বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বব্যাংকের সিইও

স্বাধীনতার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বিশ্বব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত পার করেছে। তবে উন্নয়নই যে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জনের সবচেয়ে সেরা উপায় সেটি করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বান কি মুন এবং ক্রিস্টালিনা জর্জিভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

জর্জিভা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন আমি হাইস্কুলে পড়তাম। তখন থেকেই আমি এ দেশে আসার স্বপ্ন দেখতাম। বাংলাদেশের সফলতার কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক সিইও বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ যেভাবে সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে আমি মুগ্ধ। মানুষের মাথাপিছু আয় ১০০ ডলার থেকে বেড়ে ১৫০০ ডলার হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনার পথে ভালোভাবেই রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। দেশটি বিশেষত নারীর ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে পেরেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সামনের দিকে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন জর্জিভা। মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, নিজেদের অনেক সমস্যা থাকার পরও পালিয়ে আসা (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত রেখেছে, তাতে আমি অভিভূত। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাই এখানকার মানুষকে কিভাবে সুরক্ষা দেয়া যায় সে উপায় বের করতেই ঢাকাতেই এই আয়োজন বলে জানান বিশ্বব্যাংক সিইও। তিনি বলেন, আমাদের নষ্ট করার মতো সময় এখন নেই। আমরা যদি আমাদের জানমাল রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সূচকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ছিল প্রথম স্থানে। কিন্তু এটি এমন একটি স্থান যেখানে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কিভাবে মোকাবিলা করতে হয় তার অবিশ্বাস্য উদ্ভাবনী দক্ষতা আমরা এখানে দেখেছি।

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৫, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪০

বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বব্যাংকের সিইও

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

স্বাধীনতার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বিশ্বব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত পার করেছে। তবে উন্নয়নই যে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জনের সবচেয়ে সেরা উপায় সেটি করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বান কি মুন এবং ক্রিস্টালিনা জর্জিভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

জর্জিভা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন আমি হাইস্কুলে পড়তাম। তখন থেকেই আমি এ দেশে আসার স্বপ্ন দেখতাম। বাংলাদেশের সফলতার কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক সিইও বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ যেভাবে সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে আমি মুগ্ধ। মানুষের মাথাপিছু আয় ১০০ ডলার থেকে বেড়ে ১৫০০ ডলার হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনার পথে ভালোভাবেই রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। দেশটি বিশেষত নারীর ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে পেরেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সামনের দিকে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন জর্জিভা। মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, নিজেদের অনেক সমস্যা থাকার পরও পালিয়ে আসা (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত রেখেছে, তাতে আমি অভিভূত। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাই এখানকার মানুষকে কিভাবে সুরক্ষা দেয়া যায় সে উপায় বের করতেই ঢাকাতেই এই আয়োজন বলে জানান বিশ্বব্যাংক সিইও। তিনি বলেন, আমাদের নষ্ট করার মতো সময় এখন নেই। আমরা যদি আমাদের জানমাল রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সূচকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ছিল প্রথম স্থানে। কিন্তু এটি এমন একটি স্থান যেখানে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কিভাবে মোকাবিলা করতে হয় তার অবিশ্বাস্য উদ্ভাবনী দক্ষতা আমরা এখানে দেখেছি।