জেএমবির ৩ সদস্য গ্রেফতার

চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৩ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র‌্যাব ১১-এর সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক (২৬), মো. রনি আহম্মেদ ওরফে রনি (৩১) ও মো. রিপন মন্ডল ওরফে রিপন (৩০)। এ সময় তাদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, উগ্রবাদী লিফলেট ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর পাঠানো এক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী (জঙ্গি) আইনে র‌্যাব-১১’র দায়েরকৃত দুটি পৃথক মামলার পলাতক আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবের কাছে স্বীকার করে তারা দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সংগঠিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং নাশকতামূলক কর্মকান্ড করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গ্রেফতারকৃত মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিকের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নরোত্তম এলাকায়। সর্ব প্রথম ২০১৪ সালে মোল্লা ইব্রাহীমের বক্তব্য শুনে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয় এবং মোল্লা ইব্রাহীমের মাধ্যমে বাংলাদেশি জিহাদি তৎপরতা ও আল কায়দা সম্পর্কে ধারণা নেয়। পরবর্তীতে সিলেটে মোল্লা ইব্রাহীমের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অনুসারীর মাধ্যমে মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন আনসার-আল-ইসলাম এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সামরিক শাখার আইটি বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়। একই বছর সে ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের একটি ১২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহন করে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ধারণা নেয়। সেখানে তার সাথে মেজর জিয়ার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৬ সালে সিলেট থেকে ঢাকায় এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের মিডিয়া উইং এর দায়িত্ব পালন করে। মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ২০১৭ সালে মে মাসে শুরুতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে জামিনে এসে পুনরায় জঙ্গি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। ২টি নিষিদ্ধ জঙ্গি ও উগ্রবাদী সংগঠন যথাক্রমে আনসার-আল-ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর কার্যক্রম ও আদর্শগত অভিন্নতা থাকায়, নিজের পরিচয় উৎঘাটিত হাওয়ায় এবং সাংগঠনিক বর্মকান্ডের সুবিধার্থে জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-তে যোগদানপূর্বক পূর্বের ন্যায় সামরিক শাখার আইটি বিভাগের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিযুক্ত হয়ে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত রাখে।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত জঙ্গি রনি আহম্মেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের রুদ্রপুর এলাকায় এবং মো. রিপন মন্ডলের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশার কৃষ্টপুর এলাকায়। তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ইপিজেডের দুটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সক্রিয় সদস্য মেহেদী হাসান ও আকবর হোসেন ওরফে সুমনের মাধ্যমে তারা উভয়ই উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জেএমবিতে যোগদান করে এবং জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। রনি আহম্মেদ চাকরির পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর সুবিধার্থে ছদ্মবেশে রাতে রিকশা চালাতো। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯ , ২৯ আষাঢ় ১৪২৫, ৯ জিলকদ ১৪৪০

চট্টগ্রামে

জেএমবির ৩ সদস্য গ্রেফতার

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৩ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র‌্যাব ১১-এর সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক (২৬), মো. রনি আহম্মেদ ওরফে রনি (৩১) ও মো. রিপন মন্ডল ওরফে রিপন (৩০)। এ সময় তাদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, উগ্রবাদী লিফলেট ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর পাঠানো এক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী (জঙ্গি) আইনে র‌্যাব-১১’র দায়েরকৃত দুটি পৃথক মামলার পলাতক আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবের কাছে স্বীকার করে তারা দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সংগঠিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং নাশকতামূলক কর্মকান্ড করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গ্রেফতারকৃত মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিকের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নরোত্তম এলাকায়। সর্ব প্রথম ২০১৪ সালে মোল্লা ইব্রাহীমের বক্তব্য শুনে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয় এবং মোল্লা ইব্রাহীমের মাধ্যমে বাংলাদেশি জিহাদি তৎপরতা ও আল কায়দা সম্পর্কে ধারণা নেয়। পরবর্তীতে সিলেটে মোল্লা ইব্রাহীমের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অনুসারীর মাধ্যমে মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন আনসার-আল-ইসলাম এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সামরিক শাখার আইটি বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়। একই বছর সে ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের একটি ১২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহন করে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ধারণা নেয়। সেখানে তার সাথে মেজর জিয়ার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৬ সালে সিলেট থেকে ঢাকায় এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের মিডিয়া উইং এর দায়িত্ব পালন করে। মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ২০১৭ সালে মে মাসে শুরুতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে জামিনে এসে পুনরায় জঙ্গি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। ২টি নিষিদ্ধ জঙ্গি ও উগ্রবাদী সংগঠন যথাক্রমে আনসার-আল-ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর কার্যক্রম ও আদর্শগত অভিন্নতা থাকায়, নিজের পরিচয় উৎঘাটিত হাওয়ায় এবং সাংগঠনিক বর্মকান্ডের সুবিধার্থে জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-তে যোগদানপূর্বক পূর্বের ন্যায় সামরিক শাখার আইটি বিভাগের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিযুক্ত হয়ে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত রাখে।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত জঙ্গি রনি আহম্মেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের রুদ্রপুর এলাকায় এবং মো. রিপন মন্ডলের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশার কৃষ্টপুর এলাকায়। তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ইপিজেডের দুটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সক্রিয় সদস্য মেহেদী হাসান ও আকবর হোসেন ওরফে সুমনের মাধ্যমে তারা উভয়ই উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জেএমবিতে যোগদান করে এবং জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। রনি আহম্মেদ চাকরির পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর সুবিধার্থে ছদ্মবেশে রাতে রিকশা চালাতো। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।