জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিস্তৃতি এবং এর প্রভাব প্রশমনে নিজেদের সক্রিয় উদ্যোগ সম্পর্কে আরও সচেতন হতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সচেতন থাকতে এবং নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করছি।’

তিনি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দু’দিনব্যাপী জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) ঢাকা বৈঠকে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন ও অর্থায়নের যুগে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে যা সবাই সহজে কাজে লাগাতে পারি।’ ‘তথাপি আমি বলতে চাই, অভিযোজনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেজন্য সুষ্ঠু প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অভিযোজন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।’ যোগ করেন তিনি। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা সি. হেইন, গ্লোবাল কমিশন অন এডাপটেশনরে চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন এবং সম্মেলনের কো-চেয়ারম্যান এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা সম্মেলনে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সামনের সারিতে থেকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ ও কৌশল সম্পর্কে বান-কি-মুন বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এখানে বাংলাদেশের কাছে শিখতে এসেছি। অভিযোজনের বিষয়ে শেখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো শিক্ষক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাবউদ্দিনও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল কমিশন অব এডাপটেশনের সহযোগিতায় আমরা জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক অভিযোজন কৌশলের পাশাপাশি সাশ্রয়ী পন্থা ও ঝুঁকি নিরসন ব্যবস্থার সুবিধা পেতে চাই।

তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানে অনুষ্ঠিতব্য ক্লাইমেট চেঞ্জ সামিটের প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর জন্য। ওই সম্মেলনে এলডিসিভুক্ত দেশসমূহ ও বাংলাদেশর পক্ষ থেকে আমাকে বক্তব্য দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

বাংলাদেশে একটি ‘রিজিওনাল অ্যাডাপটেশন সেন্টার’ স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোজন প্রক্রিয়ায় অগ্রগামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি রাখে। আমি বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের বিষয় বিবেচনা করতে আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়ায় বান-কি মুনকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন ঢাকা সম্মেলনের সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব অনুমিত সময়ের আগেই আমাদের প্রত্যেকের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সেজন্য, এর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বকে বিনিয়োগে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হারিয়ে যাবে। তখন সেখানকার মানুষেরা কোথায় যাবে, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’

শেখ হাসিনা তার ভাষণে মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বলেন, তাদেরকে আমরা মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু তাদের কারণে আমাদের ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ওখানে আমাদের যত পাহাড়ি এলাকা বা জঙ্গল ছিল সেগুলো কেটে-ছেঁটে বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে এলাকাটি অনেকটা অনিরাপদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’

‘এজন্য আমরা চাই দ্রুততম সময়ে তারা নিজ দেশে ফেরত যাক। তারা যত তাড়াতাড়ি নিজেদের দেশে ফিরে যাবে, ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ইতোমধ্যে প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে প্রায় এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ওপরে পৌঁছেছে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল মানব ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল।’

তিনি বলেন, ‘জার্মান ওয়াচ’র ক্লাইমেট চেঞ্জ ভার্নাবিলিটি ইনডেক্স-২০১৮ অনুসারে, ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৬ সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ছিল ৬ষ্ঠ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এডিবির জলবায়ু এবং অর্থনীতি বিষয়ক প্রতিবেদনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আমাদের বার্ষিক জিডিপি ২ শতাংশ কমে যাবে। যদি বর্তমান হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আমাদের ১৯টি উপকূলীয় জেলা স্থায়ীভাবে ডুবে যাবে।’

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমুদ্রতল বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ বলছে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৬০ লাখ জলবায়ু অভিবাসী রয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে এটি বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।’

তিনি বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে গত এক দশকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক খাতে যে বিশাল উন্নতি হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে আজ তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

জনগণের জন্য অভিযোজন ব্যবস্থা তৈরি করতে তার সরকারের নিরলসভাবে কাজ করার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত এক দশকে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসমূহ অভিযোজনের মাধ্যমে নিরসনের জন্য বছরে প্রায় একশ’ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করছি।’

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৫, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪০

জিসিএ ঢাকা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিস্তৃতি এবং এর প্রভাব প্রশমনে নিজেদের সক্রিয় উদ্যোগ সম্পর্কে আরও সচেতন হতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সচেতন থাকতে এবং নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করছি।’

তিনি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দু’দিনব্যাপী জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) ঢাকা বৈঠকে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন ও অর্থায়নের যুগে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে যা সবাই সহজে কাজে লাগাতে পারি।’ ‘তথাপি আমি বলতে চাই, অভিযোজনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেজন্য সুষ্ঠু প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অভিযোজন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।’ যোগ করেন তিনি। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা সি. হেইন, গ্লোবাল কমিশন অন এডাপটেশনরে চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন এবং সম্মেলনের কো-চেয়ারম্যান এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা সম্মেলনে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সামনের সারিতে থেকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ ও কৌশল সম্পর্কে বান-কি-মুন বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এখানে বাংলাদেশের কাছে শিখতে এসেছি। অভিযোজনের বিষয়ে শেখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো শিক্ষক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাবউদ্দিনও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল কমিশন অব এডাপটেশনের সহযোগিতায় আমরা জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক অভিযোজন কৌশলের পাশাপাশি সাশ্রয়ী পন্থা ও ঝুঁকি নিরসন ব্যবস্থার সুবিধা পেতে চাই।

তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানে অনুষ্ঠিতব্য ক্লাইমেট চেঞ্জ সামিটের প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর জন্য। ওই সম্মেলনে এলডিসিভুক্ত দেশসমূহ ও বাংলাদেশর পক্ষ থেকে আমাকে বক্তব্য দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

বাংলাদেশে একটি ‘রিজিওনাল অ্যাডাপটেশন সেন্টার’ স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোজন প্রক্রিয়ায় অগ্রগামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি রাখে। আমি বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের বিষয় বিবেচনা করতে আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়ায় বান-কি মুনকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন ঢাকা সম্মেলনের সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব অনুমিত সময়ের আগেই আমাদের প্রত্যেকের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সেজন্য, এর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বকে বিনিয়োগে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হারিয়ে যাবে। তখন সেখানকার মানুষেরা কোথায় যাবে, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’

শেখ হাসিনা তার ভাষণে মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বলেন, তাদেরকে আমরা মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু তাদের কারণে আমাদের ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ওখানে আমাদের যত পাহাড়ি এলাকা বা জঙ্গল ছিল সেগুলো কেটে-ছেঁটে বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে এলাকাটি অনেকটা অনিরাপদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’

‘এজন্য আমরা চাই দ্রুততম সময়ে তারা নিজ দেশে ফেরত যাক। তারা যত তাড়াতাড়ি নিজেদের দেশে ফিরে যাবে, ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ইতোমধ্যে প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে প্রায় এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ওপরে পৌঁছেছে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল মানব ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল।’

তিনি বলেন, ‘জার্মান ওয়াচ’র ক্লাইমেট চেঞ্জ ভার্নাবিলিটি ইনডেক্স-২০১৮ অনুসারে, ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৬ সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ছিল ৬ষ্ঠ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এডিবির জলবায়ু এবং অর্থনীতি বিষয়ক প্রতিবেদনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আমাদের বার্ষিক জিডিপি ২ শতাংশ কমে যাবে। যদি বর্তমান হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আমাদের ১৯টি উপকূলীয় জেলা স্থায়ীভাবে ডুবে যাবে।’

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমুদ্রতল বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ বলছে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৬০ লাখ জলবায়ু অভিবাসী রয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে এটি বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।’

তিনি বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে গত এক দশকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক খাতে যে বিশাল উন্নতি হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে আজ তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

জনগণের জন্য অভিযোজন ব্যবস্থা তৈরি করতে তার সরকারের নিরলসভাবে কাজ করার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত এক দশকে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসমূহ অভিযোজনের মাধ্যমে নিরসনের জন্য বছরে প্রায় একশ’ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করছি।’