাজার যাত্রীকে পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে।

জুবায়ের আহমেদ নামে আরেক পথচারী বলেন, সাধারণ যাত্রীদেরই সব ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। একবার ছাত্র আন্দোলন, একবার রিকশাচালকদের অবরোধ। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে চাই।

এদিকে, মূল সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আজ সকাল থেকে ফের রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নামার ঘোষণা দিয়েছে রিকশাচালকরা। সকাল ৮টা থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবে তারা। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘোষণা দেয় রিকশা-মালিক নিবন্ধিত ছয়টি সংগঠনের সমন্বয় পরিষদ। পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল হোসেন বলেন, রিকশাচালক-মালিক ও গ্যারেজ মালিকরা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বৈধ ও লাইসেন্সধারী রিকশাচালক মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সবাই মিলে বসে আলোচনা করে যেকোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। কুড়িল বিশ্বরোডসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে কিছু অচেনা মুখও দেখা গেছে। রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছিল যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় পুরো শহর স্থবির হয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। তবে রিকশা মালিকরা মেয়র খোকনের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।

গত ৩ জুলাই রাজধানীর নির্দিষ্ট মূল সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল করবে না। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অনুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ডিটিসিএর (ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটি) এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার থেকে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন রিকশাচালকরা।

বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯ , ২৬ আষাঢ় ১৪২৫, ৬ জ্বিলকদ ১৪৪০

দ্বিতীয় দিনেও

রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ

মেয়র সাঈদ খোকনের আলোচনার জন্য চায়ের আমন্ত্রণ : প্রত্যাখ্যান রিকশা মালিকদের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

গতকাল রাজধানীতে রাস্তায় শুয়ে রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ -সংবাদ

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়কে রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল থেকে রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করেন রিকশাচালকরা। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা ও মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার কয়েক জায়গায় জড়ো হয়ে কয়েক হাজার রিকশাচালক বিক্ষোভ করে। এতে করে প্রগতি সরণি হয়ে মালিবাগ থেকে রামপুরা হয়ে কুড়িলের দিকে যান চলাচল বন্ধ থাকে। গত সোমবারও মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা, বালুরমাঠ ও কমলাপুর টিটিপাড়ায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন রিকশা চালকরা।

সকালে প্রগতি সরণিতে রিকশা মালিকরাও অবরোধে যোগ দেয়। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বড় একটি অংশ বন্ধ থাকায় সকালে রাস্তায় বেরিয়ে অফিসগামী যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে। এ সময় আশপাশের সড়কগুলোতেও সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। উত্তরা থেকে মুগদা যেতে চেয়েছিলেন হামিদুর রহমান একজন যাত্রী। কিন্তু কুড়িল থেকেই সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় তিনি পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যান। হামিদুর রহমান বলেন, জরুরি কাজ থাকায় আমাকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হয়। বাধ্য হয়ে হাজার যাত্রীকে পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে।

জুবায়ের আহমেদ নামে আরেক পথচারী বলেন, সাধারণ যাত্রীদেরই সব ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। একবার ছাত্র আন্দোলন, একবার রিকশাচালকদের অবরোধ। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে চাই।

এদিকে, মূল সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আজ সকাল থেকে ফের রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নামার ঘোষণা দিয়েছে রিকশাচালকরা। সকাল ৮টা থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবে তারা। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘোষণা দেয় রিকশা-মালিক নিবন্ধিত ছয়টি সংগঠনের সমন্বয় পরিষদ। পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল হোসেন বলেন, রিকশাচালক-মালিক ও গ্যারেজ মালিকরা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বৈধ ও লাইসেন্সধারী রিকশাচালক মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সবাই মিলে বসে আলোচনা করে যেকোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। কুড়িল বিশ্বরোডসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে কিছু অচেনা মুখও দেখা গেছে। রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছিল যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় পুরো শহর স্থবির হয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। তবে রিকশা মালিকরা মেয়র খোকনের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।

গত ৩ জুলাই রাজধানীর নির্দিষ্ট মূল সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল করবে না। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অনুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ডিটিসিএর (ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটি) এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার থেকে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন রিকশাচালকরা।