প্রতিবন্ধী ধর্ষণ ঘটনায় মামলা, ধর্ষক ও এক সালিশকারী গ্রেফতার

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুকে (১১) ধর্ষণ ঘটনায় ১৪ হাজার টাকায় আপসের পর গতকাল থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই শিশুর মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সংবাদের সূত্র ধরে গতকাল সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলামসহ (৩৫) সালিশ আয়োজকদের অন্যতম মো. সুজনকে আটক করে।

দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘সালিশে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের মূল্য ১৪ হাজার টাকা : ধর্ষিতার বাবাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে স্ট্যাম্পে সই’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন। শুরু হয় ধর্ষকসহ সালিশ আয়োজনকারীদের আটকের অভিযান।

ওই শিশুর পিতা বলেন, আমার প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ ঘটনার পর সালিশের মাধ্যমে আপস করে দেয়ার পর থেকে অশান্তির আগুনে জ্বলছিলাম। পুলিশ ধর্ষক মেহেদুল ও আবাসনের মাতবর সুজনকে আটক করেছে। তাদের শাস্তি হলে অনেক শান্তি পাব।

থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর গতকাল উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পে অভিযান চালানো হয়। এতে শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলাম ও ধর্ষণ ঘটনা সালিশের অন্যতম আয়োজক ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা মো. সুজনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। তবে দু’জন আটক হলেও তদন্তের স্বার্থে মামলার অন্য আসামিদের সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।

ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া মোহাম্মদ আশিষ বিন হাছান বলেন, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ ঘটনায় অভিযুক্ত মেহেদুলকে আটকের পাশাপাশি ধর্ষণ ঘটনাটি আপসের সঙ্গে জড়িত সুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ ঘটনাটি আপসরফার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ কারণে মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৫ থেকে ৬ জন হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, সংবাদটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার অভিযুক্তসহ ঘটনা ধামাচাপার লক্ষ্যে আপসের জন্য সালিশ আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ৩ জুলাই দুপুর ১টায় উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা রিকশাভ্যানচালকের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ১১ বছরের শিশুকন্যাকে একই আবাসনের বাসিন্দা ও দুই স্ত্রীর স্বামী মেহেদুল ইসলাম (৩৫) ধর্ষণ করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই শিশুর পিতা-মাতাকে গ্রামের ঘটনা গ্রামেই মিটিয়ে ফেলার কথাসহ এক প্রকার চাপ দিয়ে ওইদিন বেলা ২টায় সালিশ বসানো হয়। সালিশে উপস্থিত থেকে ১৪ হাজার টাকায় ধর্ষণ ঘটনাটি আপসরফা করে ওই শিশুর পিতাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৭ হাজার টাকা দুই সাংবাদিক নামধারীসহ আয়োজকরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। সালিশ বৈঠকের আয়োজকরা ছিল, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবলু, গ্রাম পুলিশ আব্বাস উদ্দিন, শিবনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামসহ আবাসনের বাসিন্দা সুজনসহ কয়েকজন। সালিশে দুই সাংবাদিক নামধারীও উপস্থিত ছিল।

আরও খবর
ইসলামী পর্যটনকে বিকশিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
আর্থিক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সহযোগিতার আশ্বাস
শপথ নিলেন বগুড়ার এমপি সিরাজ
‘বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধে প্রাইভেটকার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা’
শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
৪৪ দেশে ৮৮৪৮ জন বাংলাদেশি কারাগারে
বুড়িগঙ্গা তীরে স্থাপনা উচ্ছেদকালে হামলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ আহত ৫
তথ্য গোপন করে মামলা বাতিলের আবেদনকারীকে গ্রেফতারের নির্দেশ
শিক্ষকদের দলাদলিতে ছাত্রলীগকে না জড়ানোর নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর
আজিজ কো-অপারেটিভের চেয়ারম্যান গ্রেফতার
৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার
নির্ধারিত তারিখের একদিন আগেই সিন্ডিকেট সভা করলেন উপাচার্য

শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৫, ৮ জিলকদ ১৪৪০

ফলোআপ : ফুলবাড়ী

প্রতিবন্ধী ধর্ষণ ঘটনায় মামলা, ধর্ষক ও এক সালিশকারী গ্রেফতার

প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুকে (১১) ধর্ষণ ঘটনায় ১৪ হাজার টাকায় আপসের পর গতকাল থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই শিশুর মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সংবাদের সূত্র ধরে গতকাল সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলামসহ (৩৫) সালিশ আয়োজকদের অন্যতম মো. সুজনকে আটক করে।

দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘সালিশে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের মূল্য ১৪ হাজার টাকা : ধর্ষিতার বাবাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে স্ট্যাম্পে সই’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন। শুরু হয় ধর্ষকসহ সালিশ আয়োজনকারীদের আটকের অভিযান।

ওই শিশুর পিতা বলেন, আমার প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ ঘটনার পর সালিশের মাধ্যমে আপস করে দেয়ার পর থেকে অশান্তির আগুনে জ্বলছিলাম। পুলিশ ধর্ষক মেহেদুল ও আবাসনের মাতবর সুজনকে আটক করেছে। তাদের শাস্তি হলে অনেক শান্তি পাব।

থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর গতকাল উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পে অভিযান চালানো হয়। এতে শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলাম ও ধর্ষণ ঘটনা সালিশের অন্যতম আয়োজক ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা মো. সুজনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। তবে দু’জন আটক হলেও তদন্তের স্বার্থে মামলার অন্য আসামিদের সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।

ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া মোহাম্মদ আশিষ বিন হাছান বলেন, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ ঘটনায় অভিযুক্ত মেহেদুলকে আটকের পাশাপাশি ধর্ষণ ঘটনাটি আপসের সঙ্গে জড়িত সুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ ঘটনাটি আপসরফার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ কারণে মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৫ থেকে ৬ জন হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, সংবাদটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার অভিযুক্তসহ ঘটনা ধামাচাপার লক্ষ্যে আপসের জন্য সালিশ আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ৩ জুলাই দুপুর ১টায় উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা রিকশাভ্যানচালকের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ১১ বছরের শিশুকন্যাকে একই আবাসনের বাসিন্দা ও দুই স্ত্রীর স্বামী মেহেদুল ইসলাম (৩৫) ধর্ষণ করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই শিশুর পিতা-মাতাকে গ্রামের ঘটনা গ্রামেই মিটিয়ে ফেলার কথাসহ এক প্রকার চাপ দিয়ে ওইদিন বেলা ২টায় সালিশ বসানো হয়। সালিশে উপস্থিত থেকে ১৪ হাজার টাকায় ধর্ষণ ঘটনাটি আপসরফা করে ওই শিশুর পিতাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৭ হাজার টাকা দুই সাংবাদিক নামধারীসহ আয়োজকরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। সালিশ বৈঠকের আয়োজকরা ছিল, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবলু, গ্রাম পুলিশ আব্বাস উদ্দিন, শিবনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামসহ আবাসনের বাসিন্দা সুজনসহ কয়েকজন। সালিশে দুই সাংবাদিক নামধারীও উপস্থিত ছিল।