কাশ্মীর ইস্যু

ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আল কায়েদা প্রধানের হুমকি

আবারও ভারতকে হুমকি দিল আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদা। এবার কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর সরকারের ওপর ‘নির্মম আঘাত’ হানতে কাশ্মীর মুজাহিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আল কায়েদাপ্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি। এ সন্ত্রাসী সংগঠনটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাওয়াহিরি ওই হুমকি সংবলিত বার্তা দেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত ‘কাশ্মীরকে ভুলো না’ শিরোনামের ওই ভিডিওবার্তায় আল কায়েদাপ্রধান কাশ্মীর সীমান্তে সন্ত্রাসে উস্কানি নিয়ে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও কথা বলেন। ওই ভিডিওবার্তায় সাদা পোশাক পরা আল কায়েদাপ্রধান জাওয়াহিরিকে ভারতের সেনাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে বলতে শোনা গেছে, ‘আমার দৃষ্টিতে কাশ্মীরের মুজাহিদদের কমপক্ষে এ পর্যায়ে এসে ভারতীয় বাহিনী ও সরকারের ওপর কঠোর আঘাত হানার দিকেই এককভাবে মনোযোগী হওয়া উচিত। ফলে ভারতের অর্থনীতিতে রক্ত ঝরবে। জনবল ও সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতিতে মুখ থুবড়ে পড়বে তারা।’ এ সময় কাশ্মীর দখলে নেয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাতেও শোনা যায় তাকে। আল কায়েদাপ্রধান তার বার্তায় জাকির মুসার নাম উল্লেখ না করলেও আল কায়েদার ভারতীয় শাখা ‘আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ’ প্রতিষ্ঠাতার ছবি ভিডিওতে বেশ কয়েকবারই ভেসে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা চলতি বছরের মে মাসে এ জঙ্গিকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে আল কায়েদা যে গোষ্ঠীগুলোকে প্রস্তুত করেছিল, মুসার ‘আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ’ ছিল তার শুরুর দিকের একটি।

‘ফাউন্ডেশন অব ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিস’ নামে একটি জার্নালে থমাস জোসকেলিন লিখেছেন, কাশ্মীরে ভারতের সেনার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণার উদ্দেশ্যে গোপনে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে আল কায়েদা।

ওই ভিডিওতে পাকিস্তানের সেনা ও সরকারকেও সমালোচনা করতে শোনা যায় আল কায়েদাপ্রধানকে। পাকিস্তান সরকার ও তাদের সেনাকে ‘আমেরিকার মোসাহেব’ বলে কটাক্ষ করেন জাওয়াহিরি। নিজের ডানদিকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল ও বাঁদিকে একটি কোরআন শরিফ নিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের রাজনীতিকে তালেবান ও অন্য জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করতেও শোনা যায় তাকে। তার দাবি, পাকিস্তানের সব সেনা ও সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মুজাহিদিনকে ব্যবহার করছে এবং পরে সেই মুজাহিদিনদেরই দমন বা অত্যাচার করেছে। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখার পেছনে আমেরিকার ‘পাকা মাথা’ কাজ করছে বলে দাবি আল তার।

কাশ্মীরের লড়াই বিচ্ছিন্ন নয়, এটি বিশ্বজুড়ে চলা লড়াইয়েরই অংশ। এ বিষয়টি ঠিকমতো প্রচার করতে আল কায়েদাপ্রধান ইসলামি পন্ডিতদেরও অনুরোধ জানান। ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানদের ভূমি থেকে দখলদার অবিশ্বাসীদের তাড়িয়ে দেয়ার মতো শক্তি অর্জিত না হয়, ততক্ষণ কাশ্মীর, ফিলিপাইন, চেচনিয়া, মধ্য এশিয়া, ইরাক, সিরিয়া, আরব উপত্যকা, সোমালিয়া, ইসলামিক মাগরেব ও তুর্কমেনিস্তানের জিহাদকে সমর্থন করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। এটি আপনারা (পন্ডিতরা) স্পষ্ট করে বলবেন’ বলে পন্ডিতদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় অনুসারীদের ‘মসজিদ, বাজার কিংবা মুসলিমদের সমবেত হওয়ার স্থান’-এ হামলা না চালানোর জন্যও নির্দেশনা দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৫, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪০

কাশ্মীর ইস্যু

ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আল কায়েদা প্রধানের হুমকি

সংবাদ ডেস্ক

image

আয়মান আল জাওয়াহিরি

আবারও ভারতকে হুমকি দিল আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদা। এবার কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর সরকারের ওপর ‘নির্মম আঘাত’ হানতে কাশ্মীর মুজাহিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আল কায়েদাপ্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি। এ সন্ত্রাসী সংগঠনটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাওয়াহিরি ওই হুমকি সংবলিত বার্তা দেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত ‘কাশ্মীরকে ভুলো না’ শিরোনামের ওই ভিডিওবার্তায় আল কায়েদাপ্রধান কাশ্মীর সীমান্তে সন্ত্রাসে উস্কানি নিয়ে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও কথা বলেন। ওই ভিডিওবার্তায় সাদা পোশাক পরা আল কায়েদাপ্রধান জাওয়াহিরিকে ভারতের সেনাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে বলতে শোনা গেছে, ‘আমার দৃষ্টিতে কাশ্মীরের মুজাহিদদের কমপক্ষে এ পর্যায়ে এসে ভারতীয় বাহিনী ও সরকারের ওপর কঠোর আঘাত হানার দিকেই এককভাবে মনোযোগী হওয়া উচিত। ফলে ভারতের অর্থনীতিতে রক্ত ঝরবে। জনবল ও সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতিতে মুখ থুবড়ে পড়বে তারা।’ এ সময় কাশ্মীর দখলে নেয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাতেও শোনা যায় তাকে। আল কায়েদাপ্রধান তার বার্তায় জাকির মুসার নাম উল্লেখ না করলেও আল কায়েদার ভারতীয় শাখা ‘আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ’ প্রতিষ্ঠাতার ছবি ভিডিওতে বেশ কয়েকবারই ভেসে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা চলতি বছরের মে মাসে এ জঙ্গিকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে আল কায়েদা যে গোষ্ঠীগুলোকে প্রস্তুত করেছিল, মুসার ‘আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ’ ছিল তার শুরুর দিকের একটি।

‘ফাউন্ডেশন অব ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিস’ নামে একটি জার্নালে থমাস জোসকেলিন লিখেছেন, কাশ্মীরে ভারতের সেনার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণার উদ্দেশ্যে গোপনে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে আল কায়েদা।

ওই ভিডিওতে পাকিস্তানের সেনা ও সরকারকেও সমালোচনা করতে শোনা যায় আল কায়েদাপ্রধানকে। পাকিস্তান সরকার ও তাদের সেনাকে ‘আমেরিকার মোসাহেব’ বলে কটাক্ষ করেন জাওয়াহিরি। নিজের ডানদিকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল ও বাঁদিকে একটি কোরআন শরিফ নিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের রাজনীতিকে তালেবান ও অন্য জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করতেও শোনা যায় তাকে। তার দাবি, পাকিস্তানের সব সেনা ও সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মুজাহিদিনকে ব্যবহার করছে এবং পরে সেই মুজাহিদিনদেরই দমন বা অত্যাচার করেছে। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখার পেছনে আমেরিকার ‘পাকা মাথা’ কাজ করছে বলে দাবি আল তার।

কাশ্মীরের লড়াই বিচ্ছিন্ন নয়, এটি বিশ্বজুড়ে চলা লড়াইয়েরই অংশ। এ বিষয়টি ঠিকমতো প্রচার করতে আল কায়েদাপ্রধান ইসলামি পন্ডিতদেরও অনুরোধ জানান। ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানদের ভূমি থেকে দখলদার অবিশ্বাসীদের তাড়িয়ে দেয়ার মতো শক্তি অর্জিত না হয়, ততক্ষণ কাশ্মীর, ফিলিপাইন, চেচনিয়া, মধ্য এশিয়া, ইরাক, সিরিয়া, আরব উপত্যকা, সোমালিয়া, ইসলামিক মাগরেব ও তুর্কমেনিস্তানের জিহাদকে সমর্থন করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। এটি আপনারা (পন্ডিতরা) স্পষ্ট করে বলবেন’ বলে পন্ডিতদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় অনুসারীদের ‘মসজিদ, বাজার কিংবা মুসলিমদের সমবেত হওয়ার স্থান’-এ হামলা না চালানোর জন্যও নির্দেশনা দেন তিনি।